নিউজ ডেস্ক:
পবিত্র রমজান মাস নিয়ে পৃথিবীর সব দেশেই আলাদা সংস্কৃতি ও ভিন্ন আমেজ থাকে। ঠিক তেমনি তিউনিসিয়ানদের রমজান উদযাপনেও থাকে বেশ আনন্দ-উদ্দীপনা। ঘরে ঘরে চোখে পড়ে রমজানের প্রস্তুতি।

রমজান মাসে তিউনিসিয়ার বাজার-ঘাট ও বাড়ির আঙিনা সাজানো হয়। ছবি: সংগৃহীত
তিউনিসিয়ানরা রমজান আসার আগেই ঘর-বাড়িগুলোকে
অনেকটা বিয়ে বাড়ির মতো সাজিয়ে-গুছিয়ে পরিপাটি করে নেয়। বলা যায় পুরো দেশই
নতুনভাবে সাজানো হয়; রমজানকে স্বাগত জানানোর জন্যে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান
ঘটিয়ে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বারতা নিয়ে যখন মহিমান্বিত রমজান হাজির
হয়, তখন তারা ব্যস্ত হয়ে পড়ে রমজান বরণে।
তিউসিয়ান যুবকদের মধ্যে রমজানের প্রতি আগ্রহ
থাকে অন্যদের তুলনায় বেশি। হাজার হাজার যুবক সারা বছর অপেক্ষা করেন কখন
রমজান মাস আসবে। কারণ রমজান তাদের বিয়ের মাস। তিউনিসিয়ার রমজানের বিশেষ দিক
হলো, তিউনিসানরা এই মাসের বরকত হাসিল করার জন্য বিবাহ-শাদি এই মাসেই
সম্পন্ন করে থাকে। তারা এই মাসে বিয়ের জন্য মেয়ে দেখা, বিয়ের প্রস্তাব
দেয়া, বিয়ে সম্পন্ন করা, অলিমা (বৌভাত) করা ইত্যাদি বিষয়গুলো করা বেশ
গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন।

ইফতারিতেও থাকে ভিন্ন মাত্রা। ছবি: সংগৃহীত
রমজানের ২৭ তারিখে তিউনিসিয়ান যুবকরা তাদের
বিয়ের জন্য প্রস্তাবিত মেয়েদের কাছে কিছু উপঢৌকন পাঠান। এটি তাদের প্রাচীন
ঐতিহ্য। ২৭ তারিখে তারা তাদের সন্তানদের মুসলনমানিও (খৎনা) করান।
আত্মীয়-স্বজনকে দাওয়াত দিয়ে খাবারের আয়োজন করেন।

তারাবির নামাজে তিউনিসিয়ানদের উপস্থিতি হয় বেশ। ছবি: সংগৃহীত
হিফজুল কোরআনের প্রতি তিউনিসিয়ানদের রয়েছে
আলাদা আকর্ষণ ও গুরুত্ব। বাচ্চাদের তারা নানাভাবে উৎসাহিত করে। রমজানে
রাষ্ট্রীয়ভাবে তিউনিয়াসিয়ার মসজিদগুলোতে চারশতের অধিক হিফজুল কোরআন
প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় পরিসরে হয় আন্তজার্তিক কোরআন
প্রতিযোগিতা। যেখানে ১৫টি মুসলিম রাষ্ট্র অংশ নিয়ে থাকে।

ক্রেতা আসবে ইফতার কিনতে। তাই প্রস্তুতি চলছে... ছবি: সংগৃহীত
তিউনিসিয়ানারা সাধারণত খেজুর ও দুধ দিয়ে
ইফতার করেন। তবে ইফতারের আলাদা বৈশিষ্ট্য হলো, সামান্য দুধ ও খেজুর খেয়েই
তারা মাগরিবের নামাজে দাঁড়িয়ে যান। নামাজের পর আবার দস্তরখানে ফিরে আসেন
এবং দীর্ঘ সময় বিভিন্ন মুখরোচক খাবার গ্রহণ করেন। হরেক রকমের খাবার ও
পানীয়ের মাধ্যমে দস্তরখান ভর্তি থাকে।

তিউনিসিয়ান ইফতারের ঘরোয়া আয়োজন। ছবি: সংগৃহীত
তিউনিসিয়ার অধিকাংশ মসজিদেই তারাবির নামাজের
আগে ধর্মীয় নানা অনুষ্ঠান হয়। এসব অনুষ্ঠানে তারা গুরুত্বের সঙ্গে যোগদান
করেন। আলোচকের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং সে অনুযায়ী আমলের চেষ্টা করেন।
খবর বিভাগঃ
ইসলাম
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়