Previous
Next

সর্বশেষ


Wednesday, July 17

কানাইঘাটে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সুফলভোগীদের মাঝে হাঁস বিতরণ

কানাইঘাটে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সুফলভোগীদের মাঝে হাঁস বিতরণ


নিজস্ব প্রতিবেদক:

কানাইঘাট উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের উদ্যোগে কানাইঘাটে সমতল ভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সুফলভোগীদের মাঝে হাঁস বিতরণ করা হয়েছে।


মঙ্গলবার বিকেল ২টায় প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সুফলভোগী পরিবারগুলোর মধ্যে ২০টি করে হাঁস বিতরণ করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মস্তাক আহমদ পলাশ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ফারজানা নাসরীন।


উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত) ডা. আব্দুল্লাহ আল মাসুদের সঞ্চালনায় হাঁস বিতরণকালে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকশানা জাহান, বড়চতুল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালিক চৌধুরী, কানাইঘাট প্রেসক্লাবের সভাপতি নিজাম উদ্দিন, সাংবাদিক মুমিন রশিদ সহ উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্মকর্তাবৃন্দ।


হাঁস বিতরণকালে উপজেলা চেয়ারম্যান মস্তাক আহমদ পলাশ ও নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরীন বলেন, বর্তমান সরকার দেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকজনদের জীবনমানের ব্যাপক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকজন যাতে করে সমাজের মূল স্রোতধারায় বসবাস করতে পারেন এজন্য তাদেরকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে কানাইঘাটের সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসরত নৃ-গোষ্ঠীর পরিবারগুলো গবাদি পশু ও হাঁস-মোরগ লালন-পালন করে স্বাবলম্বি হতে পারেন এজন্য হাঁস বিতরণ করা হয়েছে। এর সুফল কাজে লাগিয়ে হাঁসের খামার বাড়ানোর জন্য উপকারভোগী পরিবারগুলোর প্রতি তারা আহবান জানান।

কানাইঘাটে আইন-শৃঙ্খলা সভায় চোরাচালান প্রতিরোধ নিয়ে আলোচনা

কানাইঘাটে আইন-শৃঙ্খলা সভায় চোরাচালান প্রতিরোধ নিয়ে আলোচনা


নিজস্ব প্রতিবেদক:

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার মাসিক আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল ১১টায় উপজেলা মাসিক আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।


কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরীনের সভাপতিত্বে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মস্তাক আহমদ পলাশ।


সভায় আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নের পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান প্রতিরোধ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করা হয়। বিশেষ করে বিজিবি কর্তৃক সম্প্রতি উপজেলার সড়কের বাজারে ভারতীয় চিনি উদ্ধার নিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনায় সভায় কমিটির অনেক সদস্য কথা বলেন। চোরাচালান প্রতিরোধ সহ ভারতীয় চিনি উদ্ধার কিংবা আটক নিয়ে হাটবাজার গুলোতে বিজিবি বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে চোরাকারবারী বা কারো সাথে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এজন্য বিজিবিকে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা নেয়া সহ টাস্কফোর্সের মাধ্যমে অভিযানের উপর গুরুত্বারূপ করা হয়। এছাড়া সভায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মস্তাক আহমদ পলাশ, নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরীন, থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার ভারতীয় চিনি যাতে করে সীমান্ত এলাকা দিয়ে আসতে না পারে এজন্য সীমান্তবর্তী এলাকায় বিজিবি’র তৎপরতা আরো বাড়ানো সহ চোরাচালান প্রতিরোধে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক মহল সহ সবাইকে একসাথে কাজ করার আহবান জানানো হয়।


সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান মস্তাক আহমদ পলাশ অবৈধভাবে দখলকৃত খাল-বিল, নদী-নালা, গোপাট উদ্ধার অভিযান জোরদার সহ হাট-বাজারগুলো অবৈধ দখল মুক্ত করার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হবে উল্লেখ করে আইন-শৃঙ্খলার উন্নয়ন ও অপরাধমূলক কর্মকান্ড প্রতিরোধে থানা পুলিশ সহ জনপ্রতিনিধিদের নিষ্ঠার সাথে কাজ করার আহবান জানান।


সভায় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ ওয়াজিদ ওয়াসিফ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ আলতাফ হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকশানা জাহান, সুরইঘাট বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার গোলাম সারোয়ার, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডা. সুবল চন্দ্র বর্মণ, সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ জিলানী, উপজেলা প্রকৌশলী আবু হানিফা, দিঘীরপাড় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন চৌধুরী, সাতবাঁক ইউপি চেয়ারম্যান আবু তায়্যিব শামীম, বড়চতুল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালিক চৌধুরী, সদর ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক আফসর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, কানাইঘাট প্রেসক্লাবের সভাপতি নিজাম উদ্দিন প্রমুখ।


এছাড়াও একই দিনে উপজেলা চোরাচালান প্রতিরোধ, নারী-শিশু নির্যাতন ও বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ কমিটি সহ আরো কয়েকটি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।

দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ: কানাইঘাটের ২ কিশোর নিহত

দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ: কানাইঘাটের ২ কিশোর নিহত


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক :

সিলেটের জকিগঞ্জে দুটি মোটরসাইকেলের ধাক্কায় দুই আরোহী কিশোর নিহত হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছে আরো দুজন।

দুর্ঘটনাটি মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে জকিগঞ্জ-সিলেট সড়কের মানিকপুর ইউপির কালিগঞ্জ বাল্লাহ এলাকায় ঘটে।

নিহত দুই কিশোর হলো, সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দিঘীরপার পূর্ব ইউনিয়নের দর্পনগর পূ্র্ব খরচটি গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন (১৬) ও একই ইউনিয়নের মানিকপুর গ্রামের এবাদুর রাহমানের ছেলে মারজান আহমদ (১৭)।

দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন কানাইঘাট উপজেলার দর্পনগর পশ্চিম গ্রামের আশিক আহমেদের ছেলে সৌরভ আহমদ (১৯) ও জকিগঞ্জের সুলতানপুর ইউপির সুলতানপুর গ্রামের ময়নুল ইসলামের ছেলে শুভ আহমদ (২২)। তারা দুজন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রের বরাতে পুলিশ জানায়, ঘটনার সময় একটি মোটরসাইকেলে তিন কিশোর জকিগঞ্জ থেকে কানাইঘাটের দিকে যাচ্ছিলেন এবং শুভ নামের আরেক মোটরসাইকেল আরোহী বাল্লা গ্রামের রাস্তা থেকে মূল সড়কে ওঠলে দুটি মোটরসাইকেলের ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে পাঠান। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহাঙ্গীর ও মারজানকে মৃত ঘোষণা করেন।

জকিগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুকান্ত চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দুটি মোটরসাইকেলের ধাক্কায় দুই কিশোরসহ চারজন আহত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর জাহাঙ্গীর ও মারজান নামের আরোহী দুই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আহত আরো দুজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি আরও জানান, শুভ নামের আরোহী মোটরসাইকেল নিয়ে গ্রামের রাস্তা থেকে মূল সড়কে ওঠেন। তখন কানাইঘাটগামী মোটরসাইকেলের ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে। এতে দুটি মোটরসাইকেলের আরোহীরা ছিটকে পড়ে আহত হন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।



Tuesday, July 16

অসুস্থ হাফিজ কিবরিয়াকে গাছবাড়ী জমিয়তের আর্থিক সহায়তা প্রদান

অসুস্থ হাফিজ কিবরিয়াকে গাছবাড়ী জমিয়তের আর্থিক সহায়তা প্রদান


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক :

হাফিজ মুহা.কিবরিয়া। ৭নং দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়ন ছাত্র জমিয়তের সদস্য । দীর্ঘদিন ধরে GBS এ আক্রান্ত হয়ে সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় দীর্ঘকালীন চিকিৎসার ভার বহন করা তাঁদের জন্য এক প্রকারের দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। -মানুষ মানুষের জন্য- হিসাবে একজন হাফিজে কুরআন কিবরিয়াকে সাহায্য করার জন্য আমাদের সকলকে এগিয়ে আসা উচিত। 

আজ বাদ মাগরিব গাছবাড়ি জমিয়ত পরিবারের উদ্যোগে অসুস্থ হাফিজ কিবরিয়ার চিকিৎসাখাতে ব্যয় করার জন্য  ৬০,০০০ (ষাট হাজার) টাকা তাকে নগদ অনুদান প্রদান করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সিলেট জেলা জমিয়ত উত্তর শাখা' র সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা নূর আহমদ ক্বাসিমি, ৭নং দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়ন জমিয়তের সেক্রেটারি মাওলানা জাকারিয়া, ৮নং ঝিঙ্গাবাড়ি ইউনিয়ন ছাত্র জমিয়তের সাবেক সেক্রেটারি নুমান সিদ্দিকি, ৭নং দক্ষিণ বানীগ্রাম ইউনিয়ন ছাত্র জমিয়তের সাবেক সেক্রেটারি মাওলানা রুহুল্লাহ মাসউদ, সাবেক সেক্রেটারি বর্তমান উপজেলা ছাত্র জমিয়তের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, সিলেট জেলা যুব জমিয়ত উত্তর শাখার স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক  আব্দুল ওয়াহিদ, দক্ষিণ বানীগ্রাম  ইউনিয়ন ছাত্র জমিয়তের রানিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুলতান আল-মাহমুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কালিমুল্লাহ মাহফুজ, প্রচার সম্পাদক নিজাম উদ্দিন।( বিজ্ঞপ্তি)


Monday, July 15

কানাইঘাটে প্রতিবন্ধীদের মধ্যে ত্রাণ-সামগ্রী বিতরণ

কানাইঘাটে প্রতিবন্ধীদের মধ্যে ত্রাণ-সামগ্রী বিতরণ


নিজস্ব প্রতিবেদক:

সিলেটের কানাইঘাটে প্রতিবন্ধীদের মাঝে হাইজিন প্যাকেট ও প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।


সোমবার দুপুর ১টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে উপজেলা সমাজসেবা অফিসের উদ্যোগে হাইজিন প্যাকেট ও প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ সামগ্রী ও শিশু খাদ্য প্রতিবন্ধী ও অসহায়দের মাঝে বিতরণ করেন নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরিন।


এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকশানা জাহান, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ জিলানী, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম, কানাইঘাট প্রেসক্লাবের সভাপতি নিজাম উদ্দিন, বীরমুক্তিযোদ্ধা সুবেদার আফতাব উদ্দিন সহ বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ।


হাইজিন ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণকালে নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরিন বলেন, সরকার প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। যাতে করে তারা স্বাভাবিক জীবন যাপন সহ সরকারের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার আওতায় আসতে পারেন।


এবারের বন্যার সময় ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় পরিবারগুলোর পাশাপাশি প্রতিবন্ধীদের নানাভাবে সহায়তা করা হয়েছে এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের জীবনমানের উন্নয়নে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। 

Sunday, July 14

কানাইঘাটে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীর আ ত্ম হ ত্যা

কানাইঘাটে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীর আ ত্ম হ ত্যা


নিজস্ব প্রতিবেদক ::

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় খালেদ আহমদ (১৩) নামে সপ্তম শ্রেণির স্কুল শিক্ষার্থী ঘরের তীরের সাথে রশি প্যাঁচিয়ে আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। 

ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার(১৪ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে কানাইঘাট সদর ইউনিয়নের গৌরিপুর গ্রামে। নিহত খালেদ আহমদ (১৩) গৌরিপুর গ্রামের কুয়েত প্রবাসী আব্দুল আহাদের একমাত্র পুত্র এবং পৌরসভার আইডিয়াল স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রবিবার স্কুল ছুটির পর খালেদ আহমদ তার মা সুমি বেগমের সাথে বিকেলে বাড়িতে যায়। সোয়া ৫টার দিকে খালেদ আহমদকে খাওয়ার জন্য মা ও তার দাদি খোঁজাখুজি করার একপর্যায়ে বসত ঘরের ফটিক রুমে গিয়ে খালেদ আহমদকে তীরের রশির সাথে ঝুলে থাকতে দেখেন। সাথে সাথে পরিবারের লোকজন ঝুলন্ত অবস্থায় রশি কেঁটে খালেদ আহমদকে দ্রুত কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে শিক্ষার্থী খালেদ আহমদকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে কানাইঘাট থানা পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে নিহতের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে তার লাশ থানায় নিয়ে আসেন। লাশ ময়না তদন্তের জন্য সিওমেক হাসপাতালে প্রেরন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ। তবে কি কারনে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র খালেদ আহমদ আত্মহত্যা করেছে তার সঠিক কারন জানা যায়নি।

থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানান, স্কুল শিক্ষার্থী খালেদ আহমদ আত্মহত্যা করার সংবাদ পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তার লাশ পুলিশের হেফাজতে আনা হয়েছে। সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদন্তের জন্য সিওমেক হাসপাতালে প্রেরণ করার প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

স্কুল শিক্ষার্থী খালেদ আহমদের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে তার মা সুমি বেগম বার বার মুর্চা যাচ্ছেন। পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনদের কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে।

কানাইঘাটে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে  যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফাহিমের ত্রাণ বিতরণ

কানাইঘাটে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফাহিমের ত্রাণ বিতরণ


নিজস্ব প্রতিবেদক ::

সিলেটের বন্যা দুর্গত বিভিন্ন উপজেলার বানবাসী মানুষের পাশে ব্যাপক ত্রাণসামগ্রী নিয়ে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেছেন জকিগঞ্জ উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের মহিদপুর গ্রাম নিবাসী যুক্তরাজ্য প্রবাসী শিল্পপতি দানশীল ব্যক্তিত্ব ফাহিম আল-ইসহাক চৌধুরী। 

বন্যা দুর্গত জকিগঞ্জ, কানাইঘাট উপজেলার পাশাপাশি সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার বানবাসী কয়েক হাজার মানুষের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী ফাহিম আল ইসহাক চৌধুরী তার বড় ভাই সমাজসেবী এটিএম সেলিম চৌধুরীর মাধ্যমে বিতরণ করে যাচ্ছেন।

ত্রাণ বিতরণের ধারাবাহিকতায় আজ শনিবার (১৩ জুলাই) কানাইঘাট উপজেলার বন্যা কবলিত সাতবাঁক ইউপি, কানাইঘাট সদর ইউনিয়ন ও পৌরসভার কয়েক’শ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাল, ২ কেজি করে মসুর ডাল বিতরণ করা হয়। উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নে ত্রান সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত থাকবে।

পৃথক পৃথক এসব ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ফাহিম আল ইসহাক চৌধুরীর বড় ভাই এটিএম সেলিম চৌধুরী, তার পুত্র মওদুদ আহমদ চৌধুরী, কানাইঘাটের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের সমন্বয়কারী সমাজসেবী আব্দুর রহিম, সাতবাঁক ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মন্নান, কানাইঘাট মনসুরিয়া কামিল মাদ্রাসার সহকারি অধ্যাপক মাও. সাইফুল আলম, কানাইঘাট প্রেসক্লাবের সভাপতি নিজাম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রশিদ, জকিগঞ্জ প্রেসক্লাবের অর্থ সম্পাদক এনামুল হক মুন্না, সাবেক শিক্ষক নেতা মাস্টার জার উল্লাহ,বিশিষ্ট লেখক সরওয়ার ফারুকী,  শিক্ষক নেতা ফয়সল আহমদ, হাজী আব্দুল ওয়াকিল, জুলাই দাখিল মাদরাসার সুপার মোহাম্মদ আলী, ব্যাংকার জাকির হোসেন, মতিউর রহমান, হাফিজ আহমদ সুজন, ফখর উদ্দিন মেম্বার, ফয়সল আহমদ সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও জনপ্রতিনিধিবৃন্দ।

ত্রান বিতরণকালে নেতৃবৃন্দ বলেন, যুক্তরাজ্য প্রবাসী কমিউনিটি নেতা মানবিক ব্যক্তিত্ব জকিগঞ্জ ও কানাইঘাটের কৃতি সন্তান ফাহিম আল ইসহাক চৌধুরী, দীর্ঘদিন থেকে কানাইঘাট ও জকিগঞ্জের অসহায় লোকজনকে তার পরিবারের পক্ষ থেকে সহযোগিতার পাশাপাশি এলাকার অনেক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের অনুদান দিয়ে আসছেন। বিশেষ করে দুর্যোগকালীন মুহুর্তে ফাহিম আল ইসহাক চৌধুরী সব-সময় মানুষকে সহযোগিতা করে থাকেন।

এবারের ভয়াবহ ৩ দফা বন্যায় ব্যাপক আকারে ক্ষতিগ্রস্ত কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলার কয়েক হাজার বানবাসী পরিবারকে ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। তার এমন মানবিক কার্যক্রমে প্রশংসা করে বানবাসী মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত প্রসারিত করায় ধন্যবাদ জানান। ভবিষ্যতেও তার পরিবার মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সেবার হাত প্রসারিত করারও আহবান জানানো হয়।  

Wednesday, July 10

কানাইঘাটে প্রায় ১২শ' বস্তা ভারতীয় চিনিসহ আটক ১

কানাইঘাটে প্রায় ১২শ' বস্তা ভারতীয় চিনিসহ আটক ১


নিজস্ব প্রতিবেদক ::

সিলেটের কানাইঘাটে পৃথক অভিযান চালিয়ে ১১৬১ বস্তা ভারতীয় চিনিসহ দুটি ট্রাক আটক করেছে বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবি।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সড়কের বাজারের পাশ থেকে আটক দুটি ট্রাকভর্তি ৫৮১ বস্তা ভারতীয় চিনি রাত ১০টার দিকে কানাইঘাট থানায় হস্তান্তর করেছে বিজিবি। অপরদিকে রাত ১২টার দিকে বাংলাবাজারের একটি গোডাউন থেকে ৫৮০ বস্তা ভারতীয় চিনি আটক করে কানাইঘাট সুরইঘাট বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের হেফাজতে নিয়ে যায়।

সুরইঘাট বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার গোলাম সারোয়ার জানান, সড়কের বাজারে ভারতীয় অবৈধ চিনি মজুদ ও পরিবহনের সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে বিজিবি সদস্যরা চিনি আটক করতে গেলে চিনি চোরাকারবারীদের বাঁধার সম্মুখীন হন তারা। একপর্যায়ে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসার পর বিজিবি’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কানাইঘাট থানা পুলিশ উপস্থিত হন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। সেখান থেকে স্থানীয় দক্ষিণ জুলাই গ্রামের মৃত আতাউর রহমানের ছেলে সড়কের বাজারের ব্যবসায়ী আজমল হোসেন নামে একজন আটক সহ ৫৮১ বস্তা বোঝাই দুই ট্রাক ভারতীয় চিনি রাত ১০টার দিকে থানায় নিয়ে আসা হয়।

থানায় জব্দকৃত ট্রাক বোঝাই ৫৮১ বস্তা ভারতীয় চিনি আটকের ঘটনায় সুরইঘাট বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার গোলাম সারোয়ার বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃত আজমল হোসেন সহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১০০/১৫০ জনকে আসামী করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। থানার মামলা নং- ৬, তারিখ- ১০/০৭/২০২৪ইং।

চিনি আটকের ঘটনায় মামলা হয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার।

অপরদিকে রাত ১২টার দিকে অভিযান চালিয়ে বাংলাবাজারে অবস্থিত একটি গোডাউন থেকে ৫৮০ বস্তা চিনি উদ্ধার করে বিজিবি সদস্যরা তাদের হেফাজতে নিয়ে যান বলে সুবেদার গোলাম সারোয়ার জানিয়েছেন।

এদিকে বিজিবি কর্তৃক আটককৃত ১১৬১ বস্তা ভারতীয় চিনি সিলেটের এয়ারপোর্ট থানা এলাকার চৌকিদেখী গ্রামের সমশির আলীর পুত্র সাহেদ মিয়া বিভিন্ন ক্যাম্পে ভারতীয় নিলামকৃত মোট ১৭০৫ বস্তা চিনি কিনেন। উক্ত নিলামকৃত চিনি কানাইঘাটের জাহাঙ্গীর হোসেন সহ আরো ৩ জন কিনে সড়কের বাজার ও বাংলা বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে মজুদ করে রাখেন। তাদের নিলামকৃত চিনি বিজিবি’র সদস্যরা কাগজপত্র দেখানোর পরও আটক করেছে বলে জানিয়েছেন।

Tuesday, July 9

সরকার কৃষকদের নানাভাবে সহায়তা করে যাচ্ছে: এমপি হুছামুদ্দিন

সরকার কৃষকদের নানাভাবে সহায়তা করে যাচ্ছে: এমপি হুছামুদ্দিন


নিজস্ব প্রতিবেদক ::

সিলেট-৫ (কানাইঘাট-জকিগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য,জাতীয় সংসদের ধর্মমন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী বলেছেন, সরকার দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার জন্যে দেশের চালিকা শক্তি কৃষকদের কে  বিনামূল্যে বীজ,সার কৃষি উপকরণ বিতরণ করে যাচ্ছে।  

যাতে করে কৃষকরা নিজেদের স্বাবলম্বী করার পাশাপাশী কৃষী উৎপাদনের ক্ষেত্রে দেশকে এগিয়ে নিতে পারেন। এরই ধারাবাহিকতায় কৃষি প্রধান এলাকা কানাইঘাটের প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে আমন ধানের বীজ,সার এবং নারিকেলের চারা বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। 

সাংসদ হুছামুদ্দিন চৌধুরী মঙ্গলবার(৯ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় কানাইঘট উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্দ্যোগে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে কৃষকদের ব্যাপক উপস্থিতে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের খরিফ-২/২০২৪-২৫ মৌসুমে রোপা আমন(উফশী)ও নারিকেল আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি প্রণোদনা ও পূর্নবাসন কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ১৫ শতাদিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও রসায়ানিক সার এবং নারিকেল চারা বিতরণের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরিনের সভাপতিত্বে ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হায়দার আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সাংসদ হুছামুদ্দিন চোধূরী আরো বলেন, তার নির্বাচনী এলাকা কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলাকে সবদিক থেকে একটি সমৃদ্ধ  জনপদে পরিণত করতে এ জনপদের মানুষের মৌলিক দাবি-দাওয়া গুলো ইতোমধ্যে কয়েকবার মহান সংসদে উত্তাপন করেছেন এবং এর সুফল ইতোমধ্যে পেতে শুরু করেছেন জনসাধারণ। বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে এসব কৃষি উপকরণ সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে ফসল বাড়ানোর জন্যে কৃষকদের প্রতি আহবান জানান তিনি। সেই সাথে কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের মাঠে থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা করার নির্দেশ প্রদান করেন। 

সার,বীজ ও নারিকেল চারা বিতরণ অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মস্তাক আহমদ পলাশ,ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আলতাফ হুসেন,মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুকসানা জাহান,উপজেলা স্বাস্থ্য  কমপ্লেক্সের টিএইচও ডাঃসুবল চন্দ্র বর্মন,থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার,স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বিশ্বজিত রায়।উপস্থিত ছিলেন কানাইঘাট সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী,৩নং দিঘীরপার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন চৌধুরী,বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার আফতাব উদ্দিন,কানাইঘাট প্রেসক্লাবের সভাপতি নিজাম উদ্দিন,উপজেলা আঞ্জুমানে আল ইসলাহর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আল আমিন,দিঘীরপার ইউপি শাখার সহ-সভাপতি শাহ তাজিম উদ্দিন ,সাধারণ সম্পাদক রফিক আহমদ চৌধুরি,সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজ ফরিদ আহমদ,সাঁতবাক  ইউপি সভাপতি ক্বারী রাশীদ আলি, সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান প্রমুখ। এছাড়া সাংসদ হুছামুদ্দিন চৌধুরী তাৎক্ষণিক বিভিন্ন  সরকারি দপ্তরের সমস্যার কথা শুনে পদক্ষেপ নেয়ার জন্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে ফোনে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।


Monday, July 8

কানাইঘাটে কুশিয়ারার পানি বৃদ্ধি হাজারো মানুষ পানিবন্দি

কানাইঘাটে কুশিয়ারার পানি বৃদ্ধি হাজারো মানুষ পানিবন্দি


নিজস্ব প্রতিবেদক :
:

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অনেকটা উন্নতি হলেও কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার দিঘীরপাড় ও সাতবাঁক ইউনিয়নের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এই দুই ইউনিয়নের অন্তত ২৬টি গ্রামের লোকজন এখনও পানিবন্দী অবস্থায় দুর্বিসহ জীবন যাপন করছেন। 

অনেক পরিবার এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। তবে এখন পর্যন্ত উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত রয়েছে। 

ভারতের আসাম রাজ্যে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করায় জকিগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা নদীর কয়েকটি স্থানে ডাইক ভেঙে ও উপচে পানি প্রবেশ করায় কানাইঘাটের দিঘীরপাড় ইউনিয়নের জিৎপুর, নালুহারা, কুওরেরমাটি, মাঝরগ্রাম, দুয়ারীমাটি, সর্দারমাটি, মানিকপুর, ধনপুর, শাহপুর, মাটিজুরা, ছত্রনগর, রামপুর পূর্ব, কঠালপুর, মাছুগ্রাম, কাপ্তানপুর, ঠাকুরেরমাটি গ্রাম এবং সাতবাঁক ইউনিয়নের জুলাই, ভবানীগঞ্জ, পূর্ব ঠাকুরেরমাটি, চরিপাড়া, লালারচক, পীরনগর, সাতপারি, আগচটি, দলইমাটি, জয়পুর গ্রামের বিস্তৃর্ণ জনপদ বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এ দু’টি ইউনিয়ন বাদে ৭টি এবং পৌরসভার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলেও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত আধা-পাকা ও কাঁচা বসত ঘরগুলো থেকে কাদা মাটি পরিস্কার করে বসবাসের উপযোগী করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু অনেকে অর্থের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি-ঘরগুলো মেরামত করতে পারছেন না। 

বিশেষ করে পর পর তিন দফা বন্যা হওয়ার কারনে কৃষকরা ব্যাপকহারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। শেষ দফার বন্যায় শত শত আউস ধানের বীজতলা ও সবজি বাগান বিনষ্ট হওয়ার কারনে কৃষকরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। পানি কমার সাথে সাথে কানাইঘাট সুরমা নদীর ১৮টি ভাঙন কবলিত স্থান মেরামত করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হলেও এখনও অনেক ভাঙন দিয়ে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ অব্যাহত থাকায় কাজ শুরু করতে পারছেন না ঠিকাদাররা। নদীর পানি কমে গেলে দ্রুত ভাঙন কবলিত স্থানগুলো মেরামত করা হবে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরিন জানিয়েছেন। 

তিন দফা বন্যায় উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক সহ গ্রামীণ, পাকা, ইটসলিং ও কাঁচা সড়কগুলো ব্যাপক আকারে ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় সবমিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ১’শ কোটি টাকার উপরে হবে বলে জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যার পর সম্প্রতি তিন বারের বন্যায় কানাইঘাট গাজী বোরহান উদ্দিন সড়কের প্রায় ৩৫ কিলোমিটার রাস্তা ব্যাপক আকারে ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় যান চলাচল থেকে শুরু করে মানুষজনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়কটি যান চলাচল সহ মানুষের যাতায়াতে জন্য উপযোগী করার জন্য অর্থ বরাদ্দের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 

এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কানাইঘাট-শাহবাগ-দরবস্ত সড়কের টেকসই উন্নয়নের জন্য সড়ক ও জনপথের পক্ষ থেকে নতুন করে ৪২ কোটি ৫১ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সড়ক ও জনপথের কর্মকর্তারা সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলো মেরামত সহ যাতে করে বন্যায় সড়কটি নতুন করে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এজন্য সার্ভে করে মাস দু’এক এর মধ্যে কাজ শুরু করা হবে বলে জানা গেছে। 

Saturday, July 6

বরাক পারের বয়ান : নতুন যুগের প্রথম দলিল

বরাক পারের বয়ান : নতুন যুগের প্রথম দলিল


সরওয়ার ফারুকী::

“আজি হতে শতবর্ষ পরে

কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি

কৌতূহলভরে—

আজি হতে শতবর্ষ পরে।”
বিশ্বকবির অমর আকুতির মতো শতবর্ষ পরের কৌতূহলী কোনো পাঠক যদি আজকের (২০২২-২৪ খ্রি:) সময়ের কানাইঘাট-জৈন্তাপুরের সমাজ-জীবন জানতে চান— তাঁর জন্য ‘বরাক পারের বয়ান’ নিঃসন্দেহে অদ্ভুত এক অমৃতসুধা। অতীতের প্রতি উঁকি দেওয়া মানুষের সহজাত বৃত্তি, কেউ-না-কেউ এসে উঁকিঝুকি করবে; অতীতকালের খোঁজখবর নিবে— তার জন্যই দুনিয়ার কবিগণ কোনো-না-কোনো ফুল, বিহঙ্গের কোনো গান, কোনো রক্তরাগ—অনুরাগে সিক্ত করে পাঠাচ্ছেন তাহাদের তরে।
বরাক পারের বয়ান— সুনির্দিষ্ট এলাকায় যাপিত জীবনের প্রথম এবং প্রত্যক্ষ দলিল। সুনির্দিষ্ট এ এলাকা হচ্ছে কানাইঘাট ও জৈন্তাপুর। এ দু উপজেলার সামাজিক ইতিহাসের এমন দলিল অতীতকালে কেউ রচনা করেননি, এজন্য এ বই নতুন ইতিহাসের প্রথম ফলক— যেখান থেকে যাত্রাপথের আরও অনেক ফলক যুক্ত হবে অনাগত কোনো বয়ানকারীর মাধ্যমে। কোনো ঘটনা, বিষয় যত মহৎ কিংবা বৃহৎ হোক— তা যদি কলমের ছোঁয়ায় কাগজের পাতায় না-ওঠে তাহলে তার ঐতিহাসিক গুরুত্ব বা মাহাত্ম্য তৈরী হয় না। খ্যাত কিংবা অখ্যাত কোনো লেখকের আলতো ছোঁয়া ব্যতীত মানুষের ইতিহাস গঠিত হয় না; লেখকরাই রিলে রেইসের মতো মানব সভ্যতাকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে পৌঁছান।
কানাইঘাট ও জৈন্তার আধুনিক ইতিহাস দীর্ঘ নয়, অথচ নাতিদীর্ঘ এই ইতিহাস পাঠের ক্ষেত্রেও রয়েছে বিপুল তথ্য-ঘাটতি। এজন্য, কলোনিয়াল যুগের ঐতিহাসিক আলবার্ট গেইট থেকে এই সময়ের ‘কিশোর কানাইঘাট’ পর্যন্ত প্রকাশিত বইগুলোর সূচিপত্র ঘুরেফিরে একরকম, বিষয়বৈচিত্রহীন। এই প্রথম এ অঞ্চলের ইতিহাস পাঠে বিষয়বৈচিত্র যুক্ত হয়েছে, যুক্ত করেছেন বরাক পারের বয়ান বইয়ের লেখক এহসানুল হক জসীম। এ অঞ্চলের ইতিহাস বুঝতে আমরা যেসকল বইয়ের উপর নির্ভর করি— সেসকল বই সংকলিত— যা শ্রুতি, স্মরণ কিংবা বর্ণনানির্ভর। স্বাভাবিকভাবেই ইতিহাস জানার ক্ষেত্রে সেসকল বইয়ের তথ্য-ঘাটতি, বিভ্রান্তি, স্থান-কালের অসংগতি সচেতন মহলকে পীড়িত করে। এ অঞ্চলে অতীতকালের কোনো মনিষীর আত্মকথন, সাক্ষাৎকার কিংবা সফরনামা না-থাকায় স্থান-কাল-পাত্রনির্ভর নানান মিথ জমে উঠছে। এ অঞ্চলের কবি, লেখক, গবেষক বা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আত্মজীবনী, সাক্ষাৎকার বা স্মৃতিচারণমূলক কোনো লেখা নেই— তাই, অঞ্চলের সামাজিক ইতিহাস অন্ধকারের রূদ্ধ কপাটে আবদ্ধ, এই প্রথম কেউ একজন সেই রূদ্ধ কপাটের খিল খুললেন— তিনি হলেন এহসানুল হক জসীম! এহসানুল হক জসীম পেশায় সাংবাদিক, স্বীকৃত একজন গবেষকও। তিনি ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ জাতীয় সম্মাননা-২০২৩’ পদকপ্রাপ্ত। ইতিপূর্বে তার লেখা 'ইসলামী রাজনীতির ব্যবচ্ছেদ' নামক বইটি এ দেশের ইসলামী রাজনীতির চিত্র-চরিত্র বুঝতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বরাক পারের বয়ানে লেখক তিনটি পরিশিষ্ট সহ মোট আটান্নটি অধ্যায়ে আলোচনা সঞ্চালন করেছেন। সূচীপত্রের ৯-১০ ও ১৭ থেকে ২০, কিংবা ২১-২২ অধ্যায়ের বিষয়বস্তুর মধ্যে যোগসূত্র থাকায় অধ্যায়সূচী আটান্ন হলেও তা তিপ্পান্নটি বিষয়সূচির মধ্যে চলে এসেছে। বাদবাকী বিষয়সূচী সম্পূর্ণ আলাদা বা পরস্পর সম্পর্কহীন, এতে বইয়ের মান কিংবা গুণ ক্ষুন্ন হয়নি, বরং সৌন্দর্য বেড়েছে। এ বইয়ের প্রথম অধ্যায়ের শিরোনাম ‘শতবর্ষে কানাইঘাটের লড়াই’— এই একটিমাত্র অধ্যায় নানান সময় নানানভাবে নানান বইয়ে আলোচিত হয়েছে, এছাড়া বইয়ের প্রতিটি অধ্যায়ের আলোচনা একেবারেই নতুন এবং বিষয়সমূহ বৈচিত্রে পূর্ণ। লেখকের দেওয়া শিরোনামগুলোও মনকাড়া, শৈল্পিক, কবিতার মতো ছন্দময়। উদাহরণ: যদি কানাইঘাটকে জানতে সাধ হয়/তুমিও স্বৈরাচার, তুমিও জালিম/ তারে ফুল দিতে যেন ভুলে না যাই/ সুরম্য মসজিদের ইমামের বেতন কত?/স্মরণের আবরণে মরণেরে যত্নে রাখি ঢাকি/ ফুসতাত থেকে দুবাই— প্রতিটি শিরোনামই মন ছুঁয়ে যায়, আঘাত করে, ভেতর দেখার খায়েশ জাগায়।
এ বইয়ের আলোচ্য বিষয়সমূহ আমাদের নিত্যদিনের ঘটনাপর্ব। চারপাশে আমরা যা দেখি, যা করি, যেসকল সুখ-দুখের সঙ্গে আমাদের নিত্যদিনের বসবাস— সেসবই বইয়ের আলোচ্য বিষয়। কেমন চলছে এ সমাজ, কী তার রোগবালাই, কেমন তার সুখ-দুঃখের ধরণ— তা জানতে এ বইয়ের পাঠ অপরিহার্য। এভাবে, আপন সময়ের সমাজচিত্রের বয়ান এ অঞ্চলের কেউ কখনো লিখেন নি— এখানেই এ বই অনন্য। ভবিষ্যতে যে বা যারা এ অঞ্চলের ইতিহাস চর্চা করবেন— তাদের কাছে এ বই অমূল্য, চলতি দিনের দর্পণ, আগামী দিনের চোখ। তাই, দিন যত যাবে এ বইয়ের মূল্য তত বাড়বে। দুই-চার প্রজন্মের পরবর্তী পাঠকের কাছে এ বই এমন এক টাইম মেশিন— যার মধ্য দিয়ে পূর্বযুগের সময়চিত্র দেখা যাবে!
বইয়ের শেষাংশে জুড়ে দেওয়া পরিশিষ্টের তিনটি অধ্যায় বড়ই বেমানান— যদিও অধ্যায়গুলো গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, পরিশিষ্টের তিনটি অধ্যায় নিয়ে আলাদা তিনটি বই করা যেত, এতে ইতিহাস সমৃদ্ধির পাশাপাশি অনেক আবর্জনাও দূর হতো। লেখকের হাতে যত তথ্য, তত্ত্ব কিংবা সওয়াল-জওয়াব রয়েছে তাতে প্রতিটি বই আকর গ্রন্থের মর্যাদা পেত নিঃসন্দেহে। গবেষক এহসানুল হক জসীমের কাছে এমন প্রত্যাশা বাড়াবাড়ি নয়।
পরিশিষ্ট-১-এ আল্লামা মুহাম্মদ মুশাহিদ বাইয়মপুরির কর্মচঞ্চল জীবনের চিত্র এঁকেছেন তিনি। মুহাম্মদ মুশাহিদ বাইয়মপুরির জীবনচরিত্রে সেঁটে দেওয়া প্রচলিত মিথ সমূহের বাইরে গিয়ে তাঁর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও দার্শনিক সত্ত্বা ফুটিয়ে তোলবার চেষ্টা করেছেন। লেখকের এ প্রচেষ্টা মুশাহিদ বাইয়মপুরিকে বোঝার ক্ষেত্রেও মাইলফলকের ভূমিকায় থাকবে।
একইভাবে, পরিশিষ্ট-২-এ লেখক ‘কানাইঘাটের মুক্তিযুদ্ধ’ শিরোনামে একটি অধ্যায় যুক্ত করেছেন— যা কানাইঘাটের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাঠের জন্য অনন্য এক দলিল। কানাইঘাটের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাঠে এরচেয়ে সমৃদ্ধ প্রবন্ধ আগে আর রচিত হয়নি।
পরিশিষ্ট-৩-এর শিরোনাম ‘সিলেট-৫ : একাল সেকাল’। এ অধ্যায়ে লেখক এই সংসদীয় আসনের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পরিচয় এনেছেন। ভারতবর্ষের প্রথম প্রত্যক্ষ ভোটের ফলাফল থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিজয়ীদের উপর কিঞ্চিৎ আলোকপাত করেছেন— এতে এ আসনের ব্যাপারে সাধারণ পাঠকের ধারণা সমৃদ্ধ হবে।
বইয়ের নামকরণ নিয়ে এ প্রজন্মের অনেকেই ধাঁধায় পড়বেন। কোন নদীর নাম যে বরাক— তা অনেকেই হয়তো জানেন না। সুরমা-কুশিয়ারা নদীর উৎসমূল হচ্ছে বরাক নদী যা বর্তমান ভারতের অংশ। জকিগঞ্জ উপজেলার আমলশিদ হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় বরাক নদী সুরমা ও কুশিয়ারা নামে দু ভাগ হয়েছে। এই ভাগ-মুখে তরুণ প্রজন্মের অনেকেই বেড়াতে যান, আনন্দ ভাগাভাগি করেন। কিন্তু এ অঞ্চলের সামাজিক জীবনযাত্রায় বরাক নামের কোনো ধ্বনি-প্রতিধ্বনি নেই, তাই নামকরণের যৌক্তিকতা বুঝাতে বইয়ের ভূমিকায় লেখককে কোর্টকাছারির ব্যাখ্যা এনে যুক্ত করতে হয়েছে। নামকরণ আর পরিশিষ্টের ছন্দপতন ছাড়া এই বইয়ের আপাদমস্তক মনোলোভা, সচেতন পাঠকের মনের খোরাক।
বরাক পারের বয়ানে ইতিহাস আছে, স্মৃতি আছে, দুঃখ-শোকের প্রবাহ আছে, আশা-নিরাশা, মান-অভিমানের দ্বন্ধ আছে, অসঙ্গতির প্রতি গর্জন আছে। এ বইয়ে ক্রোধ আছে, সমীহ আছে, কবির মনের মতো রোমান্টিকতা আছে, সর্বোপরি— সমাজ-দরদী এক লেখকের দরদের সুস্পষ্ট স্বাক্ষর আছে।
তিনটি পরিশিষ্ট সহ আটান্নটি অধ্যায়ে বিভক্ত এ বইয়ের পৃষ্ঠাসংখ্যা ২৬১। প্রকাশক: কানাইঘাট ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ পরিষদ। যুতসই প্রচ্ছদ এঁকেছেন শিল্পী জাহেদ হোসাইন রাহিন। ঢাকা থেকে ছেপে আনা এ বইয়ের ছাপায় বেশ দুর্বলতা রয়েছে, বাঁধাই মানহীন, কাটিং ত্রুটিপূর্ণ— এ সবই লেখকের তাড়াহুড়োর সুস্পষ্ট প্রমাণ। তবে, ইতিহাসের অনন্য এই দলিল নির্মাণে লেখকের তাড়াহুড়োর ত্রুটি হয়তো ক্ষমা করাই যায়!
কানাইঘাটে অমরাবতী’র উদ্যোগে ঢেউটিন বিতরণ

কানাইঘাটে অমরাবতী’র উদ্যোগে ঢেউটিন বিতরণ


নিজস্ব প্রতিবেদক:

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় বন্যায় হতদরিদ্র ক্ষতিগ্রস্ত ১৮টি পরিবারের মাঝে সিলেটের বাগান বিলাসীদের সংগঠন অমরাবতী’র উদ্যোগে ঢেউটিন বিতরণ করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেল ৩টায় উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে ঢেউটিন ও নগদ অর্থ তুলে দেয়া হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অমরাবতী এর সিলেট চাপ্টারের হেড ও ওসমানী মেডিক্যালের গাইনী বিভাগের ডাঃ খোরশেদা তাহমিন সিমু, মহান মুক্তিযুদ্ধের এডিশনাল চীফ অফ স্টাফের এ.আর চৌধুরীর মেয়ে বিশিষ্ট সমাজসেবীকা শিরীন চৌধুরী, অমরাবতীর সদস্য লেখক গবেষক ও ব্যাংকার মোশতাক চৌধুরী, বিশিষ্ট সমাজসেবী জিন্দাবাজার লতিফ সেন্টার এর স্বত্বাধিকারী হায়দার চৌধুরী মুক্তা, সমাজসেবী অমরাবতীর কোঅরডিনেটর আহমদ জিন্নুন দারা, কানাইঘাট প্রেসক্লাবের সভাপতি নিজাম উদ্দিন, সাংবাদিক আলাউদ্দিন, সুজন চন্দ অনুপ, শিক্ষিকা ও সমাজসেবী মুনমুন, সিলেট কিডনি ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা বাসিত বিন সুমন, শ্যাডো সিলেট এর সাংবাদিক লিটন চৌধুরী, কানাইঘাট উপজেলা লাইব্রেরিয়ান হাসান আহমেদ, কবি, লেখক ও সমাজসেবী শিপুল আমিন চৌধুরী।

ঢেউটিন বিতরণকালে অমরাবতী সংগঠনের সাথে জড়িত নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘সবুজের সাথে মিথালী করি-সবুজ পৃথিবী গড়ি’ এই শ্লোগান ধারন করে সংগঠনটি দেশব্যাপী ব্যাপক বৃক্ষ রোপন করে থাকে। বিশে^র বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীরা এ সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন এবং সামাজিক কর্মকান্ডে তারা পৃষ্টপোষকতা করে থাকেন। এবারের পর পর তিন দফা বন্যায় সিলেট অঞ্চল ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে শত শত মানুষের বাড়ি-ঘর বন্যার পানিতে ভেঙে গেছে। মানবিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বন্যার এ সময় সাধ্যনুযায়ী অমরাবতী ক্ষতিগ্রস্ত অনেক পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় কানাইঘাট উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৮টি পরিবারকে ১ বান করে ঢেউটিন ও পরিবহনের সামান্য অর্থ দেয়া হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে সরকারের পাশাপাশি সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহ বৃত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।

কানাইঘাটে আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার ও ত্রাণ বিতরণ

কানাইঘাটে আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার ও ত্রাণ বিতরণ


নিজস্ব প্রতিবেদক ::

কানাইঘাটে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেয়া পরিবারের মধ্যে উন্নতমানের রান্না করা খাবার এবং প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরিন।

শুক্রবার দিনভর নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরিন উপজেলার ৩নং দিঘীরপাড় পূর্ব ইউনিয়নের মানিকপুর বেসরকারি বিদ্যালয়, শাহ ইব্রাহিম তশ্না প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেয়া বানবাসী মানুষের মধ্যে সরকারি ভাবে উন্নত মানের রান্না করা খাবার বিতরণ করেন। পাশাপাশি ৪নং সাতবাঁক ইউনিয়নের দাবাধরনিরমাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেয়া পরিবারগুলোর মধ্যে রান্না করা খাবার ও প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন তিনি।

এছাড়া সম্প্রতি বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি সরকারি ত্রাণ সামগ্রী সুষ্ঠু ভাবে বিতরণের বিষয়টি তদারকি করে যাচ্ছেন নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরিন। এছাড়া বড়বন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলোর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ সামগ্রী ও শিশু খাদ্য বিতরণ করেন তিনি।

নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরিন বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পানিবন্দী এলাকার লোকজনদের পাশে সরকার ও প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিরা রয়েছেন। কানাইঘাট উপজেলায় বন্যায় বরাদ্দকৃত সরকারি ত্রাণ সামগ্রী সুষ্ঠুভাবে বিতরণ অব্যাহত রয়েছে এবং সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক মহল ও সামাজিক সংগঠনগুলো বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।