:: লক্ষ্মীপুরে প্রতিনিধি ::
লক্ষ্মীপুরে এ বছর নারকেলের বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি মৌসুমে জেলায় ৮৫ কোটি টাকার নারকেল ব্যবসা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
লক্ষ্মীপুরে এ বছর নারকেলের বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি মৌসুমে জেলায় ৮৫ কোটি টাকার নারকেল ব্যবসা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এজেলায় দুই হাজার ৬৪৫ হেক্টর ভিটি জমিতে নারকেল বাগান রয়েছে। এর মধ্যে সদরে ১ হাজার ৩৯০ হেক্টর, রামগঞ্জে ৪২০ হেক্টর, কমলনগর ৩৫০ হেক্টর, রায়পুর ৩৬৫ হেক্টর ও রামগতি উপজেলায় ১২০ হেক্টর জমিতে নারকেলের বাগান রয়েছে।
এ মৌসুমে সাড়ে পাঁচ কোটিরও বেশি নারকেলের ব্যবসা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী এর মূল্য প্রায় ৭০ কোটি টাকা। এছাড়া ১৫ কোটি টাকার বেশী নারকেলের ছোবড়া বিক্রি হবে বলে আশা করে হচ্ছে।
নারকেল চাষী মো. পলাশ জানান, প্রায় ৫ শতাধিক নারকেল গাছ রয়েছে। নারকেল চাষে তেমন কোন খরচ নেই। প্রথমে গাছ লাগাতে প্রয়োজনীয় সার প্রয়োগ ও পরিচর্যা করতে হয়। গাছ লাগানোর পাঁচ-ছয় বছরের মধ্যে ফল পাওয়া যায়। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে গাছের মাথা পরিস্কার করতে হয়। একেকটি নারকেল গাছ ৫০-৬০ বছর পর্যন্ত ফল দিয়ে থাকে।
এছাড়া প্রতিটি গাছ থেকে বছরে ২০০-৪০০টি পর্যন্ত নারকেল পাওয়া যায়। এ মৌসুমে তিনি ১০০ নারকেল ১৪০০ থেকে ১৭০০ টাকা দরে ইতিমধ্যে ৫০ হাজার টাকার নারকেল বিক্রি করেছেন বলেও জানান তিনি।
চন্দ্রগঞ্জ বাজারের নারকেল ব্যবসায়ী কামাল হোসেন জানান, এ মৌসুমে হাজার নারকেল ১৪ থেকে ১৯ হাজার টাকা দরে প্রায় ৬০ লাখ টাকার নারকেল কিনেছেন। ইতিমধ্যে প্রায় ৪০ লাখ টাকার নারকেল বিক্রি করেছেন। তার মোকামে আট জন শ্রমিক নারকেল ছোবড়া তোলার কাজ করছেন।
দালাল বাজারের নারকেল ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান জানান, বর্ষা মৌসুমের প্রতি সপ্তাহে দালাল বাজার থেকে ৬০-৭০ লাখ টাকার নারিকেল দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে।
ছোবড়া কারখানার মালিক আকরাম হোসেন বলেন, “এ শিল্পে তেমন কোন লোকসান নেই। বার মাস নারকেলের ছোবড়ার চাহিদা রয়েছে।"
নারকেল শ্রমিক ইসমাইল হোসেন জানান, প্রায় বিশ বছর যাবৎ তিনি নারকেলের ছোবড়া তোলার কাজ করছেন। এক হাজার নারকেল ছোবড়া তুললে ৩০০ টাকা পান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ওছমান খান জানান, জেলায় বছর জুড়ে নারকেলের কেনা-বেচা হলেও জমজমাট ব্যবসা হয় এ বর্ষা মৌসুমে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় নারকেলের বাম্পার ফলন হয়েছে।
এছাড়া নারকেল ভিত্তিক শিল্প-কারখানা গড়ে উঠলে বিপুল সংখ্যক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলেনও জানান তিনি।---পরিবর্তন