Thursday, March 19

একই গাছের কাণ্ডে টমেটো শেকড়ে আলু!


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) পটিয়া উদ্যান উন্নয়ন ‘একই গাছের কাণ্ডে টমেটো ও শেকড়ে গোল আলুর পরীক্ষামূলক চাষে সফলতা পেয়েছে। গত এক বছর ধরে বিএডিসি একই গাছের কাণ্ডে টমেটো ও শেকড়ে গোল আলু উৎপাদনে পরীক্ষামূলকভাবে দেশের বিভিন্ন উদ্যানে চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে। একে ‘পমেটো’ নামে অভিহিত করা হচ্ছে। আগামী বছর ২০১৬ নাগাদ বাণিজ্যিকভাবে কৃষকদের মাঝে নতুন প্রযুক্তিতে উদ্ভাবিত আলু ও টমেটো চারার সঙ্গে গ্রাফটিং পদ্ধতির (জোড়া কলম) আলু ও টমেটো চাষ ছড়িয়ে দেওয়া হবে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন বিএডিসি গত বছর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে চট্টগ্রামের পটিয়া উদ্যান উন্নয়নসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাতটি উদ্যানে, বরিশালে অ্যাগ্রো সার্ভিস সেন্টারে, কৃষক পর্যায়ে মুন্সীগঞ্জে এবং মানিকগঞ্জে প্রাথমিকভাবে গ্রাফটিং পদ্ধতির একই গাছের কাণ্ডে টমেটো ও শেকড়ে গোল আলু গাছ রোপণ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে। প্রতিটি গাছেই বাম্পার ফলন হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও নতুন পদ্ধতিতে রোপণ করা গাছে ফসল উৎপাদনে তারতম্যও দেখা গেছে। যেসব জায়গায় গ্রাফটিং পদ্ধতিতে একই সঙ্গে আলু ও টমেটোর উৎপাদন ভালো হয়েছে সেসব জায়গায় গড়ে প্রতিটি গাছে কাণ্ডে আড়াই থেকে তিন কেজি টমেটো এবং শেকড়ে (গোড়ায়) সাড়ে ৪০০ গ্রাম থেকে ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত গোল আলু উৎপাদন হয়েছে। একই গাছে কাণ্ডে টমেটো ও শেকড়ে গোল আলু উৎপাদনে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) অভূতপূর্ব সফলতা ইতোমধ্যে দেশজুড়ে কৃষকসহ সাধারণ মানুষের মাঝে বেশ সাড়া জাগিয়েছে। বিএডিসি পটিয়া উদ্যান উন্নয়নের যুগ্ম পরিচালক ইদ্রিস মিয়া বলেন, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন ইতোমধ্যে বিভিন্ন উন্নত জাতের ফসল উত্পাদনে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে। পটিয়ায় উদ্যানের নিজস্ব মাঠে স্বল্প পরিসরে গ্রাফটিং পদ্ধতির পমেটো (আলু গাছ ও টমেটো গাছে গ্রাফটিং) চাষ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কাণ্ডে থোকায় থোকায় উন্নতমানের টমেটো ধরেছে। মাটির নিচে শেকড়ে ধরেছে গোল আলু। তিনি বলেন, আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে ফসল তেমন ভালো না হলেও এ সফলতা এলাকার কৃষক ও সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। তিনি বলেন, বাণিজ্যিকভাবে টমেটো চাষ কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) নিরলসভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) উপব্যবস্থাপক উদ্যান ড. ইসবাত বলেন, ডায়মন্ড ভ্যারাইটির গোল আলু বারি জাতের টমেটো চারার সঙ্গে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে (জোড়া কলম) উদ্ভাবিত একই গাছের কাণ্ডে টমেটো ও শেকড়ে গোল আলুর উৎপাদন বিদেশের বেশ কয়েকটি দেশে অনেক আগেই শুরু হয়েছে। গত বছর থেকে আমরা বাংলাদেশে নতুন পদ্ধতির একই সঙ্গে টমেটো ও গোল আলু পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছি। তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে বিএডিসি নতুন জাতের আরও একটি সবজিরও পরীক্ষামূলক উৎপাদনে গেছে। সে সবজিটির নাম হলো টমাটিলো। টমাটিলো হলো পুরো পাতা দিয়ে আচ্ছাদিতভাবে উৎপাদিত উন্নতমানের টমেটো জাতীয় সবজি। তিনি আশা করছেন, ২০১৬ সালে নতুন উদ্ভাবিত টমাটিলো ও পমেটোর চাষ কৃষকদের মাঝে বাণিজ্যিকভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এই নতুন পদ্ধতির টমাটিলো ও পমেটো চাষ করে এলাকার কৃষকরা লাভবান হবে। তাছাড়া আমরাও উন্নতমানের আলু ও টমেটো পাবে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়