Wednesday, July 31

'উপরের নির্দেশে আরপিও আইনের পরিবর্তন'

নির্বাচন কমিশন আরপিও সংশোধনের যে উদ্যোগ নিয়েছে এটাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার বলেছেন, "নির্বাচন কমিশন যখন আরপিও আইনের খসড়া তৈরি করে তখন এ জাতীয় বিধান তাতে ছিল না। পরবর্তীতে উপরের নির্দেশে তা করা হয়েছে।"
আরপিও সংশোধন করলে দেশে বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এম কে আনোয়ার বলেন, "সরকার নির্বাচন কমিশনে তাদের কয়েকজন আজ্ঞাবাহককে নিয়োগ দিয়েছেন। তারপরেও আমরা তাদের কাজের মূল্যায়ন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু গত কয়েকদিন আগে তারা যে আরপিও সংশোধনীর উদ্যোগ নিয়েছে, তা উদ্দেশ্যমূলক।"
তিনি বলেন, "নির্বাচন কমিশন কোন আইন পরিবর্তন করতে চাইলে, বড় রাজনৈতিক দলগুলো ও সুশীল সমাজের সাথে আলোচনা করে। এটাই ইতোপূর্বে হয়ে এসেছে। কিন্তু বর্তমান কমিশন আইন পরিবর্তন করছে অথচ তারা প্রধান রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও জনগণের সাথে আলোচনা করেনি।"
আনোয়ার বলেন, "নতুন সংশোধনীর প্রস্তাব ইসির নয় বরং তা অন্য জায়গা থেকে এসেছে। এটা উদ্দেশ্য প্রণোদিত।"
প্রার্থী বাতিলে ইসির ক্ষমতা খর্ব করার বিষয়ে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, "ইসি বলছে এই বিধানটা কখনো প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু তারা বুঝতে পারছে না এই বিধানের ফলে নির্বাচনকালীন সময়ের অপরাধ কমে গেছে। এখন যদি তা বাতিল করা হয়, তাহলে নির্বাচনের সময় ব্যালট বাক্স নিয়ে দৌড় দিলে কিংবা এজেন্টদের বের করে দিলে তখন কমিশনের কাছে অভিযোগ করলেও, তাদের কিছুই করার থাকবে না।"
এই প্রার্থীতা বাতিলের ক্ষমতা খর্ব করা হলে নির্বাচন সংক্রান্ত অপরাধ বেড়ে যাবে। যার ফলে কমিশনের পক্ষে সমালোচনা সম্ভব হবে না। এছাড়া নির্বাচনকালীন দলীয় প্রধানসহ তার মনোনীত ২০ জন যে কোন জায়গায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবে এমন বিধান তুঘলকি বিধান পৃথিবীর কোন দেশে রয়েছে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেন, "নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চাই কোথায় এমন বিধান আছে। এটা করলে বিরোধীদল কোনো সুযোগ সুবিধা পাবে না।"
ইসিকে উদ্দেশ্য করে এমকে আনোয়ার বলেন, "আরপিও আইনের খসড়া তৈরি করলে তা কখনো গ্রহণযোগ্য হবে না। আপনাদের (ইসি) অপকর্ম দিয়ে এই সংকট ঢাকতে পারবেন না। যারা ইতোমধ্যে পানির তলায় ডুবে গেছে, শুধু একটি দলকে উদ্ধার করার জন্য ষড়যন্ত্র করলে নির্বাচন কমিশনের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।"
যদি এটি করতেই হয় তাহলে রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে আলাপ আলোচনা করেই করতে হবে বলেও জানান তিনি।
আনোয়ার ইসির উদ্দেশ্যে বলেন, "আপনারা সোজা পথে ফিরে আসুন। আইন পরিবর্তনের আগে রাজনৈতিক দল ও জনগণের সাথে কথা বলুন। পানির তলানিতে থাকা একটি দলকে উদ্ধার করতে ইসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।"
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন," এতে করে নির্বাচনের বিষয়টি আরো জটিল হয়ে উঠবে। এই বিধান কারো কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। আর এটি করা হলে তখন শুধু নির্দলীয় সরকারে অধীনে নির্বাচনের জন্য আন্দোলন নয়, নির্দলীয় নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্যও আন্দোলন হবে।"
এটা বিধান করলে কারা লাভবান হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "এখন যাদের ওপর আইন প্রযোজ্য হয় না, তখনও হবে না। এতে একটি বিশেষ দলই লাভবান হবে।"
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও সহ দফতর আসাদুল করিম শাহীন।--পরিবর্তন

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়