প্রফেসর এম ফরিদ উদ্দিন ::
সাতই নভেম্বর। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী অধ্যায় সাতই নভেম্বর, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার মাইলস্টোন সাতই নভেম্বর, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে নতুন বাঁক ও গতিধারা প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক ক্ষণ সাতই নভেম্বর এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দৃপ্ত অঙ্গীকারের চেতনা সাতই নভেম্বর। সাতই নভেম্বর বহুমুখী ঘটনা অনুঘটনার এক মহা-সম্মিলনের নাম।
১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর দেশের মুক্তিকামী ও দেশপ্রেমিক সিপাহী জনতা এক বিশাল পরিবর্তনের প্রত্যাশা লালন ও ধারণ করে রাস্তায় নেমে আসে এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের অনুগত সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে জাতীর ইতিহাসের মোড় সঠিক ও কাংখিত পথে ঘুরিয়ে দিতে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল। বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক সিপাহী জনতা ভারতীয় আধিপত্যবাদের সমস্ত ষড়যন্ত্রের নীল নকসা নস্যাৎ করে সদ্য স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় ঘুরে দাড়াঁনোর প্রত্যয় ঘোষণা করে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খালেদ মোশাররফের দেশবিরোধী ব্যর্থ অভ্যুত্থান চলাকালীন সময়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে তাঁর নিজ বাসভবনে গৃহবন্দী করে রাখা হয়। কিন্তু ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের দেশপ্রেমিক সিপাহী ও বীর জনতার পাল্টা প্রতিরোধ ও বিদ্রোহের ফলে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বন্দী দশা হতে মুক্তি লাভ করেন। একটি বিশৃংখল, অরাজক ও দুর্ভিক্ষ পীড়িত দেশকে সাম্য, সম্প্রীতি ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে নিতে মুক্তিযুদ্ধের বীরসেনানী ও স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ধ্রুব তারকার মতো রাজনীতির Centre point এ আবির্ভূত হন। আর এভাবেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জনতার জিয়াউর রহমানে পরিণত হন, পরিণত হন সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত বাংলাদেশের উন্নয়নের রুপকার ও চালিকা শক্তি হিসাবে। পরবর্তী কালের ইতিহাস কেবলমাত্র শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বিজয় গাঁথা, সাফল্য ও গৌরবজনক ইতিহাস।
ইতিহাস, ঐতিহ্য, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও চেতনার দিক হতে ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর ও ২০২৪ সালের ৫ই আগষ্ট মিলিত হয়েছে একই মোহনায় এবং আগামী দিনের বাংলাদেশের এক অভিন্ন পথরেখা তৈরী করেছে। এই দু'টি অভ্যুত্থানের চেতনা ও উদ্দেশ্য এক, অভিন্ন ও একই সুত্রে গাঁথা। কিন্তু ভবিষ্যত বাংলাদেশের সামনের দিন গুলোতে রয়েছে হরেক রকমের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ। ঐ সমস্থ চ্যালেঞ্জ সমূহ অত্যন্ত সুকৌশলে, দক্ষতা ও পরিপক্বতার সাথে মোকাবেলা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির সোপানে, স্বর্ণশিখরে।
১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর এর অব্যবহিত পরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যেমন করে পথহারা বাংলাদেশের সঠিক নিশানা নির্ধারণ করে নির্মাণ সাধন করেছিলেন, ঠিক একই ভাবে ও একই কায়দায় জনাব তারেক রহমান সকল জাতীয় ও ভূ- রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে সামনের দিনগুলোতে নেতৃত্ব দিবেন। জনাব তারেক রহমান হয়ে উঠবেন বাংলাদেশের একজন দক্ষ পাঞ্জেরী। পাহাড় সমান কঠিন কাজটি সুচারুরুপে সম্পন্ন করতে জনাব তারেক রহমান সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আর এ জন্যই জনাব তারেক রহমান Loudly and Clearly প্রত্যয় ব্যক্ত করেন, দিল্লি নয়, পিন্ডি নয়, নয় অন্য কোন দেশ, সবার আগে বাংলাদেশ।
১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বরের পর জনতার জিয়াউর রহমান এর নেতৃত্বে বাংলাদেশে যেভাবে নতুন সূর্য উদিত হয়েছিল, নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছিল, ঠিক একই ভাবে জনাব তারেক রহমান সাতই নভেম্বর ও পাঁচই আগষ্টের চেতনায় জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার মাধ্যমে জনগণের কাংখিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও বাংলাদেশকে সঠিক নেতৃত্ব প্রদান করে ইতিহাসের মহানায়কের ভূমিকায় অধিষ্ঠিত হবেন- জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে সকলের প্রত্যাশা ও আকাংখা বোধ করি এখানেই।
লেখক : প্রফেসর এম ফরিদ উদ্দিন
সাবেক সহ-সভাপতি, যুক্তরাজ্য বিএনপি।

0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়