Tuesday, May 7

দুই পা ছাড়াই ফের হাঁটছে ‘তৈমুর’

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:

এমন ভালোবাসা সত্যিই বিরল। যে কোনো প্রাণীকে ভালোবেসে যে কিছু করা যায়, প্রসেনজিৎ খুব ভালোভাবে শিখিয়ে দিয়েছেন। তিনি ট্রেনের নিচে পড়ে পেছনের দু’টি পা চলে যাওয়া ছোট্ট কুকুরছানাকে বাঁচিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ওয়াকিং ট্রলির মাধ্যমে ‘তৈমুর’ নামক কুকুরটিকে হাঁটার নতুন সুযোগও করে দিয়েছেন।

ভারতের ইছাপুর স্টেশনের কাছে গত ৭ জানুয়ারি ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে কুকুরটি। তখন তার মাত্র দেড় মাস। উদ্ধারকারীরা খবর দেন শ্যামনগরের বাসিন্দা প্রসেনজিৎ গোস্বামীকে। গত ৩৫ বছর ধরে ওই এলাকায় রাস্তায় পড়ে থাকা পশু-পাখিদের চিকিৎসা করে সুস্থ করে তোলাই তার নেশা। গুরুতর জখম তৈমুরকে বাঁচানোটাই তখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় তার কাছে।
প্রসেনজিৎ নিজেই ওর পরিচর্যা করেন। তিনি বলেন, প্রথমে কুকুরটির অবস্থা দেখে আমার চক্ষু চড়কগাছ! ব্যারাকপুর হাসপাতাল ওর পায়ে চট সেলাই করার মতো করে সেলাই করেই ছেড়ে দিয়েছিল। পায়ের কিছু হাড়ের অংশ বাইরে বেরিয়ে ছিল। তাকে ভালো করাটা বেশ ঝুঁকির ছিল,। তারপরও চিকিৎসা করেছি, কারণ না হলে ওকে বাঁচানো যেত না।
প্রসেনজিৎ বলেন, এক জায়গায় কুঁইকুঁই করে কাঁদত ছোট্ট কুকুর ছানাটি। এখন খুশিমতো হেঁটে বেড়াচ্ছে, এটা যে কী তৃপ্তি বলে বোঝানো যাবে না। প্রতি ছ’মাস অন্তর তার আকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই ট্রলির মাপ বদল করে দেয়া হবে।
তৈমুরকে সুস্থ করতে চিকিৎসায় খামতি থাকেনি। কিন্তু শুধু সেখানেই থেমে থাকেননি ৫১ বছর বয়সী প্রসেনজিৎ। তৈমুরের শরিরের দৈর্ঘ্য, ওজন সব কিছু দেখে কাঠ, অ্যালুমিনিয়াম শিট, বেল্ট, প্লাইউড দিয়ে নিজেই বানিয়ে ফেলেন আস্ত ওয়াকিং ট্রলি! পেছনের পা দু’টি যাতে মাটিতে ঘষে না যায়, সে জন্য পা রাখার ব্যাগও রাখেন তাতে। দুর্ঘটনার ঠিক তিন মাস ২২ দিনের মাথায়, গত বুধবার ওই ওয়াকিং ট্রলি উপহার পায় তৈমুর।
প্রসেনজিতের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন নেটিজেনদের একাংশ। ফেসবুকে একটি গ্রুপে ‘তৈমুরের’ ট্রলি সংক্রান্ত পোস্ট এরই মধ্যে ভাইরাল হয়েছে। তবে ভ্রূক্ষেপ নেই ছোট্ট তৈমুরের। নতুন ঠিকানার চৌহদ্দিতে ওয়াকিং ট্রলি নিয়ে খোশমেজাজে হেঁটে বেড়াচ্ছে সে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়