Thursday, July 6

'কখনো জেনে শুনে ও বুঝে ভুল বিচার করিনি'

'কখনো জেনে শুনে ও বুঝে ভুল বিচার করিনি'

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা তার বিদায়ী বক্তৃতায় বলেছেন, জেনে শুনে ভুল বিচার করলে তা হবে মহাপাপ।

দেশের নিম্ন ও সর্বোচ্চ আদালতে প্রথম নারী বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার অবসর যাওয়ায পূর্বে তার শেষ কর্মদিবসে এটর্নি জেনারেল কার্যালয় ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির দেয়া সংবর্ধনার জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

আজ বৃহস্পতিবার তার ছিলো তার শেষ কর্মদিবস। কাল ৭ জুলাই শুক্রবার তার বয়স ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকদের অবসরের বয়সসীমা অনুযায়ি তিনি অবসরে যাবেন।

দেশের প্রথম নারী এ বিচারপতি বলেন, আইনজীবীদের সহায়তা ছাড়া বিচারকদের সঠিক বিচার করা কঠিন হয়ে যায়। বিচারক হিসেবে আমার যা অর্জন তা আইনজীবীদের কাছ থেকে। দেশের প্রথম নারী বিচারক হিসেবে যদি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হতাম, তাহলে আজ দেশে চারশো নারী বিচারক তৈরি হতো না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, আল্লাহ আমাকে বিচারক বানিয়েছেন, তা না হলে আমার বিচারক হওয়া সম্ভব হতো না। আমি কখনো জেনে শুনে ও বুঝে ভুল বিচার করিনি। সব সময় সততা নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সঙ্গে বিচার কাজ সম্পন্ন করেছি।

শেষ কর্মদিবসে বিদায়ী বক্তৃতায় বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা তার দীর্ঘ ৪২ বছরের বিচারিক জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

আজ আপিল বিভাগের ১ নম্বর বিচার কক্ষে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতিগণ, সিনিয়র আইনজীবীসহ সুপ্রিমকোর্টের কয়েকশত আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।

এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা তার প্রজ্ঞা, মেধা ও সততা দিয়ে বিচার বিভাগকে সমৃদ্ধ করেছেন। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় তার প্রচেষ্ঠা অব্যাহত ছিলো।

সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট জয়নুল আবেদিন বলেন, বিচার কাজে দক্ষ, সৎ ও ন্যায়পরায়ণ বিচারক হিসেবে তিনি সুনাম অর্জন করেছেন। বিচারবিভাগে তার অবদান দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা ১৯৭৫ সালের ২০ ডিসেম্বর মুন্সেফ হিসেবে (সহকারী জজ) নিয়োগ পান। ওই নিয়োগের মধ্য দিয়েই তিনি দেশের প্রথম নারী বিচারক হিসেবে বিচার বিভাগে যোগদান করেন।

পদোন্নতি পেয়ে ১৯৯০ সালের ২০ ডিসেম্বর হন জেলা জজ। জেলা জজ হিসেবে যোগ্যতা ও দক্ষতার পরিচয় দিয়ে তিনি ২০০০ সালের ২৮ মে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এর দুই বছর পর ২০০২ সালের ২৮ মে তাকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।

২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগেও দেশের প্রথম নারী বিচাপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় তাকে। দীর্ঘ প্রায় ছয় বছর আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর কাল শুক্রবার থেকে তিনি অবসরে যাচ্ছেন।

বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার স্বামীর নাম কাজী নুরুল হক। দুই ছেলে সন্তানের মা তিনি। বড় ছেলে কাজী সানাউল হক উপল আর ছোট ছেলে এহসানুল হক সূর্য। কাজী সানাউল হক উপল থাকেন অস্ট্রেলিয়ায়।
সূত্র: বিডি লাইভ।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়