Monday, December 8

ইসলামে পতাকার মর্যাদা


আমিন ইকবাল: বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয় আমাদের বাংলাদেশ। ৩০ লাখ শহীদের তাজা রক্তের বিনিময়ে মুক্ত হয় এ দেশের মাটি ও মানুষ। একাত্তরে আমাদের দেশের জন্ম। জন্ম একটি পতাকা ও স্বতন্ত্র মানচিত্রের। আমরা যারা তরুণ, তারা একাত্তর দেখিনি। দেখিনি প্রিয় মাতৃভূমির জন্মও। তবে পতাকা দেখেছি। রক্তে কেনা লাল-সবুজের পতপতে পতাকা। আমরা দেশকে ভালোবাসি। ভালোবাসি দেশের মাটি ও মানুষকে। দেশের সার্বভৌমত্বকে। লাল-সবুজের পতাকাকে। আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি সেইসব শহীদ ভাইদের-একাত্তরে যাদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল সবুজ বাংলার পথঘাট। যারা জীবন দিয়েছেন একটি দেশের জন্য। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের একটি স্বতন্ত্র মানচিত্রের জন্য। একটি স্বাধীন পতাকার জন্য। লাল-সবুজের পতাকা আমাদের অহঙ্কার। আমাদের গর্ব। পতাকার গাঢ় সবুজ রঙ বাংলার সবুজ-শ্যামল প্রকৃতির রূপকে প্রকাশ করে। রক্তের মতো লাল রঙ লাখো মানুষের শহীদ হওয়ার সাক্ষ্য বহন করে। পতাকা স্বাধীন জাতিসত্ত্বা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। স্বাধীনভাবে ওড়ে লাল-সবুজের পতপতে পতাকা। আমার দেশের পতাকা যেন সবুজ নীলিমায় শহিদি খুনের শৈল্পিক অাঁচড়। বিশ্ব শান্তির দূত রাসূল (সা.) পতাকা ভালোবাসতেন। সাহাবিরা পতাকার প্রতি সম্মান দেখাতেন। সাহাবায়ে কেরাম ইসলামের পতাকার জন্য যুদ্ধ করেছেন। মুক্তির সংগ্রাম করেছেন। তখন মুতার যুদ্ধ। শত্রুসৈন্যের তোপের মুখে সাহাবায়ে কেরাম। আঘাতে আঘাতে খান খান হয়ে যাচ্ছেন অনেক সাহাবি (রা.)। কিন্তু পতাকা হাতে অনড় সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (রা.)। একসময় প্রতিপক্ষের তলোয়ারের আঘাত লাগে তার ডান হাতে। প্রচন্প আঘাতে কেটে পড়ে পতাকাবাহী হাত। সাহাবি পতাকা ছাড়েননি। হাত বদল করে বাম হাতে পতাকা উড়ান। আঘাত আসে বাম হাতেও। সত্যের বিজয়ী পতাকা তখনও উড়ছে। এবার পতাকা উড়ছে আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহার কনুই-পেটে। ক্রমেই বাড়ছে যুদ্ধের ভয়াবহতা। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ। একসময় দুটি হাতই কাটা পড়ে। এবার সাহাবি পতাকা মুখে নিলেন। পতাকা উড়ছে সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহার মুখে। তবুও পতাকা ছাড়েননি। পতাকার প্রতি তার এ ভালোবাসা আমাদের প্রেরণার সোপান। আমরা আমাদের জাতীয় পতাকাকে ভালোবাসি। ভালোবাসি দেশের মাটি ও মানুষকে। আমাদের পতাকার সম্মান আমরাই ধরে রাখব। পতাকার গায়ে কোনো অাঁচড় লাগতে দেব না। একাত্তরে যে পতাকার জন্য বাংলা মায়ের সন্তানরা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন, সে পতাকা ধরে রাখতে হবে আমাদেরই অস্তিত্বের প্রয়োজনে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়