Thursday, October 24

সংসদে পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ বিলটি পাস

ঢাকা : পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় বিধান করে আজ সংসদে পিতা-মাতা ভরণ-পোষণ বিল-২০১৩ নামে বেসরকারি বিল সংশোধিত আকারে পাস হয়েছে।

এছাড়া সংসদে আজ নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ বিল-২০১৩ নামে অপর আরেকটি বেসরকারি বিল পাস হয়েছে।
বিল দু’টি পাসের প্রস্তাব করেন যথাক্রমে জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ মুজিবুল হক ও আওয়ামী লীগের সাবের হোসেন চৌধুরী।
প্রথম বিলে প্রত্যেক সন্তানকে তার পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ করার বিধান করা হয়েছে। কোন পিতা-মাতার একাধিক সন্তান থাকলে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে তাদের পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ নিশ্চিত করবে। এজন্য প্রত্যেক সন্তানকে পিতা-মাতার সাথে একই স্থানে বসবাস নিশ্চিত করতে হবে।
বিলে বলা হয়, কোন সন্তান তার পিতা বা মাতাকে অথবা উভয়কে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন বৃদ্ধ নিবাস বা অন্য কোন জায়গায় একত্রে কিংবা আলাদাভাবে বসবাসে বাধ্য করতে পারবে না বলে বিধান করা হয়। প্রত্যেক সন্তান তার পিতা এবং মাতার স্বাস্থ্য সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ-খবর ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা ও পরিচর্যা করবে। পিতা বা মাতা কিংবা উভয়, সন্তান থেকে পৃথকভাবে বসবাস করলে প্রত্যেক সন্তান নিয়মিতভাবে তাদের সাথে সাক্ষাৎ করবে। পিতা-মাতা সন্তানদের সাথে বসবাস না করলে প্রত্যেক সন্তান তার দৈনন্দিন বা মাসিক অথবা বাৎসরিক আয়ের কমপক্ষে ১০ ভাগ পিতা-মাতাকে নিয়মিতভাবে প্রদান করতে হবে।
বিলে পিতা-মাতার অবর্তমানে দাদা-দাদি, নানা-নানির ভরণ-পোষণ করার বিধান করা হয়েছে।
বিলে পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ না করলে তা অপরাধ বলে গণ্য করে অনূর্ধ্ব ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে অনূর্ধ্ব ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদানের বিধান করা হয়েছে।
বিলে কোন সন্তানের স্ত্রী বা ক্ষেত্রমতে স্বামী কিংবা পুত্র কন্যা অথবা অন্য কোন নিকটাত্মীয় ব্যক্তির ভরণ-পোষণে বাধা প্রদান করলে, অসহযোগিতা করলে অপরাধ বলে গণ্য করে একই দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান করা হয়েছে।
বিলে এ ধরনের অপরাধ প্রথম শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচার করার বিধান করা হয়েছে।
বিলে এ ধরনের অপরাধ আমলযোগ্য, জামিনযোগ্য ও আপোসযোগ্য বলে বিধান করা হয়েছে।
এ বিলের ওপর জাতীয় পার্টির হাফিজ উদ্দীন আহমেদ ৫টি সংশোধনী আনলে তা গ্রহণ করা হয়্
দ্বিতীয় বিলে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ ও রোধে প্রয়োজনীয় বিধান করা হয়েছে। বিধানে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি যদি কোন আদালতের সামনে অভিযোগ করে যে, তাকে নির্যাতন করা হয়েছে, তাহলে আদালত তাৎক্ষণিকভাবে ওই ব্যক্তির বিবৃতি লিপিবদ্ধ করবেন, একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসক দিয়ে পরীক্ষার আদেশ দিবেন, চিকিৎসক অভিযোগকারী ব্যক্তি যখন কোন নির্যাতনের সম্ভাব্য সময় উল্লেখ করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার একটি রিপোর্ট তৈরি করে আদালতে পেশ করবেন। এ ক্ষেত্রে আদালত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করার নির্দেশও দিতে পারেন।
বিলে নির্যাতন প্রমাণিত হলে আদালত মামলা দায়েরের নির্দেশ এবং তদন্তেরও নির্দেশ দিবেন। বিলে এ ধরনের অভিযোগের শুধু মাত্র দায়রা জজ আদালতে অনুষ্ঠিত করার বিধান করা হয়েছে। বিলে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপীলেরও বিধান করা হয়েছে।
বিলে এ ধরনের অভিযোগে অপরাধ প্রমাণিত হলে দোষী ব্যক্তিকে অন্যুন ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান করা হয়েছে।
এছাড়া এর অতিরিক্ত ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিগ্রস্ত, সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি অথবা ব্যক্তিদেরকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রদান করবেন।
জাতীয় পার্টি মো. মুজিবুল হক এ বিলের ওপর চারটি সংশোধনী আনলে তিনটি সংশোধনী গ্রহণ করা হয়।
সংসদে আজ সরকারি প্রতিশ্র“তি সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির দ্বিতীয়, সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চতুর্থ এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির দ্বিতীয় রিপোর্ট উপস্থাপন করা হয়। রিপোর্ট তিনটি পৃথকভাবে উপস্থাপন করেন তিন কমিটির সভাপতি যথাক্রমে অধ্যাপক আলী আশরাফ, এমএ মান্নান ও মো.আব্দুস সাত্তার।---ডিনিউজ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়