Tuesday, August 29

দালালের খপ্পরে নিঃস্ব কানাইঘাটের যুবক


নিজস্ব প্রতিবেদক :

সিলেটের কানাইঘাটে ফ্রান্সে পাঠানোর কথা বলে এক যুবককে দুবাই পরবর্তী আফ্রিকার দেশ মালিতে পাঠিয়ে সংঘবদ্ধ দালাল চক্র নির্যাতনের মাধ্যমে ১৭ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর মালি থেকে প্রতারিত যুবককে দেশে পাঠানোর ঘটনায় মানব পাচার ট্রাইব্যুানালে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সোমবার মামলার বাদী এনামুল হাসান বলেন, জমানো টাকা ও জমিজমা বিক্রি করে ফ্রান্সে যাওয়ার জন্য তার পরিবার মামলার আসামী এবং তাদের মানবপাচারকারী চক্রকে ১৭ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। কিন্তু এ চক্রটি আমাকে ফ্রান্সে না পাঠিয়ে দুবাই হয়ে মালিতে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে বন্দী করে রেখেছিল। এতে আমার স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে যায়। তার মতো আর যেনো কেউ এভাবে প্রতারনা স্বীকার না হন এজন্য মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানান।

উল্লেখ্য, গত ১৯ জুন প্রতারিত যুবক কানাইঘাট উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের ভাটিবারাপৈত গ্রামের শরিফ উদ্দিনের পুত্র এনামুল হাসান (৩০) বাদী হয়ে পাশর্^বর্তী দিঘীরপাড় ইউপির শাহপুর গ্রামের নুর উদ্দিনের পুত্র হুসাইন আহমদ, দর্পনগর পুর্ব গ্রামের মৃত ফজই মিয়ার পুত্র বেলাল আহমদের নাম উল্লেখ করে আরো ৪/৫ জনকে আসামী করে সিলেটের মানব পাচার ট্রাইব্যুানাল আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মানব পাচার মামলা নং- ২৬/২০২৩ এর দরখাস্ত মামলাটি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সিলেটের পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

মামলাটি পিবিআই এর এস.আই মোঃ শাহ্ ফজলে আজিম পাটোয়ারী তদন্ত করছেন বলে মামলার বাদী এনামুল হাসান জানিয়েছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে এনামুল হাসানকে ফ্রান্সে পাঠানোর জন্য গত ০৫/০৫/২০১৯ইং তারিখে এনামুল হাসানের মা ইসলামী ব্যাংক কানাইঘাট শাখার মাধ্যমে মামলার আসামী হুসাইন আহমদকে ১০ লক্ষ টাকার চেক প্রদান করেন এবং ব্যাংক থেকে হুসাইন আহমদ টাকা উত্তোলন করেন এবং নগদ আরো ৩ লক্ষ টাকা হুসাইন আহমদকে প্রদান করা হয়। ১৩ লক্ষ টাকা প্রদানের পর মামলার আসামীরা ফ্রান্সে পাঠানোর নাম করে এনামুল হাসানকে দুবাইতে পাঠান। দুবাইতে ৭দিন থাকার পর মানসিক নির্যাতন করে ফ্রান্সে পাঠানোর কথা বলে এনামুল হাসানকে আফ্রিকার দেশ মালিতে দালাল চক্র পাঠায়।

মালিতে নিয়ে যাওয়ার পর দালাল চক্র টাকার জন্য এনামুল হাসানের উপর নির্যাতন শুরু করলে দেশ থেকে তার পরিবার দুই দফায় আরো ৪ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দালাল চক্রদের কাছে পাঠান। মালিতে প্রায় ৫ মাস বন্দী রেখে দালাল চক্র অমানসিক নির্যাতন করার পর ২০১৯ সালের ৩ অক্টোবর মানব পাচারকারী দালাল চক্রটি এনামুল হাসানকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। দেশে আসার পর এনামুল হাসান ও তার পরিবারের লোকজন ফ্রান্সে পাঠানোর নামে মানব পাচারকারী দালাল চক্রের মাধ্যমে সর্বমোট ১৭ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলার আসামী হুসাইন আহমদ ও বেলাল আহমদের নিকট ফেরত চান। কিন্তু তারা দীর্ঘদিন সময় অতিবাহিত করে টাকা ফেরত না দেওয়ায় এনামুল হাসান বাদী হয়ে মানব পাচার ট্রাইব্যুানালে এ মামলা দায়ের করেন।



শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়