Tuesday, January 1

শপথ নিয়ে পদত্যাগ করতে পারেন ঐক্যফ্রন্টের বিজয়ী প্রার্থীরা

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মাত্র ৫ জন প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। যেখানে ক্ষমতাসীনদের সাথে জোটে থেকেও নিজেদের দলীয় প্রতীক (লাঙ্গল) নিয়ে জাতীয় পার্টির (জাপা) ২২ জন প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। ফলে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের মর্যাদাও পাচ্ছে না বিএনপি। এ নিয়ে ফ্রন্টের বৈঠকেও বিস্তর আলোচনা হয়েছে।
গতকাল সোমবার থেকে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত কয়েক দফায় নির্বাচন পরবর্তী নানা বিষয়ে ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের মধ্যে আলোচনা হয়।
অনেকে মত দিয়েছেন, একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ৭ প্রার্থী জাতীয় সংসদে যোগ না দিলেও তারা শপথ গ্রহণ করবেন। রাষ্ট্রপতির আহবানকে সম্মান জানাবেন।
শপথ বিষয়ে গণফোরামের এক নেতা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ঐক্যফ্রন্টের প্রধান ড. কামাল হোসেন বিজয়ী প্রার্থীদের শপথ গ্রহণের পক্ষে। শপথ গ্রহণের পর তারা নির্বাচনে অনিয়মের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করবেন।
তবে শপথ না নেওয়ার পক্ষে বিএনপি। কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দ্রুততম সময়ে নির্বাচনের দাবিতে আমরা মাঠে নামবো। এই নির্বাচনে যারা বিজয়ী হয়েছেন, তাদের এই শপথ নেওয়ার কোনও কারণ নেই।’
এ বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'আমরা তো ভোটের পুরো ফলাফলই প্রত্যাখ্যান করেছি'। আর কিছু স্পষ্ট করেননি তিনি।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির পাঁচ জন দলীয় প্রার্থী বিজয়ী হন। এছাড়া, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন গণফোরামের দুই প্রার্থী।
যেসব আসনে জয় পেয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট:
ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের মধ্যে বগুড়া-৬ (সদর) আসনে বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২ লাখ ৭ হাজার ২৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমর পেয়েছেন ৪০ হাজার ৩৬২ ভোট।
এ আসনে বিএনপির মূল প্রার্থী ছিলেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি দুর্নীতি মামলায় সাজা নিয়ে কারাগারে থাকায় বিকল্প প্রার্থী হয়েছিলেন ফখরুল।
ফখরুলের ধানের শীষ বগুড়ায় জয় পেলেও তার নিজের এলাকা ঠাকুরগাঁও-১ আসনে নৌকার কাছে হেরে গেছে। ওই আসনে প্রায় এক লাখ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের রমেশ চন্দ্র সেন।
বগুড়া-৪ আসনে বিজয়ী বিএনপির প্রার্থী মোশারফ হোসেন ধানের শীষে পেয়েছেন ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫৮৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাসদের রেজাউল করিম তানসেন নৌকা মার্কায় ৮৬ হাজার ৪৮ ভোট পেয়েছেন।
ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী জাহিদুর রহমান ৮৭ হাজার ১৬৫ ভোট পেয়ে হারিয়েছেন স্বতন্ত্র হিসেবে মোটরগাড়ি প্রতীকে নির্বাচন করা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ইমদাদুল হককে। ইমদাদুল পেয়েছেন ৮৪ হাজার ১০৯ ভোট।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে ধানের বিএনপির আমিনুল ইসলাম ১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৬৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী জিয়াউর রহমান পেয়েছেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ৯৫২ ভোট।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির হারুনুর রশিদ জয়ী হয়েছেন বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের আবদুল ওদুদকে হারিয়ে। হারুনের ধানের শীষে পড়েছে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৬১ ভোট; অন্যদিকে নৌকায় ওদুদ পেয়েছেন ৮৫ হাজার ৯৩৮ ভোট।
মৌলভীবাজার-২ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ধানের শীষ প্রতীকে ৭৯ হাজার ৭৪২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। নৌকা প্রতীকে বিকল্প ধারার এম এম শাহীন পেয়েছেন ৭৭ হাজার ১৭০ ভোট।
সিলেট-২ আসনে গণফোরামের মুকাব্বির খান দলীয় প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে জয়ী হয়েছেন ৬৯ হাজার ৪২০ ভোট পেয়ে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ডাব প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান ৩০ হাজার ৪৪৯ ভোট পেয়েছেন ।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়