Wednesday, June 14

ঈদে কিশোরীদের ফ্যাশন

ঈদে কিশোরীদের ফ্যাশন

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: রাগ, হাসি আনন্দ, অভিমান, বোঝা না-বোঝার মধ্যে দিয়েই পার হয় কৈশোর। এই বয়সের মজার দিক হলো নিজেকে সাজানোর ক্ষেত্রে কোনো কার্পণ্য থাকে না। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, কিশোরীদের বেশি সাজার প্রয়োজন নেই। এই বয়সের সহজাত সৌন্দর্যই অন্য সবকিছুকে ম্লান করে দেয়। তবে ঈদ বলে কথা।

উৎসবের পোশাক ও সাজে কিছুটা যোগ-বিয়োগ চলতেই থাকবে। উৎসবের সময় কিশোরীদের কৌতূহলও থাকে দেখার মতো। বাজারে কোন পোশাকটি এসেছে, স্টাইল কী, সাজের ধারা এবার কোনদিকে ইত্যাদি সব বিষয়ে খোঁজখবর নিতে থাকে তারাই বেশি।

আন্তর্জাতিক ফ্যাশনে যে ধারা চলছে এখন, কিশোরীদের পোশাকে এবার সেই ধারার ঝলকও কিছুটা দেখা যাবে। দেশীয় সংস্কৃতির সঙ্গে যায়, এমন পোশাক কিশোরীরা বেছে নিচ্ছে। তবে পরার সময় স্টাইলিংটায় ভিন্নতা নিয়ে আসবে। বিষয়টা চিন্তা করলে এক অর্থে মজারই। দেশি পোশাক পরার সময় বিদেশি স্টাইল কিছুটা হলেও অনুসরণ করা হবে।

একটির ওপর আরেকটি পোশাক পরার চল এবার বেশ চোখে পড়ছে। ইংরেজিতে বলা হচ্ছে বডি লেয়ারিং। গরম থাকলেও এই চলটি এবার বেশ জনপ্রিয়। কিশোরীদের পোশাকেও দেখা যাবে এই ধারা। কামিজ, গাউন, টপের ওপর শ্রাগ, কেপ, কটি, জ্যাকেট, কিমোনো ইত্যাদি পরা হচ্ছে।

তবে স্তরে স্তরে থাকবে বলে যে কাপড়ের স্তূপের তলায় ডুবে যেতে হবে, এমনটি নয়। বরং স্টাইলটি হতে হবে সহজ ও স্মার্ট। ঢোলা সালোয়ারের সঙ্গে ক্রপ টপ বা ট্যাং টপের ওপর লম্বা বা ছোট মাপের কটি চাপিয়ে নিলেই হবে। কটিটি হাতাছাড়া হলেই ভালো। এতে জবরজং কম লাগবে। লেয়ারিং করার সময় যেকোনো একটি পোশাকে বেশি নকশা রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

লেয়ারিংয়ের ধারাটি একসঙ্গে সেলাই করা অবস্থাতেও পাওয়া যাচ্ছে। কামিজ বা টপের সামনের দিকে দুটি অংশ থাকছে। ভেতরের কাপড়টা তুলনামূলক ছোট। ওপরের অংশ কিছুটা লম্বা এবং ওপরের দিকে আটকানো, এরপর নিচ পর্যন্ত পুরোটা খোলা।

ঢোলা সালোয়ার, হারেম প্যান্ট, পালাজ্জো এবার ঈদে বেশ দেখা যাচ্ছে। পালাজ্জো বানাতে কাপড়ের পর কাপড় ব্যবহার করা হচ্ছে। ভাবটা এমনই, কারটায় কত বেশি ঘের আছে, দেখা যাক। তবে কিশোরীরা পালাজ্জো পরতে চাইলে কিছুটা সতর্ক থেকেই পরতে হবে। কারণ এত ঘের অনেকে না-ও সামলাতে পারে। আবার স্ট্রেইট প্যান্টও বেশ চলছে।

কিছু কিছু জায়গায় দেখা গেল বেলবটম স্টাইলেও প্যান্ট করা হয়েছে। হাঁটুর একটু নিচ পর্যন্ত চাপা কাটের হয়ে এরপর হঠাৎ করে ফ্রিল বা ঘের দেওয়া। সিল্ক, শিফন, জর্জেটের শার্ট, লম্বা কুর্তার সঙ্গে ভালো যাবে। পালাজ্জো, সালোয়ার অথবা স্ট্রেইট প্যান্টে লেস ব্যবহার করা হচ্ছে। সালোয়ারে বা প্যান্টে পকেটের ব্যবহার হচ্ছে। আছে স্কার্টও। প্যান্ট একটু উঁচু করেই পরা হচ্ছে বর্তমানের ফ্যাশান।

পোশাকের কাটে যেটা বেশি চোখে পড়ছে, তাহলো উঁচু-নিচু কাট। ক্রেতারাও সেটা এতক্ষণে বুঝে ফেলেছেন। হেমলাইনে উঁচু-নিচু কাট এবার থাকবে। এই নকশায় করা টপ বা কামিজগুলো আলাদাভাবে বিক্রি করা হচ্ছে। ক্রেতারা নিজেদের পছন্দমতো নিচের অংশটা কিনে নিচ্ছেন। এটা নিয়ে কিশোরীদের জন্য কিছু পরামর্শ—

# ওপরের অংশটি ঢোলা থাকলে নিচের অংশটি চাপা থাক।

# নিচের অংশটি হারেম প্যান্ট বা ঢোল সালোয়ার থাকলে ওপরে একটু ফিটিং করা টপ থাকতে পারে।

# পোশাকের হাতা অফ শোল্ডার, কোল্ড শোল্ডার, স্প্যাগেটি স্ট্র্যাপ, হাতাকাটা, ফুল হাতা ইত্যাদি কাটে করা হচ্ছে। হাতায় নতুনত্ব নিয়ে এসেছে এবার কোল্ড শোল্ডার ও কাসকেড ঝালর।

এবার কিশোরীদের পোশাকে বিভিন্ন ধরনের ছাপা নকশা বেশ নজরে পড়ছে। ফুল, পশু-পাখি, মানুষের মুখ, স্থাপত্য, জ্যামিতিক নকশা দিয়ে যেন একেকটা গল্প বানানো হয়েছে। লা রিভের প্রধান ডিজাইনার মুন্নুজান নার্গিস জানান, উজ্জ্বল রং বেশ ব্যবহার করা হচ্ছে এবার।

সাদা-কালোর মধ্যে নিয়ন রঙের ছটা ভিন্নতা নিয়ে আসছে। তবে উজ্জ্বল রঙের পাশাপাশি হালকা রংও চোখ পড়ছে। এর বাইরে হাতের কারুকাজ তো আছেই। যে পোশাকই পরা হোক, গরমের কথাটা মাথায় রাখা উচিত।

কিশোরী বয়সে যতটুকু মানায় ঠিক ততটুকুই মেকআপ করা ভালো। চুলের সাজে বরং কিছু কেরামতি করা যেতে পারে। ঈদের আনন্দ আর উৎসবে তো মেতে উঠতে হবে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়