Monday, November 14

বদলে যাবে সব, যদি তারা উল্টে যায়....

বদলে যাবে সব, যদি তারা উল্টে যায়....

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন দেশটির ভোটাররা। তারা ভাবছেন, ডেমোক্রেটিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে প্রেসিডেন্ট পদটি কেড়ে নেয়া হয়েছে। তারা ভোটের ফলাফল পরিবর্তনের জন্য বিক্ষোভ করছেন। নিউইয়র্ক থেকে আটলান্টা, সান ডিয়োগোতে হাজার হাজার মার্কিন নাগরিক রাস্তায় বিক্ষোভ করছে। একটাই দাবি, ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে দেখতে চান না তারা।

তাদের প্রধান মনোযোগ হলো, যুক্তরাষ্ট্রের ইলেকটোরাল কলেজের সদস্যদেরকে তাদের ভোট পরিবর্তন করতে প্ররোচিত করা। তাদের দাবি, হিলারি ক্লিনটনকেই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট বানাতে হবে। কারণ ৬০.৪৭ শতাংশ আমেরিকানই হিলারিকে ভোট দিয়েছেন।

সিএনএন জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের দাবি, জয়ী ইলেক্টোরাল কলেজের সদস্যরা যেন ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিক ভোট না দেন। গত ৯ নভেম্বর জয়ী ইলেক্টোরাল কলেজ আগামী ১৯ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট দেবে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের। আর যেহেতু সেখানে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ২৯০টি ইলেক্টোরাল কলেজ আর ডেমোক্র্যাট হিলারি পেয়েছেন ২২৮টি ইলেক্টোরাল কলেজ। জয়ের জন্য প্রয়োজন ২৭০টি ইলেক্টোরাল কলেজ।

বিক্ষোভকারীরা জয়ী ইলেক্টোরাল কলেজদের প্রতি একটি লিখিত আবেদন রেখেছে। এ ব্যাপারে স্বাক্ষরও সংগ্রহ করছে তারা।

আবেদনে বলা হয়, ‘সদ্য জয়ী ইলেক্টোরাল কলেজ আগামী ১৯ ডিসেম্বর নিজেদের ভোট দেবে। যদি তারা ৯ নভেম্বরের মতো ভোট দেয়, তবে ট্রাম্পই জয়ী হবেন। তারা চাইলে হিলারি ক্লিনটনকে ভোট দিতে পারেন। যদিও অনেক অঙ্গরাজ্যে তা অনুমোদিত নয়। তবে তাদের ভোটটি আমলে নেয়া হবে বিনিময়ে ছোট্ট একটা জরিমানা দিতে হবে। আর আমরা নিশ্চিত করতে চাই, হিলারির সমর্থকরা ওই জরিমানার অর্থ দিতে হাসিমুখে রাজি আছে।’

আবেদনে আরো বলা হয়েছে, ‘আমরা ইলেকটরদের বলতে চাই, স্টেটের ভোট বাদ দিন। ভোটটা হিলারিকে দিন। সরকার বলছে ট্রাম্প জয়ী হয়েছে। না, আমাদের সংবিধান বলছে ইলেকটররা নির্বাচিত হয়েছে।’

আবেদনে এর পক্ষে যুক্তি দেখানো হয়। বলা হয়, 'হিলারি পপুলার ভোটে জয়ী হয়েছেন। ট্রাম্পকে ‘জয়ী’ বলা হচ্ছে, একমাত্র ইলেক্টোরাল কলেজের কারণে। কিন্তু ইলেক্টোরাল কলেজ হোয়াইট হাউসে অন্য প্রার্থীকে পাঠাতে পারে। তবে কেন গণতান্ত্রিক ফল নিশ্চিত করতে তা না করা?”

স্নোপস ডট কম জানিয়েছে, মার্কিন সংবিধানে ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতিটি যুক্ত হয় ১৭৮৭ সালে। এর আগে বিষয়টি নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন মার্কিন রাজনীতিবিদরা। একদল চাইতেন সরাসরি ভোটে যেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। অন্য পক্ষ এ ক্ষেত্রে সাধারণ ভোট চাইতেন না। বিষয়টিতে ভারসাম্য আনার জন্য ওই প্রথা চালু করা হয়।

নিজের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট দিলে তাকে বলা হয় ‘ফেইথলেস ইলেকটর।’ ইলেক্টোরাল প্রথা শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ১৫৬ জন ‘ফেইথলেস ইলেকটর’ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৭১ জন প্রেসিডেন্টকে ভোট দেওয়ার আগেই মারা যান। তিনজন ভোটদানে বিরত থাকেন। এবং ৮২ জন ব্যক্তিগতভাবেই অন্য প্রার্থীর পক্ষে মত দেন।

তবে বিক্ষোভকারীদের আবেদন কি পূরণ হওয়া সম্ভব? স্নোপস ডট কম জানিয়েছে, সাংবিধানিকভাবে সম্ভব। কিন্তু এতে প্রয়োজন মার্কিন নির্বাচনের রাজনৈতিক ঐতিহ্যের পরিবর্তন, যা মার্কিন ইতিহাসের জন্যই অভিনব।

তবে এর সম্ভাবনা সম্পর্কে স্নোপস ডট কম এক কথায় বলেছে, ‘এই প্রক্রিয়া অতিশয় অসম্ভব।’

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়