Wednesday, July 27

১৪ তলা ভবন হচ্ছে পাবলিক লাইব্রেরি

১৪ তলা ভবন হচ্ছে পাবলিক লাইব্রেরি

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: দুইশ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় জাদুঘরের মাঝখানে অবস্থিত কবি সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগার (প্রাক্তন সেন্ট্রাল পাবলিক লাইব্রেরি)। নতুন এ কর্মযজ্ঞের স্বার্থে আগামী বছর ভেঙে ফেলা হবে শাহবাগের ঐতিহ্যবাহী এ গ্রন্থাগারটি।

গণগ্রন্থাগারের ৩ দশমিক ০.২ একর জায়গার ওপর ১৪ তলাবিশিষ্ট একটি ভবন গড়ে উঠবে। বিশাল এ ভবন তৈরি হলে অত্যাধুনিক পাঠাগার স্থাপন সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইতোমধ্যে ভবন নির্মাণকাজের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলেজানিয়েছেন গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) আশীষ কুমার সরকার।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে কাজ শুরু হয়েছে। এখন ডিজাইন তৈরির কাজ চলছে। ডিজাইন তৈরির পর পরবর্তী ধাপসমূহ শেষে আশা করছি আগামী বছরের শুরু থেকে পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু করা যাবে।’

১৯৫৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গণগ্রন্থাগার স্থাপিত হয়। সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয় ১৯৫৮ সালের ২২ মার্চ। ১০ হাজার ৪০টি বই নিয়ে শুরু হওয়া জাতীয় গণগ্রন্থাগারে বর্তমানে ২ লাখের ওপরে বই আছে।

বই প্রসঙ্গে সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান বলেন, ‘জ্ঞানের যত শাখা-প্রশাখা আছে, লাইব্রেরিতে তত ধরনের বই রয়েছে।’

বর্তমানে যে ভবনটিতে গণগ্রন্থাগারটি অবস্থিত সেখানে গ্রন্থাগারের কাজ শুরু হয় ১৯৭৮ সালে। ৬ হাজার ৪৮০ বর্গফুট আয়তনের সাধারণ পাঠকক্ষে ২১৬টি আসন রয়েছে। বিজ্ঞানকক্ষের জায়গার পরিমাণও ৬ হাজার ৪৮০ বর্গফুট, আসন ২২০টি। আছে রেফারেন্স ও পত্র-পত্রিকা এবং শিশু-কিশোর পাঠকক্ষ, যার আয়তন ৪ হাজার ৬২৪ এবং ২ হাজার ৪০০ বর্গফুট। লাইব্রেরির প্রশাসনিক হিসাব মতে, প্রতিদিন আড়াই থেকে ৩ হাজার পাঠকের সমাগম ঘটে গণগ্রন্থাগারে।

বর্তমানে গণগ্রন্থাগারের ৩.০২ একর জায়গায় ৫২৫ আসনের একটি অডিটোরিয়াম (শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তন), ৮০ আসনের একটি সেমিনারকক্ষ, স্টাফ কোয়ার্টার একটি, একটি ক্যান্টিনসহ অন্যান্য সুবিধা রয়েছে।

স্থাপনাগুলো বর্তমানে আলাদা আলাদা থাকলেও নতুন ভবন নির্মাণের পর একই ছাদের নিচে নিয়ে আসা সম্ভব হবে। ১৪ তলা ভবনে সাধারণ পাঠাগার, বিজ্ঞান পাঠাগার, রেফারেন্স পাঠকক্ষ, বুক স্ট্যাক, পৃথক শিশু-কিশোর শাখার পাশাপাশি আরও কয়েকটি মিলনায়তন, ফুড কর্নারসহ পাঠপ্রেমকে আরও আনন্দদায়ক এবং মনোরম করতে অত্যাধুনিক সব ব্যবস্থা থাকবে।

নীতিনির্ধারকরা পরিকল্পনা প্রণয়ন করছেন, যা প্রক্রিয়াধীন। এ কারণে এ মুহূর্তে বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেননি গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা।

আশীষ কুমার সরকার বলেন, ‘একটি অত্যাধুনিক পাঠাগার বলতে যা বোঝায়, যে সব সুযোগ-সুবিধা থাকা দরকার, তার সবই থাকবে প্রকল্পাধীন লাইব্রেরিতে।’

বর্তমানে পাঠাগারে নানান সমস্যা রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম আসন সঙ্কট। দেখা যায়, দিনের অন্য সময়ের চেয়ে সকালে পাঠাগারে প্রবেশ করার জন্য পাঠপিপাসুদের লম্বা লাইন। বিশেষ করে পরীক্ষার আগে সে ভিড় বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

জিল্লুর রহমান মনে করেন, বহুতল ভবন নির্মাণ হলে এসব সঙ্কট আর থাকবে না। এখন অনেককেই ঢুকতে দেয়া যায় না। কারণ বসার জায়গা নেই। অতিরিক্ত পাঠকও প্রবেশ করানো যায় না ভবনটি অনেক পুরনো বলে।

‘একে তো পুরনো ভবন, তা ছাড়া বইসহ বিশাল র‌্যাক, তার ওপর পাঠকের ভার; সবমিলিয়ে অতিরিক্ত পাঠক প্রবেশ করতে দেয়া বিপজ্জনক।’ নতুন ভবন নির্মাণ হলে এসব সমস্যা থাকবে না বলে মনে করেন তিনি।

গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের অধীনে বর্তমানে সত্তরটি সরকারি গ্রন্থাগার রয়েছে। এর মধ্যে প্রতিটি জেলায় একটি করে ৬৪টি। দেওয়ানগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জে দুইটি। শাখা গ্রন্থাগার ৪টি, মোহাম্মদপুরে একটি (ঢাকা), আর্মিটোলায় একটি (ঢাকা), ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আরেকটি এবং অন্যটি সোনাদীঘিপাড় (রাজশাহী)।

এর মধ্যে ৪৭টি গণগ্রন্থাগার নিজস্ব ভবনে এবং ২৩টি ভাড়াবাড়িতে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়