আন্তর্জাতিক ডেস্ক,কানাইঘাট নিউজ:
ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিরা কয়েকদিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ইরাকি বাহিনীর কাছ থেকে দেশটির আনবার প্রদেশের রাজধানী রামাদি দখল করে নিয়েছে। আইএসবিরোধী অভিযান শুরুর পর গত রবিবার রামাদির পতন ছিল ইরাকি বাহিনীর জন্য অন্যতম বড় পরাজয়। সুন্নি অধ্যুষিত প্রদেশটিতে যে অবশিষ্ট দু-একটি শহর ইরাক সরকারের নিয়ন্ত্রণে ছিল তার মধ্যে একটি ছিল রামাদি। তবে শহরটি দ্রুতই পুনর্দখলের ব্যাপারে আশাবাদী যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে ইরাক সরকারের সহযোগিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে শিয়া আধাসামারিক বাহিনীর সদস্যরা সেখানে জড়ো হতে শুরু করেছে। ইরানও শিয়া মিলিশিয়াদের সহায়তা করছে। এ ঘটনায় ইরাকে ব্যাপক রক্তপাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাগদাদের মাত্র ৭০ কিলোমিটার পশ্চিমে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ওই নগরটিতে এখনও সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগন। গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া তিন দিনের সংঘর্ষে সেখানে অন্তত ৫০০ জন নিহত হয়েছেন। ইরাকি সরকারি বাহিনীর সেনা ঘাঁটি দখলে নিতে বেশ কয়েক দফা আত্মঘাতী গাড়িবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে ১৫ সেনাসদস্য নিহত হন। তা ছাড়া নিরাপত্তার অভাবে এরই মধ্যে অন্তত আট হাজার বাসিন্দা এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
তবে রামাদি পুনঃনিয়ন্ত্রণে বেশ আশাবাদী যুক্তরাষ্ট্র। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই রামাদি পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে বলে মনে করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। দক্ষিণ কোরিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে গত রবিবার আইএস ইন্টারনেট ফোরামে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানায়, এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর তারা ইরাকি শহর রামাদির দখল নিয়েছে। শহরটি দখলের পর পরই বিভিন্ন সরকারি ভবনে তারা তাদের কালো পতাকা উড়িয়ে দেয়। আইএসের এমন দাবির পর ইরাকি প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি ইরাকের বৃহত্তম আনবার প্রদেশের রাজধানী রামাদিতে অবস্থান ধরে রাখতে সরকারি বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি নগরী থেকে আইএস জঙ্গিদের বিতাড়িত করতে সরকারি সেনা, উপজাতীয় ও অন্যান্য স্থানীয় বাহিনীর সদস্যদের আহ্বান জানিয়েছেন। ইরাকি সরকারের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে শিয়া আধাসামরিক বাহিনীও শহরটি পুনর্দখলের লক্ষ্যে রামাদি অভিমুখে জড়ো হচ্ছে।
তবে গতকাল সোমবার শিয়া আধাসামরিক বদর বাহিনীর প্রধান হাদি আল আমেরি অভিযোগ করেন, আনবার প্রদেশের নেতাদের উচিত তাদের সহযোগিতা নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা। তিনি মনে করেন, আনবারের নেতারা সহযোগিতা না নেওয়ার কারণেই রামাদির পতন ঘটেছে। তবে প্রদেশটির বিভিন্ন সুন্নি গোষ্ঠী সরকারের হাতছাড়া হয়ে যাবে এ ভয়েই শিয়াদের রামাদিতে আইএসবিরোধী অভিযানে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। শহরটির পতনের পর ইরাকি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় হাশেদ আল শাবি গোষ্ঠীর আধাসামরিক বাহিনীকে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
অনেকগুলো আধাসামরিক বাহিনী আগে থেকেই আনবারে অবস্থান করছিল। বিশেষ করে ফাল্লুজা ও হাব্বানিয়াহ শহরের আশপাশে। আজ থেকে তারা রামাদি অভিমুখে এগোতে শুরু করেছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগনের মুখপাত্র এলিসা স্মিথ বলেন, ‘আমরা সবসময় জেনে আসছি, বিশেষত আনবারে যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী ও কঠিন হবে।’ তবে তিনি এও জানান যে, ইরাকি বাহিনীকে বিমান শক্তি ও পরামর্শ দিয়ে সাহায্য অব্যাহত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র।
খবর বিভাগঃ
দেশের বাইরে

0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়