তানিম আহমেদ
২৬ ডিসেম্বর বিকালের পর থেকে বাংলাদেশের কোটি মানুষের মনোযোগ ছিল রাজধানীর শাহজাহানপুরের একটি কূপে। সেখানে পড়ে গিয়েছিল ছোট্ট শিশু জিহাদ। জিহাদ কূপে আছে কি নেই সেই প্রশ্ন জাগেনি শুরুতে। কিন্তু শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর পরদিন ভোরে গর্তে আসলেই কোনো শিশু পড়েছে কি না তা নিয়ে সন্দেহের কথা জানায় ফায়ার সার্ভিস। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও বলেন, শিশু পড়ার বিষয়টি হতে পারে গুজব।
ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি পরদিন বেলা ১১টা থেকে কয়েকজন যুবক নিজেদের তৈরি লোহার ক্র্যাচার ও ক্যামেরা দিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে থাকেন। কিন্তু দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত মিলেনি না জিহাদের সন্ধান। দুপুর ২টা ৫৩ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে ফায়ার ব্রিগেডের ডিজি উদ্ধার কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেন। এমন ঘোষণার পাঁচ মিনিট পর ২টা ৫৮ মিনিটে সবাইকে তাক লাগিয়ে উদ্ধার হলো জিহাদ।
শিশু জিহাদের মৃত্যু বেশ কয়েকটি প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের দক্ষতা, পরিকল্পনা গ্রহণে ব্যর্থতার পাশাপাশি রেলওয়ের দায়িত্বজ্ঞান নিয়েও ওঠেছে প্রশ্ন। খোলা অবস্থায় এত বড় একটি কূপ ৩৫ বছর ধরে এভাবে কেন ফেলে রাখা হয়েছে তার জবাব মেলেনি আজও। জিহাদের মৃত্যুর পর এই কূপটি বন্ধ করা হলেও রেলওয়ে একই ধরনের কয়েকটি কূপ খুঁড়ছে নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করেই। এতে আবারও কোনো জিহাদ এতে পড়ে যায় কি না সে আশঙ্কা থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না ওয়াসা, যদিও তারা বলছে এসব কূপ বৈধ নয় মোটেও।
টনক নড়েনি রেলের
শাহজাহানপুরে দুর্ঘটনাস্থলের পাশেই কলোনিতে একাধিক গভীর নলকূপ বসানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে রেলওয়ে। নির্মাণ করা হয়নি কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী। ঢাকা ওয়াসা বলছে, রাজধানীর ভেতরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এসব পানির পাম্প তৈরি করছে অবৈধভাবে। ওয়াসা বলছে, অনুমোদন ছাড়া এসব পাম্প তৈরি করা, পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ আইনের পরিপন্থি।
রেলের আইন বলছে, নিজস্ব কলোনিতে পানি সরবরাহের দায়িত্ব তাদের। জিহাদের মৃত্যুর পর কালোতালিকাভুক্ত হয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং বরখাস্ত করা হয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত রেলের প্রকৌশলীকে। রেলের বিদায়ী মহাপরিচালক জিহাদের মৃত্যুর দায় স্বীকার করলেও এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
সরকারের বোধোদয়
জিহাদকে উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিসের ব্যর্থতা সংস্থাটির সক্ষমতা নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন তৈরি করেছে। এর আগেও রাজধানীতে র্যাংগস টাওয়ার ভাঙার সময় ধসের ঘটনা, এনটিভি ভবনে আগুন, রানা প্লাজা ধসের সময় ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা নিয়ে উঠে প্রশ্ন।
প্রতিটি দুর্ঘটনার পর সরকার এ বাহিনীকে আরও আধুনিকায়নের ঘোষণা দেয়। নতুন প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি কেনার পাশাপাশি নানা উদ্যোগ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রতিটি ঘটনার পরই কিছু না কিছু উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কিন্তু পরে বড় ধরনের দুর্ঘটনার পর দেখা গেছে, এসব উদ্যোগও যথেষ্ট হয়নি। এরপর সরকারকে আবারও নতুন করে দিতে হয়েছে আধুনিকায়নের ঘোষণা।
জিহাদ উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের ব্যর্থতার পরও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় নতুন করে একটি প্রকল্প গ্রহণের কথা জানিয়েছে। মডার্নাইজেশন অব ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স নামে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯৯ কোটি টাকা। এটি শেষ হবে ২০১৭ সালের জুন মাসের মধ্যে।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিসের জন্য উদ্ধার কাজে ব্যবহৃত আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ চারটি রেসকিউ কমান্ড ভেহিকল কেনা হবে। এ ছাড়াও ৬০ টন ক্ষমতার তিনটি এক্সকাভেটর ও একটি হেভি ডিউটি ক্রেন কেনা হবে।
অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার কাজে ব্যবহারের জন্য ১২টি টোয়িং ভেহিকল, ১১ হাজার লিটার ধারণক্ষমতার চারটি স্পেশাল ওয়াটার টেন্ডারও কেনা হবে। এ ছাড়া কেনা হবে ইমার্জেন্সি টেন্ডার নামের পাঁচটি টার্নটেবল লেডার নামে চারটি গাড়ি।
পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, জিহাদের ঘটনাটি সরকারকে ব্যথিত করেছে। ভবিষ্যতে এমন মৃত্যু ঠেকাতে ফায়ার সার্ভিস নতুন করে সাজাবে সরকার। তবে বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ বলছেন, দুর্যোগ মোকাবেলার ক্ষেত্রে আইন ও নীতির বাস্তবায়নই মূল সমস্যা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের পরিচালক মেহবুবা নাসরিন মনে করেন, এ উদ্যোগগুলো বাস্তবায়িত হলে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু কমানো সম্ভব হবে। তিনি বলেন, ‘যদি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের কারিগরি জ্ঞান থাকত তাহলে তারা বলতে পারত শাহজানপুরের রেলওয়ে পানির পাইপ ২৫০ ফুট পরেই সরু হয়ে যাবে। যাতে একটি শিশু পড়ে আরো নিচে নামার সম্ভাবনাও থাকে না। আর এত নিচের পানিও অনেক ঠা-া যাতে দীর্ঘসময় একটি শিশুর জীবিত থাকা সম্ভব নয়।’
অতি উৎসাহীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি
অতীতের নানা অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, একটি দুর্ঘটনা ঘটলেই শত শত মানুষ এসে ভিড় করে। এদের কেউ কেউ উদ্ধার অভিযানেও অংশ নেওয়ার আগ্রহ দেখায়। অংশও নেয় কেউ কেউ। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, মানুষের ভিড়ের কারণে উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছতে পারে না সময় মতো।
ফায়ার সার্ভিসের সাবেক মহাপরিচালক আবু নঈম মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ মনে করেন, অতি উৎসাহীরা সুবিধার চেয়ে ঝামেলা বেশি করেন। উন্নত বিশ্বে কোনো ঘটনা ঘটলে সাধারণত ঘটনাস্থল ঘেরাও করে কাজ করে উদ্ধারকর্মীরা। বাংলাদেশেও একই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছেন তিনি।
সাধারণ প্রযুক্তিতে বাজিমাত
যেখানে একের পর এক সব প্রশিক্ষিত বাহিনীর সদস্যরা ব্যর্থ, সেখানে বাজিমাত করলেন কয়েকজন তরুণ। এক ঘণ্টার অভিযানে মিথ্যা প্রমাণ করলেন নানা ‘বিশেষজ্ঞ’ তথ্য। ২২ ঘণ্টার হতাশা কাটিয়ে ৩০০ ফুটের গভীর পাইপ থেকে শুধু জিহাদের নিথর দেহখানি নয়, গোটা জাতিকেই যেন মিথ্যার এক গভীর অন্ধকার গহ্বর থেকে বের করলেন।
তরুণেরা যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন দ-ায়মান তিনটি রডের টুকরো। রডগুলোর ওপরের অংশে আর মাঝ বরাবর বৃত্তাকারে রড দিয়ে ঝালাই করা ছিল। নিচের অংশে প্রতিটির মাথায় বর্শার মতো পাত লাগানো ছিল ঝালাই করে। অনেকটা খাঁচার মতো। খাঁচায় জিহাদ ঢুকে গেলে নিচ থেকে আটকে যাবে। আর বেরোতে পারবে না। এরপর তাকে টেনে তোলা হবে। এতে প্রযুক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে পুরনো একটি সিসিটিভি ক্যামেরা এবং ছোট্ট টর্চলাইট। জিহাদ যে পাইপে পড়ে গিয়েছিল, তার পাশেই ছোট্ট একটি ওয়ার্কশপে যন্ত্রটি তৈরি করেন তারা। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘কামড়ি’। কেউ কেউ বলছেন খাঁচা।
আধুনিক প্রযুক্তি আর প্রশিক্ষিত বাহিনীকে পরাস্ত করে জিহাদকে তুলে আনা সেই যুবকরা হলেনÑমিরপুর মনিপুরের বাসিন্দা সুজন দাস রাহুল পড়েন রাজধানীর রমনার আইইবিতে। সফলতার আরেক সৈনিক শাহ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুন বেসরকারি একটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের ছাত্র। তাদের সঙ্গে আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মুরাদ, আনোয়ার হোসেন আর ইলেকট্রনিক্স পণ্যের দোকানি আবদুল মজিদ ছিলেন।
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা গাড়ি ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন সফল উদ্ধার অভিযানের সমন্বয় করেন। এ কয়েকজনই এ সফলতার মহানায়ক। রহমত উল্লাহ, আশরাফ উদ্দিন মুকুল আর মনির হোসেনের মতো আরও কয়েক যুবক নানা প্রযুক্তি নিয়ে চেষ্টা করেছিলেন জিহাদকে উদ্ধারে।
সুজন দাস রাহুল বলেন, তখন আমাদের হাত-পা শক্ত হয়ে আসছিল। একে অপরের মুখের দিকে তাকাচ্ছিলাম। বারবারই অচেনা জিহাদের মুখটি চোখের সামনে ভেসে আসছিল। এর পরই আমরা বর্শার ফলায় ভারী বস্তুটি আটকে দেই। ধীরে ধীরে টেনে তুলি তাকে। তখন নিশ্চিত হলেও আরও প্রায় ২০-২৫ মিনিট পর টেনে তুলেই চিৎকার দেই। জিহাদকে নিয়ে যাই হাসপাতালে।
আবদুল্লাহ আল মুন জানান, যন্ত্রটি ওপর থেকে নিচে নামানোর সময় স্বাভাবিকভাবে নামে। এরপর ক্যামেরা আর টর্চলাইটে ভারী একটা কিছু দেখে তারা পাইপে শিশুটির অস্তিত্ব নিয়ে নিশ্চিত হন। ক্যামেরায় দেখে যন্ত্রটি শিশুর ওপর রেখে ওপরের অংশে লাগানো রশি ধরে টান দিতেই খোলা তিনটি রড একত্র হয়ে শিশুটি বর্শায় আটকে যায়। এরপর টেনে তোলা হয় তাকে। তবে বর্শার ফলা ভোঁতা হওয়ায় জিহাদের শরীরে কোনো কাটাছেঁড়ার মতো ক্ষতি হয়নি।
একেবারেই সাধারণ বুদ্ধির জোরে জিহাদ উদ্ধার হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের কারিগরি জ্ঞান ও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের কারিগরি জ্ঞান ও প্রযুক্তি জ্ঞান বাড়াতে হবে। চিন্তাশক্তি ভালো না হলে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের সুফল পাওয়া যাবে না বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের পরিচালক মেহবুবা নাসরিন বলেন, ‘প্রথমে আমাদের উদ্ধার তৎপরতাকারীদের কারিগরি জ্ঞান বাড়াতে হবে। এছাড়াও যেসব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় তাও আধুনিক নয়। এজন্য আরো উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন বেসরকারি পর্যায়ে অনেক উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। রানা প্লাজা ধসের সময় ফায়ার সার্ভিস এসব প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নিয়েছে। এ সব যন্ত্রপাতি ফায়ার সার্ভিসের থাকতে হবে।
রাষ্ট্রের অমানবিকতা
জিহাদকে যখন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন ফায়ার সার্ভিস আর পুলিশ সন্দেহ করে যে, শিশুটি আসলে কূপে পড়েনি। এ নিয়ে জিহাদের স্বজনেরা অসত্য প্রচার করেছে। সেই বিশ্বাস থেকে তার বাবা নাসির ফকিরকে থানায় আটকে রেখে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠেছে। তার মামা মঞ্জুকে শারীরিক নির্যাতনও করে পুলিশ।
নাসির ফকির জানান, নিরাপত্তার কথা বলে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে জিহাদ পাইপে পড়ে যায়নি বলে বক্তব্য দিতে পুলিশ তাকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে। থানার ব্যারাকে সারা রাত বসিয়ে রাখা হয়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কথা বলতে রাজি হননি ঢাকা মহানগর পুলিশ মতিঝিল অঞ্চলের উপ-কমিশনার আশরাফুজ্জামান।
সাপ্তাহিক এই সময়ের সৌজন্যে
Thursday, January 8
এ সম্পর্কিত আরও খবর
যে সূরা রাতে পড়লে দারিদ্র্য কাছেও ঘেঁষতে পারবে না পবিত্র কোরআনুল কারিমের প্রত্যেকটি সূরার আলাদা আলাদা গুরুত্ব ও ফজিলত আছে। এমনকি একেক বাক্যের আ
আকস্মিক মৃত্যু থেকে বাঁচার দোয়া মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর কে
মোহাম্মদ আয়াছ মিয়া বিলেতে বাংলাদেশী গর্বিত ও আলোকিত মানুষ দেলওয়ার হোসেন সেলিম: বিলেতে বাংলাদেশী অনেকে রয়েছেন, যাদের মেধা, শ্রম, ত্যাগে দেশ, সমাজ ও জা
সেবায় গতি আনতে ডাক বিভাগের পোস্টম্যানরা পেলেন ই-বাইক বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সেবার মানোন্নয়নে যুক্ত করা হয়েছে নতুন প্রযুক্তি। পোস্টম্যানদের দ্রুত ও স
কাকলী শপিং সেন্টারের পার্কিং পথে দোকান!কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক :ভবন কোড মানছে না সিলেট নগরীর ব্যস্ততম জিন্দাবাজারে অবস্থিত কাকলী মার্কেট কর্তৃ
জুমার দিন যে দোয়া পাঠে ৮০ বছরের গুনাহ মাফ হয়ইসলামে জুমার দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত। এই দিনে এমন কিছু সময় আছে যখন আল্লাহ তার বান্দা
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়