কানিউজ ডেস্ক: পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ‘হুদহুদ’ আরও পশ্চিমও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে রবিবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টার কিছু পরে ভারতের উত্তর অন্ধ্র উপকূলে আঘাত হেনেছে। হুদহুদের আঘাতে প্রাথমিকভাবে ৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বিভিন্ন গণমাধ্যম।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কি. মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কি. মি. যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৫০ কি. মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দর সমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে।
এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সর্তকতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে আবহাওয়া বার্তায়।
শনিবার দুপুর ১২টায় প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ‘হুদহুদ’ চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০১০ কি. মি. দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৬০ কি. মি. দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৭০ কি. মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৮৭৫ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
শনিবার দুপুর ২টায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘হুদহুদ’ এর প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১-৩ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় হুদহুদের প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলকাসহ বিভিন্নস্থানে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তৈরি হয়েছে ভ্যাপসা গরম আবহাওয়া। কোথাও কোথাও জোয়ারে বৃদ্ধি পেয়েছে নদ-নদীর পানি।
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি ক্যাটাগরি-৫ ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এটি আঘাত হানার সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৬০ কিলোমিটার হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় এরই মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশ ও উড়িষ্যায় ৩৫টি মোবাইল টিম নিয়োগ করেছে দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
গত বুধবার আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ‘হুদহুদ’। এরপর এটি ভারতের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের ৮ দেশের আবহাওয়া দফতর ও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেলে ঘূর্ণিঝড়টির নাম ‘হুদহুদ’ প্রস্তাব করে ওমান। গত বছর অক্টোবর-নভেম্বরে পাইলিন, হেলেন ও লহর নামে তিনটি ঘূর্ণিঝড় অন্ধ্র উপকূলে আঘাত হানে।
এর আগে ১৯৯৯ সালের অক্টোবরে উড়িষ্যায় তাণ্ডব চালিয়ে যায় একটি সুপার সাইক্লোন, যাতে অন্তত ১৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
খবর বিভাগঃ
দেশের বাইরে
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়