স্টাফ রিপোর্টার: সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সম্বলিত সংধিানের বিদম্যান অনুচ্ছেদের সংশোধনের প্রস্তাব করে রোববার সংসদে সংবিধান (ষোড়শ সংশোধন) বিল, ২০১৪ সংশোধিত আকারে উত্থাপন করা হয়েছে।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বিলটি উত্থাপন করেন।
বিলে সংবিধানের বিদ্যমান ৯৬ অনুচ্ছেদের পরিবর্তে নতুন ৯৬ অনুচ্ছেদ প্রতিস্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত নতুন ৯৬ অনুচ্ছেদের (১) দফায় বলা হয়েছে, এ অনুচ্ছেদের বিধানাবলী সাপেক্ষে কোন বিচারক সাতষট্টি বৎসর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকবেন।
(২) দফায় বলা হয়েছে, প্রমাণিত অসদাচরণ বা অসামর্থ্যরে কারণে মোট সদস্য-সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতার দ্বারা সমর্থিত সংসদের প্রস্তাবক্রমে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ ব্যতিত কোন বিচারককে অপসারিত করা যাবে না।
(৩) দফায় বলা হয়েছে, এই অনুচ্ছেদের (২) দফার অধীন প্রস্তাব সম্পর্কিত পদ্ধতি এবং কোন বিচারকের অসাদাচরণ বা অসামর্থ্য সম্পর্কে তদন্ত সংসদে আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করবেন।
(৪) দফায় বলা হয়, কোন বিচারপতি রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ্য করে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করতে পারবেন।
এছাড়া বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭-এর বিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ এবং তাহাদের পক্ষে এ ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হবে।
এর প্রতিফলনে ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত রাষ্ট্রপতিকে সংসদ কর্তৃক অভিশংসনের মাধ্যমে অপসারণ (অনুচ্ছেদ ৫২), সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন হারাইলে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ (অনুচ্ছেদ ৫৭), সংসদ সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সমর্থিত প্রস্তাবের মাধ্যমে স্পিকারকে অপসারণ (অনুচ্ছেদ ৭৪) এবং সংসদের মোট সদস্য সংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার দ্বারা সমর্থিত প্রস্তাবের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকগণকে পদত্যাগ ও অপসারণ সম্পর্কিত পূর্ববর্তী বিধান অদ্যাবধি অপরিবর্তিত থাকলেও সামরিক শাসক কর্তৃক অসাংবিধানিক পন্থায় সামরিক ফরমান সেকেন্ড প্রক্লেমেশন (১৫তম সংশোধনী) আদেশ ১৯৭৮-এর সেকেন্ড সিডিউল দ্বারা সুপ্রিম কোর্টের কোন বিচারকের অসদাচরণ বা অসামর্থ্যরে অভিযোগে সংসদ কর্তৃক অপসারণের বিধান পরিবর্তনক্রমে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং অপর দু’জন প্রবীণ বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের প্রতিনিধিদের দ্বারা গঠিত সংসদে রাষ্ট্রের অন্যান্য অঙ্গের ন্যায় উচ্চ আদালতের বিচারকদের জবাবদিহিতার নীতি বিশ্বের অধিকাংশ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিদ্যমান রয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে ১৯৭২ সালের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৬ পুনঃপ্রবর্তনের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকগণকে সংসদের মাধ্যমে অপসারণের বিধান পুনঃপ্রবর্তনের মাধ্যমে অনুচ্ছেদ ৭-এর চেতনা পুনর্বহালের লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে সংবিধান (ষোড়শ সংশোধন) আইন, ২০১৪-এর বিল উত্থাপন করা হয়েছে।
বিলটি আইনে পরিণত হলে স্বাধীন বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা আরো বৃদ্ধির পাশাপাশি জনপ্রতিনিধির নিকট এর জবাবদিহিতা থাকা সংক্রান্ত সংবিধানের মৌলিক কাঠামো সমুন্নত থাকবে বলে আশা করা যায়।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের জন্য বিলটি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে প্রেরণ করা হয়।
খবর বিভাগঃ
সারাদেশ

0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়