ঢাকা: ‘সরো (অ), সরিয়া(আ) , ক, খ এগিন আঙ্গোরে কিল্লাই
কন। আন্ডা এগিত হারি নি। আঙ্গো মা-বাপেও হারে না। হারুম কেন্নে? আঙ্গো চরে
কোনো স্কুল নাই। যে গিন আছে হেগিনের চাল নাই। রৌদ অইলে হুড়ে, জই অইলে
বিজে।’
কথাগুলো বলেই মুচকি হেসে দৌড়ে পালিয়ে যায় রাবেয়া। একটু দূরে গিয়ে মায়ের আঁচল ধরে বলে, ‘মা বেড়া ইগা আঁঙ্গোরে হোয়া লের কথা ক। আন্ডা কইছি এগিন আঙ্গোরে কইয়েন না।’
বিলকিছ বলে, ‘আঙ্গোরে সরকার কোনো স্কুল দিছেনি? চরের নেতারা যেগিন দিছে হেগিনে ঠিকমতোন চারেরা আয়ে না। হেতারা বোলে বেতন টেতন হা না। আন্ডা যাই কাইল্ল্যা বই থাকি। হিয়াল্লাই আঙ্গো চরে কেউ হোয়া লেখা করে না। খাইল্ল্যা আই ন, অন আঙ্গো চরের কেউ স্কুলে যা না।’
একথা বলেই মাথায় ওড়না টেনে ছাগলের পাল নিয়ে বিস্তীর্ণ বিলের দিকে চলে যায় সে। শুধু রাবেয়া আর বিলকিছ নয়। তার মতো এমন হাজারো শিশু রয়েছে যারা শিক্ষা নামক মৌলিক অধিকারের ছোঁয়া এখনো পায়নি। পাবেই বা কিভাবে? সেখানে নেই কোনো স্কুল বা শিক্ষিত সমাজের ছোঁয়া।
সম্প্রতি নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে শিশুদের এমন চিত্র।
জানা গেছে, চল্লিশের দশকের দিকে নোয়াখালীর দক্ষিণে মেঘনার মোহনায় জেগে ওঠা প্রায় দুই ডজন চরে এখনো লাগেনি শিক্ষার ছোঁয়া। প্রায় আড়াই লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত এসব চরে এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি সরকারি কোনো স্কুল। ব্যক্তি মালিকানা বা বেসরকারিভাবে দু’একটি স্কুল প্রতিষ্ঠিত হলে তাও নানা সমস্যা আর অর্থাভাবে ব্যাহত হয় শিক্ষা কার্ক্রম।
দ্বীপের চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, অযত্ন আর অবহেলায় বেড়ে ওঠেছে এ দ্বীপের ১০ হাজারেরও বেশি শিশু। এদের অনেকেই শিশুশ্রমসহ নানা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে জড়িত।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের দেয়া তথ্য মতে, হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ, হরনী ও চানন্দী ইউনিয়নে সরকারি কোনো স্কুল নেই। যেসব প্রাথমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে, তাতে নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক, শিক্ষা উপকরণ কিংবা আসবাবপত্র। দ্বীপের বিদ্যালয়গুলোতে নেই কোনো খেলার মাঠ, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা কিংবা বিনোদনের ব্যবস্থা।
এসব চরে নেই কোনো সরকারি বা বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। তাই চরের শিশুরা কোনো রোগে আক্রান্ত হলেই তাদেরকে দারস্থ হতে হয় গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তার, কবিরাজ কিংবা ভণ্ড পীরের কাছে।
দ্বীপের চরাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ জেলে পেশার সঙ্গে জড়িত। তারা সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। তাদের শিশুরা সংসারে বাড়তি আয়ের যোগান দিতে পাঠশালায় যাওয়ার পরিবর্তে পরিবারের বড়দের সঙ্গে মাছ ধরার কাজে ব্যস্ত থাকে।
এদের আবার বিরাট অংশ বিস্তীর্ণ বন থেকে লাকড়ি কুড়ায়। তা বিক্রি করেই পরিবারের বড়দের সঙ্গে অর্থের যোগান দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বাংলামেইলকে বলেন, ‘আসলে এসব চরাঞ্চলে সরকারিভাবে কোনো স্কুল নেই। তবে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প বিদ্যালয় বিহীন গ্রাম প্রকল্পের আওতায় বয়ার চরে দুটি স্কুল এবং নিঝুমদ্বীপের জন্য দুটি স্কুল স্থাপন করা হয়েছে। এ স্কুলগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়নি।
বাংলামেইল২৪ডটকম/
কথাগুলো বলেই মুচকি হেসে দৌড়ে পালিয়ে যায় রাবেয়া। একটু দূরে গিয়ে মায়ের আঁচল ধরে বলে, ‘মা বেড়া ইগা আঁঙ্গোরে হোয়া লের কথা ক। আন্ডা কইছি এগিন আঙ্গোরে কইয়েন না।’
বিলকিছ বলে, ‘আঙ্গোরে সরকার কোনো স্কুল দিছেনি? চরের নেতারা যেগিন দিছে হেগিনে ঠিকমতোন চারেরা আয়ে না। হেতারা বোলে বেতন টেতন হা না। আন্ডা যাই কাইল্ল্যা বই থাকি। হিয়াল্লাই আঙ্গো চরে কেউ হোয়া লেখা করে না। খাইল্ল্যা আই ন, অন আঙ্গো চরের কেউ স্কুলে যা না।’
একথা বলেই মাথায় ওড়না টেনে ছাগলের পাল নিয়ে বিস্তীর্ণ বিলের দিকে চলে যায় সে। শুধু রাবেয়া আর বিলকিছ নয়। তার মতো এমন হাজারো শিশু রয়েছে যারা শিক্ষা নামক মৌলিক অধিকারের ছোঁয়া এখনো পায়নি। পাবেই বা কিভাবে? সেখানে নেই কোনো স্কুল বা শিক্ষিত সমাজের ছোঁয়া।
সম্প্রতি নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে শিশুদের এমন চিত্র।
জানা গেছে, চল্লিশের দশকের দিকে নোয়াখালীর দক্ষিণে মেঘনার মোহনায় জেগে ওঠা প্রায় দুই ডজন চরে এখনো লাগেনি শিক্ষার ছোঁয়া। প্রায় আড়াই লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত এসব চরে এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি সরকারি কোনো স্কুল। ব্যক্তি মালিকানা বা বেসরকারিভাবে দু’একটি স্কুল প্রতিষ্ঠিত হলে তাও নানা সমস্যা আর অর্থাভাবে ব্যাহত হয় শিক্ষা কার্ক্রম।
দ্বীপের চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, অযত্ন আর অবহেলায় বেড়ে ওঠেছে এ দ্বীপের ১০ হাজারেরও বেশি শিশু। এদের অনেকেই শিশুশ্রমসহ নানা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে জড়িত।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের দেয়া তথ্য মতে, হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ, হরনী ও চানন্দী ইউনিয়নে সরকারি কোনো স্কুল নেই। যেসব প্রাথমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে, তাতে নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক, শিক্ষা উপকরণ কিংবা আসবাবপত্র। দ্বীপের বিদ্যালয়গুলোতে নেই কোনো খেলার মাঠ, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা কিংবা বিনোদনের ব্যবস্থা।
এসব চরে নেই কোনো সরকারি বা বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। তাই চরের শিশুরা কোনো রোগে আক্রান্ত হলেই তাদেরকে দারস্থ হতে হয় গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তার, কবিরাজ কিংবা ভণ্ড পীরের কাছে।
দ্বীপের চরাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ জেলে পেশার সঙ্গে জড়িত। তারা সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। তাদের শিশুরা সংসারে বাড়তি আয়ের যোগান দিতে পাঠশালায় যাওয়ার পরিবর্তে পরিবারের বড়দের সঙ্গে মাছ ধরার কাজে ব্যস্ত থাকে।
এদের আবার বিরাট অংশ বিস্তীর্ণ বন থেকে লাকড়ি কুড়ায়। তা বিক্রি করেই পরিবারের বড়দের সঙ্গে অর্থের যোগান দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বাংলামেইলকে বলেন, ‘আসলে এসব চরাঞ্চলে সরকারিভাবে কোনো স্কুল নেই। তবে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প বিদ্যালয় বিহীন গ্রাম প্রকল্পের আওতায় বয়ার চরে দুটি স্কুল এবং নিঝুমদ্বীপের জন্য দুটি স্কুল স্থাপন করা হয়েছে। এ স্কুলগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়নি।
বাংলামেইল২৪ডটকম/
খবর বিভাগঃ
ফিচার

0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়