নারায়ণগঞ্জ: ফসলি ও কৃষি জমির উর্বর মাটি যাচ্ছে রূপগঞ্জের ৩৭টি ইটভাটায়।
উজার হয়ে যাচ্ছে বনের গাছ। এতে প্রশাসন বা সরকারের কোন মাথা ব্যথা নেই।
প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে রূপগঞ্জের ইটভাটাগুলোতে আবাদি জমির উর্বরা মাটি
কেটে নেয়া হয়। এ মাটির ব্যবসায় জড়িত রূপগঞ্জের অর্ধশতাধিক প্রভাবশালী লোক।
প্রতিদিন ৩ শতাধিক ট্রাক, ট্রাক্টর দিয়ে ইটভাটায় মাটি পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
কখনো কখনো কৃষি জমির মালিক মাটি বিক্রি করতে অসম্মতি জানালে জোরপূর্বক মাটি
কেটে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
রূপগঞ্জের কৃষি ও ফসলি প্রায় ২৬ হাজার হেক্টর জমির কি পরিমাণ মাটি ইটভাটায় যাচ্ছে এর কোন হিসাব নেই কৃষি অফিসে। সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই ইট তৈরির ছাড়পত্র দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। কোন কোন ইটভাটার আদৌ ছাড়পত্র নেই। ঘরে বসেই ইটভাটাগুলোকে অনুমোদন দেয়ার কারণে আবাদি জমি ও জনবসতিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ইটভাটা। উপজেলার বেশিরভাগ ইটভাটা আবাদি জমি ও জনবসতিতে স্থাপন করায় ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় প্রতিনিয়ত বিষাক্ত হয়ে পড়ছে পরিবেশ। পাশাপাশি আবাদি জমির উর্বর মাটি দিয়ে ইট তৈরি হওয়ায় আশপাশের আবাদি জমির উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। রূপগঞ্জের ৩৭টি ইটভাটায় জমির উর্বর মাটি ব্যবহারে দেড় সহস্রাধিক বিঘা জমির উৎপাদন হুমকির মুখে পড়ায় ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন কৃষিবিদরা।
জানা গেছে, ২০০৮ সাল পর্যন্ত উপজেলায় ১৯টি ইটভাটা থাকলেও ৫ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭টিতে। অনেক ভাটায় জেলা প্রশাসনের ইট পোড়ানোর অনুমতি (ফায়ারিং) না নিয়েই ইট পোড়ানো হচ্ছে। ইট পোড়ানো কিংবা স্থাপনের পূর্বেই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ভূমি, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ কিংবা বন বিভাগের ছাড়পত্র নিয়ে অনুমতির জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করতে হয়। কিন্তু দেখা গেছে, ইটভাটা মালিকেরা মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র নিয়েই ইট পোড়ানোর কাজ শুরু করেন। ইতোপূর্বে গড়ে ওঠা ভাটাগুলোকে হাইব্রিড বার্টিক্যাল চ্যাপ, হফম্যান কিলন, জিকজ্যাক কিলন এবং উন্নত পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহারের তাগিদ দেয়া হলেও চলতি মৌসুমে ভাটাগুলো এসব পদ্ধতি অনুসরণ কিংবা রূপান্তরের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ভূমি মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত ১৯৯২ সালের প্রজ্ঞাপনে ‘কৃষিজমিতে ইটভাটা নির্মাণ দন্ডনীয় অপরাধ’ উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও রূপগঞ্জে কোন ইটভাটায় এ নিয়ম মানা হচ্ছে না। উল্টো কৃষিজমি নষ্ট করে যত্রতত্র প্রতিযোগিতামূলক ইটভাটা গড়ে উঠছে। এসব ইটভাটার আবাদি জমির উর্বর মাটি ব্যবহারের কারণে কৃষিপ্রধান এ এলাকার মাটি উৎপাদন শক্তি হারিয়ে ফেলছে। ফলে আগামীতে ব্যাপক ফলন বিপর্যয়ে পড়বে উপজেলার অধিকাংশ এলাকা। তারপরও পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন ভাটাগুলো পরিদর্শন না করে দপ্তরে বসেই একের পর এক অনুমতি ও ছাড়পত্র দিয়েই চলছেন। এভাবে লোকালয় ও কৃষি জমিতে ইটভাটা গড়ে তোলায় একদিকে যেমন কৃষি জমি হারাচ্ছে তার উর্বরতা এবং কমে যাচ্ছে কৃষি জমি। অন্যদিকে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের কবলে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছে মানুষ। কৃষি জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট এবং ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
দড়িকান্দি এলাকার কৃষক মোহন মিয়া জানান, ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ তারিফুজ্জামান মিয়া মাটির ঠিকাদারদের কাছ থেকে দৈনিক ৩০ হাজার টাকা উৎকোচ নিয়ে থাকেন। এ টাকার অর্ধেক প্রদান করে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারকে। মাটি কাটতে বাঁধা দিলে কৃষকদের পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাটি ব্যবসায়ী জানান, প্রতিদিন রাতে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ তারিফুজ্জামান মিয়াকে মাটির ঠিকাদার সাওঘাট গ্রামের জমির ভুঁইয়া ৩ হাজার টাকা, বরপা এলাকার মাসুম ৪ হাজার, সায়েম ৪ হাজার টাকা, কামাল ৪ হাজার টাকা, পনির ৪ হাজার টাকা, মাতুয়াইল এলাকার নাছিরউদ্দিন ৪হাজার টাকা, মীরকুটিরছেও গ্রামের শহিদুল্লাহ ৩ হাজার টাকা, মর্তুজাবাদ গ্রামের হারুন ৪ হাজার টাকা, গনি মিয়া ৪ হাজার টাকা করে প্রদান করছে।
কৃষকদের জমি দখলে নিতেও এসব ঠিকাদারদের পুলিশ সহযোগিতা করে থাকে। প্রতি বছর ভুমিদস্যুদের কারণে শত শত বিঘা জমি অনাবাদি হয়ে পড়ছে। চলতি ইরি-বোরো মৌসুমেও ৪ থেকে ৫টি ভেকো দিয়ে ৩ শতাধিক ট্রাকে করে আবাদি জমির মাটি কেটে ইটের ভাটায় বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ তারিফুজ্জামান মিয়া জানান, মাটির ট্রাক চলাচলে সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
রূপগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ রেজা জানান, জমির মূল উর্বরতা শক্তি থাকে মাটির উপরিভাগে। আর এ উর্বরতা শক্তি সঞ্চয় করতে সময় লাগে ৬-৭ বছর।
রূপগঞ্জের কৃষি ও ফসলি প্রায় ২৬ হাজার হেক্টর জমির কি পরিমাণ মাটি ইটভাটায় যাচ্ছে এর কোন হিসাব নেই কৃষি অফিসে। সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই ইট তৈরির ছাড়পত্র দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। কোন কোন ইটভাটার আদৌ ছাড়পত্র নেই। ঘরে বসেই ইটভাটাগুলোকে অনুমোদন দেয়ার কারণে আবাদি জমি ও জনবসতিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ইটভাটা। উপজেলার বেশিরভাগ ইটভাটা আবাদি জমি ও জনবসতিতে স্থাপন করায় ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় প্রতিনিয়ত বিষাক্ত হয়ে পড়ছে পরিবেশ। পাশাপাশি আবাদি জমির উর্বর মাটি দিয়ে ইট তৈরি হওয়ায় আশপাশের আবাদি জমির উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। রূপগঞ্জের ৩৭টি ইটভাটায় জমির উর্বর মাটি ব্যবহারে দেড় সহস্রাধিক বিঘা জমির উৎপাদন হুমকির মুখে পড়ায় ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন কৃষিবিদরা।
জানা গেছে, ২০০৮ সাল পর্যন্ত উপজেলায় ১৯টি ইটভাটা থাকলেও ৫ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭টিতে। অনেক ভাটায় জেলা প্রশাসনের ইট পোড়ানোর অনুমতি (ফায়ারিং) না নিয়েই ইট পোড়ানো হচ্ছে। ইট পোড়ানো কিংবা স্থাপনের পূর্বেই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ভূমি, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ কিংবা বন বিভাগের ছাড়পত্র নিয়ে অনুমতির জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করতে হয়। কিন্তু দেখা গেছে, ইটভাটা মালিকেরা মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র নিয়েই ইট পোড়ানোর কাজ শুরু করেন। ইতোপূর্বে গড়ে ওঠা ভাটাগুলোকে হাইব্রিড বার্টিক্যাল চ্যাপ, হফম্যান কিলন, জিকজ্যাক কিলন এবং উন্নত পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহারের তাগিদ দেয়া হলেও চলতি মৌসুমে ভাটাগুলো এসব পদ্ধতি অনুসরণ কিংবা রূপান্তরের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ভূমি মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত ১৯৯২ সালের প্রজ্ঞাপনে ‘কৃষিজমিতে ইটভাটা নির্মাণ দন্ডনীয় অপরাধ’ উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও রূপগঞ্জে কোন ইটভাটায় এ নিয়ম মানা হচ্ছে না। উল্টো কৃষিজমি নষ্ট করে যত্রতত্র প্রতিযোগিতামূলক ইটভাটা গড়ে উঠছে। এসব ইটভাটার আবাদি জমির উর্বর মাটি ব্যবহারের কারণে কৃষিপ্রধান এ এলাকার মাটি উৎপাদন শক্তি হারিয়ে ফেলছে। ফলে আগামীতে ব্যাপক ফলন বিপর্যয়ে পড়বে উপজেলার অধিকাংশ এলাকা। তারপরও পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন ভাটাগুলো পরিদর্শন না করে দপ্তরে বসেই একের পর এক অনুমতি ও ছাড়পত্র দিয়েই চলছেন। এভাবে লোকালয় ও কৃষি জমিতে ইটভাটা গড়ে তোলায় একদিকে যেমন কৃষি জমি হারাচ্ছে তার উর্বরতা এবং কমে যাচ্ছে কৃষি জমি। অন্যদিকে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের কবলে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছে মানুষ। কৃষি জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট এবং ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
দড়িকান্দি এলাকার কৃষক মোহন মিয়া জানান, ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ তারিফুজ্জামান মিয়া মাটির ঠিকাদারদের কাছ থেকে দৈনিক ৩০ হাজার টাকা উৎকোচ নিয়ে থাকেন। এ টাকার অর্ধেক প্রদান করে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারকে। মাটি কাটতে বাঁধা দিলে কৃষকদের পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাটি ব্যবসায়ী জানান, প্রতিদিন রাতে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ তারিফুজ্জামান মিয়াকে মাটির ঠিকাদার সাওঘাট গ্রামের জমির ভুঁইয়া ৩ হাজার টাকা, বরপা এলাকার মাসুম ৪ হাজার, সায়েম ৪ হাজার টাকা, কামাল ৪ হাজার টাকা, পনির ৪ হাজার টাকা, মাতুয়াইল এলাকার নাছিরউদ্দিন ৪হাজার টাকা, মীরকুটিরছেও গ্রামের শহিদুল্লাহ ৩ হাজার টাকা, মর্তুজাবাদ গ্রামের হারুন ৪ হাজার টাকা, গনি মিয়া ৪ হাজার টাকা করে প্রদান করছে।
কৃষকদের জমি দখলে নিতেও এসব ঠিকাদারদের পুলিশ সহযোগিতা করে থাকে। প্রতি বছর ভুমিদস্যুদের কারণে শত শত বিঘা জমি অনাবাদি হয়ে পড়ছে। চলতি ইরি-বোরো মৌসুমেও ৪ থেকে ৫টি ভেকো দিয়ে ৩ শতাধিক ট্রাকে করে আবাদি জমির মাটি কেটে ইটের ভাটায় বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ তারিফুজ্জামান মিয়া জানান, মাটির ট্রাক চলাচলে সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
রূপগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ রেজা জানান, জমির মূল উর্বরতা শক্তি থাকে মাটির উপরিভাগে। আর এ উর্বরতা শক্তি সঞ্চয় করতে সময় লাগে ৬-৭ বছর।
খবর বিভাগঃ
অন্য জেলা
সর্বশেষ সংবাদ
সারাদেশ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়