নেত্রকোনা: হাওড়াঞ্চলের এক জনপ্রিয় সঙ্গীত রীতির নাম ‘ধামাইল গান’। নৃত্যের তালে তালে গাওয়া হয় বলে এটিকে এক ধরণের লোকনৃত্যও বলা যায়। নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বৃহত্তর হাওর এলাকায় এক সময় ধামাইল গানের ব্যাপক প্রচলন ছিল। বিশেষ করে রাধারমনের ধামাইল গান এখনও সবার মুখে মুখে। কিন্তু আকাশ সংস্কৃতির আগ্রাসন, ডিজিটাল সংস্কৃতির প্রচলন এবং পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে চিরায়ত এই সঙ্গীত রীতিটি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে।
নেত্রকোনার হাওড়দ্বীপ খালিয়াজুরি উপজেলা ধামাইল গানের জন্য প্রসিদ্ধ। খালিয়াজুরির নগর, কৃষ্ণপুর, চাকুয়া এবং সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বহু যুগ ধরে ধামাইল গানের রেওয়াজ প্রচলিত। এটি মূলতঃ মেয়েলী সঙ্গীত। সাধারণতঃ হিন্দু সম্প্রদায়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে মেয়েরা হাত-তালি এবং নৃত্যের তালে এ ধরণের গান পরিবেশন করে। তবে হালে বিয়ে ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ও পূজা-পার্বনেও ধামাইল গান পরিবেশন করতে দেখা যায়। সাম্প্রতিককালে উন্নয়ন কর্মসূচীতেও যুক্ত হয়েছে ধামাইল গান। খালিয়াজুরিতে ইউনিসেফ-বাংলাদেশ এর ‘উন্নয়নের জন্য যোগাযোগ কর্মসূচী’র(সিফরডি) সহায়তায় বেসরকারি সংস্থা স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতি পরিচালিত ‘জনসম্পৃক্ততায় সামাজিক ও আচরণগত পরিবর্তন প্রকল্প’র আওতায় বিভিন্ন ওয়ার্ডে পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইস্যুভিত্তিক ধামাইল গান। মা ও শিশুর উন্নয়ন এবং কল্যাণের জন্য নির্বাচিত ১১টি ইস্যুর মধ্যে রয়েছেঃ নিউমোনিয়া, গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়ের সেবা-যতœ, জন্মনিবন্ধন, শালদুধ ও নবজাতকের যতœ, সাবান দিয়ে হাতধোয়া, এইআইভি এইডস প্রতিরোধ, দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা, শিশু সুরক্ষা, শিশু বিবাহ, শিশু শ্রম ও শিশুর ওপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন প্রতিরোধ।
প্রকল্পের আওতায় খালিয়াজুরির নগর ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামে গঠন করা হয়েছে একটি ধামাইল সঙ্গীত দল। নাম ‘বল্লভপুর একতা ধামাইল দল’। দলের সদস্যরা হচ্ছেন আভা সরকার, সেতু সরকার, মালতী সরকার, প্রতিভা সরকার, খেলন সরকার, শীলা সরকার, ঝুমুর সরকার, ও অনিমেষ সরকার। এরা প্রত্যেকে অতিদরিদ্র পরিবারের গৃহবধূ, কিন্তু ধামাইল গানে পারদর্শী। সবিতা রাণী সামন্ত নামে একজন পরিবার কল্যাণ কর্মী উপরোক্ত ১১টি বিষয়ে গান রচনা ও সুর করেছেন। বল্লভপুর একতা ধামাইল দল সম্প্রতি খালিয়াজুরির সদর, নগর, মেন্দিপুর ও গাজীপুর ইউনিয়নে ৩৬টি ধামাইল শো পরিবেশন করেছে। কিছুদিনের মধ্যে বাকি দুইটি ইউনিয়নের (কৃষ্ণপুর ও চাকুয়া) ১৮টি ওয়ার্ডে আরও ১৮টি ধামাইল শো অনুষ্ঠিত হবে। প্রত্যেক শো বাবদ শিল্পীদের পারিশ্রমিক দেয়া হচ্ছে। তা দিয়ে তারা সংসারের চাহিদাও মেটাতে পারছেন। এছাড়া পরিবেশন রীতির কারণে জনসাধরণের ব্যাপক প্রশংসাও কুড়িয়েছেন তারা।
ধামাইল শিল্পী আভা রাণী জানান, আমাদের দলের অনেকে আগে দিনমজুরি করতেন। এখন তারা গান করে আয় করতে পারছে। ধামাইল গান গেয়ে টাকা রোজগার করা যাবে তা কোনদিন কল্পনাও করেনি এই অজগাঁয়ের নারীরা। প্রতিভা সরকার বলেন, মা ও শিশুদের জন্য জনগণকে সচেতন করার কাজ করছি- এটাই সবচেয়ে বড় আনন্দের বিষয়। খালিয়াজুরি সদর ইউনিয়নের ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের নারী সদস্য বন্যা রাণী দাস বলেন, এটি উন্নয়ন কর্মসূচীতে একটি নতুন পদক্ষেপ। এর মধ্য দিয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষ একদিকে যেমন চিত্ত বিনোদনের সুযোগ পাবে অন্যদিকে পর্যাপ্ত তথ্যও জানতে পারবে। এছাড়া এ ধরণের উদ্যোগের ফলে বিলুপ্তপ্রায় ধামাইল গানও টিকে থাকবে।(ডিনিউজ)
নেত্রকোনার হাওড়দ্বীপ খালিয়াজুরি উপজেলা ধামাইল গানের জন্য প্রসিদ্ধ। খালিয়াজুরির নগর, কৃষ্ণপুর, চাকুয়া এবং সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বহু যুগ ধরে ধামাইল গানের রেওয়াজ প্রচলিত। এটি মূলতঃ মেয়েলী সঙ্গীত। সাধারণতঃ হিন্দু সম্প্রদায়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে মেয়েরা হাত-তালি এবং নৃত্যের তালে এ ধরণের গান পরিবেশন করে। তবে হালে বিয়ে ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ও পূজা-পার্বনেও ধামাইল গান পরিবেশন করতে দেখা যায়। সাম্প্রতিককালে উন্নয়ন কর্মসূচীতেও যুক্ত হয়েছে ধামাইল গান। খালিয়াজুরিতে ইউনিসেফ-বাংলাদেশ এর ‘উন্নয়নের জন্য যোগাযোগ কর্মসূচী’র(সিফরডি) সহায়তায় বেসরকারি সংস্থা স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতি পরিচালিত ‘জনসম্পৃক্ততায় সামাজিক ও আচরণগত পরিবর্তন প্রকল্প’র আওতায় বিভিন্ন ওয়ার্ডে পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইস্যুভিত্তিক ধামাইল গান। মা ও শিশুর উন্নয়ন এবং কল্যাণের জন্য নির্বাচিত ১১টি ইস্যুর মধ্যে রয়েছেঃ নিউমোনিয়া, গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়ের সেবা-যতœ, জন্মনিবন্ধন, শালদুধ ও নবজাতকের যতœ, সাবান দিয়ে হাতধোয়া, এইআইভি এইডস প্রতিরোধ, দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা, শিশু সুরক্ষা, শিশু বিবাহ, শিশু শ্রম ও শিশুর ওপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন প্রতিরোধ।
প্রকল্পের আওতায় খালিয়াজুরির নগর ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামে গঠন করা হয়েছে একটি ধামাইল সঙ্গীত দল। নাম ‘বল্লভপুর একতা ধামাইল দল’। দলের সদস্যরা হচ্ছেন আভা সরকার, সেতু সরকার, মালতী সরকার, প্রতিভা সরকার, খেলন সরকার, শীলা সরকার, ঝুমুর সরকার, ও অনিমেষ সরকার। এরা প্রত্যেকে অতিদরিদ্র পরিবারের গৃহবধূ, কিন্তু ধামাইল গানে পারদর্শী। সবিতা রাণী সামন্ত নামে একজন পরিবার কল্যাণ কর্মী উপরোক্ত ১১টি বিষয়ে গান রচনা ও সুর করেছেন। বল্লভপুর একতা ধামাইল দল সম্প্রতি খালিয়াজুরির সদর, নগর, মেন্দিপুর ও গাজীপুর ইউনিয়নে ৩৬টি ধামাইল শো পরিবেশন করেছে। কিছুদিনের মধ্যে বাকি দুইটি ইউনিয়নের (কৃষ্ণপুর ও চাকুয়া) ১৮টি ওয়ার্ডে আরও ১৮টি ধামাইল শো অনুষ্ঠিত হবে। প্রত্যেক শো বাবদ শিল্পীদের পারিশ্রমিক দেয়া হচ্ছে। তা দিয়ে তারা সংসারের চাহিদাও মেটাতে পারছেন। এছাড়া পরিবেশন রীতির কারণে জনসাধরণের ব্যাপক প্রশংসাও কুড়িয়েছেন তারা।
ধামাইল শিল্পী আভা রাণী জানান, আমাদের দলের অনেকে আগে দিনমজুরি করতেন। এখন তারা গান করে আয় করতে পারছে। ধামাইল গান গেয়ে টাকা রোজগার করা যাবে তা কোনদিন কল্পনাও করেনি এই অজগাঁয়ের নারীরা। প্রতিভা সরকার বলেন, মা ও শিশুদের জন্য জনগণকে সচেতন করার কাজ করছি- এটাই সবচেয়ে বড় আনন্দের বিষয়। খালিয়াজুরি সদর ইউনিয়নের ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের নারী সদস্য বন্যা রাণী দাস বলেন, এটি উন্নয়ন কর্মসূচীতে একটি নতুন পদক্ষেপ। এর মধ্য দিয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষ একদিকে যেমন চিত্ত বিনোদনের সুযোগ পাবে অন্যদিকে পর্যাপ্ত তথ্যও জানতে পারবে। এছাড়া এ ধরণের উদ্যোগের ফলে বিলুপ্তপ্রায় ধামাইল গানও টিকে থাকবে।(ডিনিউজ)
খবর বিভাগঃ
ফিচার
ফিচার পাতা
বিশেষ খবর
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়