Tuesday, June 11

কানাইঘাটে ছাগলের ক্ষেত খাওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আহত শাহিনের মৃত্যু


নিজস্ব প্রতিবেদক ::

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দিঘীরপাড় পূর্ব ইউনিয়নের জয়ফৌদ কাদিরগ্রামে ছাগল কর্তৃক বাগানের সবজি খাওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত শাহিন আহমদ (২৭) নামে এক যুবক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার(১১ জুন) সকালে সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, গত রবিবার দুপুর ১২টার দিকে জয়ফৌদ কাজিরগ্রামের আনছার আলীর পুত্র সুলেমানের সবজি ক্ষেতে একই গ্রামের বর্তমান ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিনের চাচাতো ভাই বিলাল আহমদের গৃহপালিত ছাগল সবজি খেয়ে ক্ষতিসাধন করে। 

এ সময় সুলেমান ছাগলটিকে তাড়িয়ে নিয়ে বিলাল আহমদের বাড়িতে গেলে কথা কাটাকাটির জের ধরে বিলাল আহমদের বাড়ির লোকজন সুলেমানকে মারধর করেন। সুলেমান তার চাচাতো ভাই আবু বক্করকে ঘটনাটি জানালে আবু বক্কর স্থানীয় সড়কের বাজারে গিয়ে বিলাল আহমদের চাচাতো ভাই স্থানীয় ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিনের কাছে বিচারপ্রার্থী হন। 

এতে ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে দেশীয় লাঠি-সোটা নিয়ে আবু বক্করের হামলা চালালে তিনি প্রাণের ভয়ে দৌড়ে গিয়ে শাহজাহান কমপ্লেক্সের একটি দোকানে গিয়ে আশ্রয় নেন। এ সময় বাজারে অবস্থানরত আবু বক্করের ভাই গরু ব্যবসায়ী শাহিন আহমদ তার পরিবারের আরো কয়েকজন  হামলাকারীদের হাত থেকে আবু বক্করকে বাঁচাতে এগিয়ে যান। তখন ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে তার বাড়ির লোকজন ধারালো দা, রুইল, রড, লাঠি-সোটা নিয়ে শাহিন আহমদ ও তার ভাইদের উপর অতর্কিত হামলা চালালে উভয় পক্ষ লাঠি-সোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন গংদের হামলায় শাহিন আহমদ সহ তার পরিবারের ৪ জনকে আহত হন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত শাহিন আহমদকে আশংকা জনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে শাহিন আহমদ মৃত্যুবরণ করেন। ময়না তদন্তের পর নিহত শাহিন আহমদের লাশ তার নিজ বাড়িতে নিয়ে আসলে আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্থানীয়রা জানান, ৯ মাস পূর্বে শাহিন আহমদ বিয়ে করেন। তার স্ত্রী বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা।

সংঘর্ষের ঘটনার পর পরই রবিবার রাতে আবু বক্কর বাদী হয়ে কানাইঘাট থানায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করে।

নিহতের বড় ভাই আবু বক্কর সহ পরিবারের লোকজন জানান, বিগত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ইউপি সদস্য পদে নাজিম উদ্দিনকে তারা ভোট না দেয়ায় নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন তাদের উপর ক্ষিপ্ত ছিল। সবজি ক্ষেত ছাগলে খাওয়ার পর বিচার প্রার্থী হওয়ায় ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন ক্ষিপ্ত হয়ে পূর্ব আক্রোশে তাদের উপর হামলার চালায়। তারা শাহিন আহমদ হত্যাকান্ডের মূল মদদদাতা নাজিম উদ্দিন সহ হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করার দাবী জানান।

সংঘর্ষে নিহত শাহিন আহমদের হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে বলে থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানিয়েছেন এবং ইতিমধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান।


শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়