Saturday, July 8

কানাইঘাটে সড়কগুলোর বেহাল দশা,প্রকল্পের কাজে অনিয়ম!


নিজস্ব প্রতিবেদক:

কানাইঘাট উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো বেহাল অবস্থা বিরাজ করায় এবং সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক প্রকল্পের কাজে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে সরব প্রতিবাদ। 

ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতাকর্মী বিগত প্রায় ৫ বছরে সরকারের বিভিন্ন দফতর ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব হাফিজ আহমদ মজুমদারের মাধ্যমে উন্নয়ন মূলর্ক কর্মকান্ড বাস্তবায়নে একক ব্যক্তির আদিপত্য ও প্রকল্পের কাজে হরিলুট এবং রাস্তা-ঘাটের বেহাল দশার চিত্র তুলে ধরে ফেসবুকে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন সচেতন মহল থেকে শুরু আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। 

বিশেষ করে জনগুরুত্বপূর্ণ কানাইঘাট-চতুল-দরবস্ত সড়কের বেহাল অবস্থা বিরাজ করায় এবং পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো ভেঙেচুরে বিশাল বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়ে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারন করায় সাধারণ জনসাধারনের মধ্যে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী জানান। তারা বলেছেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব হাফিজ আহমদ মজুমদার এলাকা বিমুখ হওয়ায় বিগত প্রায় ৫ বছরে এমপি’র বরাদ্দকৃত কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড দলের নেতাকর্মীদের পাশ কাটিয়ে করার কারনে দলের নেতাকর্মীরা কোথায় এমপি’র উন্নয়নের কাজ হচ্ছে তা জানছেন না। এসব উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের কমিশন বাণিজ্য ও ভাগ-বাটোয়ারা, অনিয়ম-দুর্নীতির কারনে মাঠ পর্যায়ে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড দৃশ্যমান হচ্ছে না। 

২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে সংশোধিত উন্নয়ন বাজেটে ‘ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন সহায়তা’ খাতের আওতায় স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ হাফিজ আহমদ মজুমদারের মাধ্যমে গাছবাড়ী বোরহান উদ্দিন রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গনকৃত অংশে বেডসফিলিং বাবদ ১০ লক্ষ টাকা, গাছবাড়ী নয়াগ্রাম মাসুকের বাড়ি হইতে পূর্বমূখী রাস্তা উন্নয়ন ৫ লক্ষ টাকা এবং নিজ রাজাগঞ্জ গ্রামের আরসিসি রাস্তার পাশে শফিক উদ্দিনের বাড়ি থেকে পূর্বমূখী রাস্তার ড্রেন নির্মাণ ৩ লক্ষ টাকা, উপজেলার অসহায় ও দুস্থ জনসাধারণের মধ্যে ডেউটিন সরবরাহ ১০ লক্ষ টাকা, মুলাগুল কান্দলা নয়াবাজারের বিভিন্ন অংশে পানি নিষ্পাশনের জন্য রিংপাইপ স্থাপন ৪ লক্ষ টাকা, তালবাড়ী লক্ষীপুর গ্রামের আব্দুল ওয়াহাবের দোকানের সম্মুখ হইতে নতুন মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা উন্নয়ন ৩ লক্ষ টাকা, ভবানীগঞ্জ গ্রাম জামে মসজিদ রাস্তার দক্ষিণ অংশের উন্নয়ন ৩ লক্ষ টাকা এবং কুওরঘড়ি শ্রী শ্রী বিষহরি মাতার মন্দির গীতা স্কুলের উন্নয়ন ২ লক্ষ টাকা সহ মোট ৪০ লক্ষ টাকার রক্ষণাবেক্ষনের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এসব বরাদ্দের মধ্যে সম্প্রতি গাছবাড়ী বোরহান উদ্দিন সড়কের ভাঙ্গা অংশে নিম্ন মানের ভাঙা ইট ও বালু ফেলে কাজ করা হলেও অধ্যবধি পর্যন্ত বরাদ্দকৃত অন্যান্য প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি। এসব উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করার জন্য উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তরকে দেয়া হয়েছে। এসব প্রকল্পের অনেক কাজ এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন না হওয়ার কারনে টাকা তসরুফ করা হচ্ছে বলে ফেসবুকে ভাইরাল করা হচ্ছে। 

এ নিয়ে উপজলো প্রকৌশলী আবু হানিফা’র সাথে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কথা বললে তিনি কাজের কোন কার্যাদেশ দেখাতে পারেননি। অনেক প্রকল্পের কাজ এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে, তিনি বলেন চলতি মাসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হবে। 

গত কয়েক দিন থেকে রাস্তা-ঘাটের বেহাল দশার চিত্র এবং উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের অনিয়ম-দুর্নীতি তথ্য তুলে ধরে সাথে এমপি হাফিজ মজুমদার, এমপির কাজ দেখাশোনার কাজে নিয়োজিত সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মস্তাক আহমদ পলাশ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন চৌধুরী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র লুৎফুর রহমানের ছবি জুড়ে দিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ ঝাড়ছেন জনসাধারণ থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ সহ সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাকর্মীরা। এতে ফেসবুক পোস্টে নেতিবাচক মন্তব্য করা হচ্ছে। 

এ ব্যাপারে সিলেট-৫ আসনের সাংসদ হাফিজ আহমদ মজুমদারের সাথে মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সাথে কথা বলা যায়নি। 

কানাইঘাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন চৌধুরীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সরকারের উন্নয়ন ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব হাফিজ মজুমদারের বরাদ্দকৃত অর্থের কাজ যাতে সঠিকমতো হয় তিনি সব-সময় এ নিয়ে সমন্বয় কমিটিতে কথা বলে থাকেন। তারপরও উন্নয়ন মূলক কাজে অনিয়ম দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতার অভিযোগ যেহেতু উঠেছে তা সঠিকভাবে তদন্ত করে দেখার জন্য বলেন। 



শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়