Wednesday, July 8

সংবাদ সম্মেলনে যা বললেন ইফজালের মা

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:
এমসি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র হাফিজ ইফজাল আহমদের মৃত্যুরহস্য নিয়ে অবশেষে মুখ খুলেছেন তার মা আছারুন নেছা। 

সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, ইফজালের মৃত্যুকে অপমৃত্যু বলে তিনি বিশ্বাস করেন না। দাবী, তাঁর ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। 

অধিকতর তদন্ত করে সন্তানের মৃত্যু রহস্য উদঘাটন করে খুনিদের চিহ্নিত করার দাবী জানিয়ে তিনি বলেন, শাহপরান থানায় দায়েরকৃত মামলাটি যেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অথবা অন্য কোন বিশেষায়িত সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হয়। তিনি এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান।  সিলেটের ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনারসহ আইনশৃংখলায় নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সকল দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ ও সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। 


আছারুন নেছা বুধবার (৮ জুলাই, ২০২০) দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। তাঁর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইফজালের চাচাতো ভাই ব্যাংকের চাকুরীজীবি গিয়াস উদ্দিন। 

এ সময় ইফজালের বোন নাছিমার ভাসুর ও শাহপরান থানায় দায়েরকৃত অপমৃত্যু মামলার বাদি আবুল হোসাইনও উপস্থিত ছিলেন।  

মূলত ইফজালের মায়ের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হলেও সেখানে আবুল হোসাইনের উপস্থিতিতে ভেতরে ভেতরে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।  কারণ ইফজালের বিষয়ে শুরু থেকে আবুলের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ এবং লোকজনের কাছে সমালোচিত হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে অনেক সময় হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেন আবুল হোসাইন। 

কানাঘুষা শুনা গেছে, ইফজালের মা যাতে স্বচ্ছন্দে ও সাবলীলভাবে কথা বলতে না পারেন সেই কারণে আবুল হোসাইন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেন। 

 ইফজালের মা আছারুন নেছা তাঁর আবেগঘন ও মর্মস্পর্শী বক্তব্যে বলেন, "যার যায় সে-ই বোঝে সন্তান হারানোর বেদনা। আমি আমার নাড়িছেঁড়া হৃদয়ের মানিক ইফজাল হত্যার বিচার চাইতে আপনাদের দ্বারস্থ হয়েছি। আমি চাই আমার কলিজার টুকরা সন্তান হত্যাকারিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। "


উল্লেখ্য, সিলেট নগরীর উপশহর ‘বি’ ব্লকের ১৮ নং রোডের ৩ নং বাসা বাহার মঞ্জিলে বোনের বাসায় থাকতো ইফজাল আহমদ। 

গত ২৫ জুন ২০২০ ইং তারিখ সকালে ওই ভবনের নিচে তার লাশ পাওয়া যায়। দাফন-কাফন শেষে ২৬ তারিখে শাহপরান থানায় এ নিয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়।  সেখানে বলা হয়েছে, রাতের কোন এক সময়ে বাইরে সাড়াশব্দ পেয়ে বের হয়ে কোনভাবে পড়ে গিয়ে ইফজালের মৃত্যু হতে পারে। 

এ প্রসঙ্গে ইফজালের মা বলেন, "এটা আমি বিশ্বাস করতে চাই না। " তিনি আরো বলেন, তাঁর অন্য ছেলেরা প্রবাসে থাকার কারণে মেয়ের ভাসুর আবুল হোসাইন অপমৃত্যুর এই আবেদন দাখিল করেন।  

তিনি বা তাদের বাড়ির পক্ষ থেকে আবুল হোসাইনকে যেভাবে বলে পাঠানো হয় থানায়, পরবর্তীতে দেখা যায় অপমৃত্যু মামলায় তাদের কথার কোন প্রতিফলন নেই।  

আবুল হোসাইনকে যখন এই বিষয়ে সাংবাদিকরা বিভিন্ন প্রশ্ন করেন, তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি। বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করেন। 

ইফজাল আহমদের বন্ধু-সহপাঠীরা, পাড়া-প্রতিবেশি-গ্রামবাসী-এলাকাবাসী, কানাইঘাট উপজেলার মানুষজন এবং অন্য অনেকেও এই মৃত্যুকে হত্যাকান্ড মনে করে বিচার দাবি করছেন। কানাইঘাট উপজেলাকেন্দ্রিক বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে সোচ্চার অনেকে। ইফজালের কলেজের সহপাঠী ও শিক্ষকেরা, এলাকাবাসী এবং আরো বিভিন্ন-ফোরাম হত্যার প্রতিবাদে এবং বিচার দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ইফজালের মা।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়