Tuesday, July 7

কানাইঘাটে সুরমা নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকা থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযোগ দাখিল

নিজস্ব প্রতিবেদক:  
কানাইঘাট উপজেলার রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের সুরমা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গন কবলিত বৃহত্তর তালবাড়ি এলাকার বিভিন্ন গ্রামের তীরবর্তী এলাকা থেকে শক্তিশালী ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের ঘটনায় এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। 

অবৈধভাবে কয়েকটি ড্রেজার দিয়ে প্রতিদিন ভয়াবহ ভাঙ্গন কবলিত রাজাগঞ্জ সুরমা নদীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করা হলেও এ ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ধরনের বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে গণস্বাক্ষর সম্বলিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। 

আজ মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের বরাবরে লিখিত অভিযোগে এলাকাবাসী উল্লেখ করেন, কানাইঘাটের ৯নং রাজাগঞ্জ ইউনিয়ন নদী তীরবর্তী একটি ইউনিয়ন। এলাকাটি নদী তীরবর্তি হওয়ায় প্রতি বছর বর্ষামৌসুমে নদীর করাল গ্রাসে হারিয়ে যায়, শত-শত বাড়িঘর, মসজিদ-মাদ্রাসা, মন্দির-স্কুল, হাট-বাজার ও মানুষ চলাচলের রাস্তা। 

সরেজিমনে মানুষের কষ্টের চিত্র দেখে সাবেক সংসদ সদস্য সেলিম উদ্দিন নদীতে ব্লক ফেলার জন্য একাধিক আবেদন করেন মন্ত্রনালয়ে, যাহা এখনো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। 

কিন্ত বিগত কয়েক বছর থেকে আমাদের পার্শ্ববর্তী বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার অর্থলোভী একটি চক্র কানাইঘাট উপজেলার তথাকতিত স্বার্থন্বেসী মহলের কতিপয় দুই একজন ব্যক্তিকে প্রলোভন দেখিয়ে কোন রকম সরকারি লীজ বা অনুমতি ছাড়াই ইউনিয়নের সুরমা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গন কবলিত ওয়ার্ডের দাওয়াদারী, হামিদপুর, দলইচটি, কোনাগ্রাম, লক্ষীপুর ও তালবাড়ি এলাকার সুরমা নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজিং করে হাজার-হাজার ঘণফুট বালু উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে। 

স্থানীয় জনসাধারণ বালু উত্তোলনে বাধা দিলে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও অস্ত্রের ভয় সহ, এমনকি কখনো-কখনো অমানুষিক নির্যাতন করা হয়ে থাকে। ফলে আমাদের নদীর তীরবর্তি ঘরবাড়ি, কবরস্থান, মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা, হাট-বাজার নদীর গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে।


অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার কতিপয় ব্যক্তিরা সুরমা ৭নং ওয়ার্ডের দাওয়াদারী গ্রামের পাশে সুরমা নদী থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার ঘণফুট বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার লোকজন কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ বলে জানান। 

পরে স্থানীয় কয়েক হাজার জনসাধারণ তাদের বালু উত্তোলনে বাধা দিলে তারা বিভিন্ন রকম হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। 

বিষয়টি  কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করলে তিনি সরেজমিনে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের তফসিলদারকে পরিদর্শনে পাঠান। 

এছাড়া কানাইঘাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। অবৈধ বালু উত্তোলনাকরীদের পরে তফসিলদার ও পুলিশ যৌথ ভাবে বালু উত্তোলনে বাধা নিষেধ প্রদান করে যান। 

কিন্তু বালু উত্তোলনকারীরা উল্টো তফসিলদার সহ থানার পুলিশকে গালিগালাজ করে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। রাজাগঞ্জ এলাকার সুরমা নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন দ্রুত বন্ধে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।

কানাইঘাট নিউজ ডটকম/০৭ জুলাই ২০২০    

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়