Wednesday, February 5

কানাইঘাটের সীমান্তবর্তী শিক্ষার্থীদের আলোর প্রদীপ কাড়াবাল্লা বিদ্যা নিকেতন

নিজাম উদ্দিন:
কানাইঘাট লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকার একমাত্র মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কাড়াবাল্লা বিদ্যা নিকেতন নানা প্রতিকূলতা কাটিয়ে শিক্ষার দিক থেকে দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সুযোগ্য সভাপতি ফখরুজ্জামান চৌধুরী সহ কমিটির অন্যান্য সদস্য, জনপ্রতিনিধি সহ স্কুলের অভিভাবকরা প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। পাঠদান কার্যক্রম আরো প্রসারিত করার লক্ষ্যে সরকারিভাবে বর্তমানে শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে ৮৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৪ তলাবিশিষ্ট একাডেমিক ভবনের কাজ চলছে। এছাড়া ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের আওয়তায় বর্তমান বছর থেকে ধাপে ধাপে ৫৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামোগত উন্নয়ন সহ শিক্ষাকার্যক্রম এগিয়ে নিতে ৪ জন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে ৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওয়াশ ব্লকের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফখরুজ্জামান চৌধুরী ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সেলিম চৌধুরী জানিয়েছেন। শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে চললেও অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিক থেকে এখনো প্রতিষ্ঠানটি উপজেলার অন্যান্য মাধ্যমিক পর্যায়ে পিছিয়ে রয়েছে। একেবারেই অরক্ষিত বিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষা কার্যক্রম সুরক্ষা রাখতে প্রতিষ্ঠানটির সীমানা বাউন্ডারী নির্মাণ এবং শিক্ষার্থীদের বিশুদ্ধ পানি পানের জন্য সরকারি উদ্যোগে একটি ডিপ-টিউবওয়েল বরাদ্ধের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকবৃন্দ। দিন দিন শিক্ষার দিক থেকে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম বিকাশিত হওয়ায় এলাকার সবাই এজন্য স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফখরুজ্জামান চৌধুরী নানা উদ্যোগের প্রশংসা করছেন। তারা বলছেন স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার পর এ প্রতিষ্ঠানকে শিক্ষার দিক থেকে এগিয়ে নিতে নানা ধরনের উদ্যোগের পাশাপাশি নিজে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে সকলের সহযোগিতায় শিক্ষকদের বেতন ভাতার সম্মানী টাকা উত্তোলন সহ প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত পরিশ্রম করায় কাড়াবাল্লা বিদ্যা নিকেতন দূর্গম এলাকার শিক্ষার্থীদের মাঝে আশার প্রদীপ জালাতে সক্ষম হয়েছে। জানা যায় ২০০২ সালে এলাকাবাসীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এ স্কুলের শিক্ষাকার্যক্রম শুরু হলেও নানা ধরনের প্রতিকূলতার কারণে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। ২০১৩ সালে ফখরুজ্জামান চৌধুরী স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির এগিয়ে চলার পথ সুগম হয়। শিক্ষক সংকট থাকার পরও অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এমপিও ভূক্ত এ প্রতিষ্ঠানটি ২০১৬ সাল থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মানবিক ও বিজ্ঞান শাখায় পাঠদান চালু করা হয়। মাত্র এমপিও ভূক্ত দুইজন শিক্ষক ও অনারারী আরো ৮ জন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নিষ্ঠার সাথে পাঠদান করে যাচ্ছেন। তাদের নি¤œতম সম্মানী ভাতা এলাকার গরীব অভিভাবক সহ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফখরুজ্জামান চৌধুরী চাঁদা তোলে বহন করছেন। গত কয়েক বছর থেকে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে পরীক্ষার্থীরা উত্তীর্ণ হয়ে আসছেন। বর্তমানে উক্ত স্কুলে সীমান্তবর্তী দূর্গম এলাকায় ৪২৫ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছেন। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফখরুজ্জামান চৌধুরীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন দূর্গম সীমান্তবর্তী এলাকার কয়েকটি গ্রামের একমাত্র মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে কাড়াবাল্লা বিদ্যা নিকেতন। স্কুলের উন্নয়ন সহ সার্বিক শিক্ষাকার্যক্রম এগিয়ে নিতে সরকারের পাশাপাশি আমাকে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবক, জনপ্রতিনিধি সহ সবাই আমাকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। প্রতিষ্ঠানটির সীমা বাউন্ডারী নির্মাণ করা অত্যন্ত জরুরী। এক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সহ স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি। কানাইঘাটের মধ্যে এ প্রতিষ্ঠানকে শিক্ষার দিক থেকে একটি সেরা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার জন্য তার স্বপ্ন রয়েছে বলে ফখরুজ্জামান চৌধুরী জানান। 

কানাইঘাট নিউজ ডটকম/০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

শেয়ার করুন

1 comment:

  1. এরকম সীমান্তবর্তী/ দুর্গম এলাকার শিক্ষা ও উন্নয়নের উপর অনুসন্ধানী রিপোর্ট আরো চাই।

    ReplyDelete

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়