Tuesday, October 22

১৫তম স্প্যান বসল পদ্মা সেতুতে, দৃশ্যমান ২২৫০ মিটার

পদ্মাসেতুর ১৫ তম স্প্যান ‘৪-ই’ বসানো হয়েছে ২৩ ও ২৪ নম্বর পিলারের উপর। কয়েকদিনের চেষ্টায় অবশেষে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ২২৫০ মিটার । একের পর এক স্প্যান বসিয়ে দৈর্ঘ্য বেড়ে চলছে পদ্মাসেতুর। গাড়ি ও ট্রেনে চড়ে পদ্মা পাড়ি এখন ধীরে ধীরে বাস্তবে রূপ নেওয়ার পথে। চতুর্দশ স্প্যান বসানোর তিন মাস ২৩ দিনের মাথায় স্থায়ীভাবে বসলো এই পঞ্চদশ স্প্যানটি। মঙ্গলবার সকাল ১২ টা ১০ মিনিটের দিকে জাজিরা প্রান্তে সেতুর ২৩ ও ২৪ নম্বর পিলারের উপর স্প্যানটি বসানোর মাধ্যমে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ২২৫০ মিটার।
সকাল থেকেই স্প্যান বসানোর কার্যক্রম শুরু হয়। ধূসর রঙের ১৫০ মিটার দৈঘ্যের আর ৩ হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যানটিকে বহন করে তিন হাজার ৬০০ টন ধারণক্ষমতার ‘তিয়ান ই’ ক্রেন। জানা যায়, দুই পিলারের মধ্যবর্তী সুবিধাজনক স্থানে এনে ভাসমান ক্রেনটিকে নোঙর করা হয়। এরপর পজিশনিং করে ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে স্প্যানটিকে তোলা হয় পিলারের উচ্চতায়। রাখা হয় দুই পিলারের বেয়ারিং এর উপর। স্প্যান বসানোর জন্য উপযোগী সময় এবং সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় প্রকৌশলীরা স্প্যানটি বসাতে সক্ষম হন।
প্রকৌশল সূত্রে জানা যায়, বর্ষা মৌসুম ও নাব্যতা সংকটের কারণে ৩ মাসের বেশি সময় ধরে পদ্মাসেতুতে কোনো স্প্যান বসানো সম্ভব হয়নি। ড্রেজিং করেও অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা যাচ্ছিল না। কয়েকদিন আগে স্প্যান বসানোর কার্যক্রম শুরু হলেও নাব্যতা সংকট বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ড্রেজিং করে পলি অপসারণ করেও অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব হচ্ছিল না। অবশেষে নানা বাধা বিপত্তি পেরিয়ে স্প্যানটি বসানো সম্ভব হয়। পদ্মাসেতু। এর আগে সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকালে জাজিরা প্রান্তের চর এলাকা থেকে ‘৪-ই’ স্প্যানকে ভাসমান ক্রেনের মাধ্যমে ২৮ ও ২৯ নম্বর পিলারের সামনে নোঙর করে রাখা হয়েছে।
পদ্মাসেতুর প্রকৌশল সূত্রে জানা যায়, ড্রেজিং করেও স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না। পলি অপসারণ করার ১-২ ঘণ্টা পরেই আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসছে নদীর তলদেশ। ধূসর রংয়ের ১৫০ মিটার দৈঘ্যের ও ৩ হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যানটিকে ৩ হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ‘তিয়ান ই’ ক্রেন বহন করে আনতে নাব্যতা সংকট বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ইতোমধ্যে পদ্মাসেতুর আরও ৩টি স্প্যান প্রস্তুত হয়ে আছে। কিন্তু নাব্যতা সংকটের কারণে স্প্যান গুলো বসাতে দেরি হচ্ছে। সেতুর ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩ নম্বর পিলারের ওপর চারটি স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা আছে চলতি বছরের মধ্যে। সর্বশেষ ২৯ জুন মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে ১৫ ও ১৬ নম্বর পিলারের ওপর বসে চতুর্দশ স্প্যান ৩ সি।
জানা যায়, পুরো সেতুতে ২ হাজার ৯৩১টি রোডওয়ে স্ল্যাাব বসানো হবে। আর রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে ২ হাজার ৯৫৯টি। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সেতু নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।
সূত্র:বিডি লাইভ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়