Thursday, June 20

যেভাবে উদ্ধার হলো সোহেল তাজের ভাগনে

চট্টগ্রাম থেকে নিখোঁজের ১১দিন পর সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজের ভাগনে সৈয়দ ইফতেখার আলম সৌরভকে ময়মনসিংহের তারাকান্দা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভোরে উদ্ধারের পর সকাল পৌনে ৯টার দিকে নিজ কার্যালয়ের সামনে এক প্রেস ব্রিফিং করেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন।

তিনি বলেন, ভোর ৫টা ২০ মিনিটে একটি ফোনে চট্টগ্রাম অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের ডিসি আমাকে ফোন করে জানান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজের ভাগ্নে সৌরভকে কে বা কারা তারাকান্দা উপজেলার মধুপুর বটতলা জামিল অটো রাইস মিলের সামনে ফেলে গেছে। খবর পেয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তাকে উদ্ধার করে আমার বাংলোতে নিয়ে আসি।
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে সৌরভের কাছে জানতে চাওয়া হয় তিনি কীভাবে এখানে এসেছেন, কারা এখানে ফেলে রেখে গেছে। সৌরভ জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তিনি পরে কথা বলবেন। পরে সকাল ৮টার দিকে ডিবি পুলিশের মাধ্যমে তাকে পরিবারের কাছে ঢাকার বনানীর বাসায় পাঠানো হয়। তিনি সুস্থ্য ও অক্ষত আছেন বলেও জানান পুলিশ সুপার।
জামিল অটো রাইস মিলের ম্যানেজার কাঞ্চন ও ফোরম্যান সমির জানান, আমরা ভোরে ঘুমিয়েছিলাম। এসময় কান্নাকাটির শব্দ শুনতে পাই। ঘর থেকে বের হয়ে দেখি এক লোককে গাড়ি থেকে নামিয়ে রাস্তার পাশে ফেলে দ্রুত গাড়ি নিয়ে চলে গেল কিছু লোক। লোকটি অনেকটা বিপর্যস্ত। সে জানায় তার নাম সৌরভ। সে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজের ভাগনে। এ কথা বলার পর আমি বিষয়টি মিল মালিক হিজবুল বাহার খান বাচ্চুকে জানাই। মিল মালিক বিষয়টি পুলিশকে জানানোর কথা বলেন। এ সময় আমরা উনাকে নিয়ে মিলের ভেতরে নিয়ে একটি চেয়ারে বসাই। পরে সৌরভ তার পরিবারের একটি মোবাইল নাম্বার দিলে ম্যানেজার কাঞ্চন বিষয়টি পরিবারকে জানান। পরিবার পরে বিষয়টি চট্টগ্রাম অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটকে জানায়।
এর আগে, গত ৯ জুন চট্টগ্রাম থেকে ‘নিখোঁজ’ হন সৌরভ। ২৮ বছর বয়সী এই যুবক বন্দর নগরীর পাঁচলাইশ এলাকায় বাবা-মার সঙ্গে থাকেন; ঢাকায় ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভাসির্টিতে পড়াশোনার পাশাপাশি চট্টগ্রামের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন তিনি।
সৌরভের পরিবারের অভিযোগ, ঢাকার এক ব্যবসায়ী মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কের জের ধরে তাকে অপহরণ করা হয়। গত সোমবার সৌরভের মা সৈয়দা ইয়াসমিন আরজুমান ও বাবা সৈয়দ মো. ইদ্রিস আলমকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন সোহেল তাজ।
গত সোমবার সৌরভের মা সৈয়দা ইয়াসমিন আরজুমান ও বাবা সৈয়দ মো. ইদ্রিস আলমকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন সোহেল তাজ।
সৈয়দা ইয়াসমিন আরজুমান ওই সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত ৮ জুন দুপুরে সৌরভের কাছে একটি ফোন আসে। তাকে চাকরি দেয়ার কথা বলে সব কাগজপত্র তৈরি রাখতে বলা হয়। পরদিন বেলা ৩টায় আবার ফোন করে সৌরভকে চট্টগ্রাম মিমি সুপার মার্কেটের আগোরার সামনে থাকতে বলা হয়।
সন্ধ্যা ৭টায় চাকরির প্রয়োজনীয় কাগজ, পাসপোর্ট দিতে গিয়ে গিয়ে ফিরে আসে নাই। তার মোবাইল বন্ধ বলে জানান সৈয়দা ইয়াসমিন আরজুমান।
ওই ব্যবসায়ী মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে এর আগেও কয়েকবার সৌরভকে তুলে নিয়ে গিয়ে হুমকি দেয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করা হয় সেই সংবাদ সম্মেলনে।
বুধবার দুপুরের দিকে ফেসবুক লাইভে সোহেল তাজ বলেন, মঙ্গলবার রাত ২টা ২০ মিনিটে সৈয়দ ইফতেখার আলম সৌরভের ফোন নম্বর থেকে তার মায়ের নম্বরে ফোন এসেছিল। লাইভে তার সঙ্গে ছিলেন সৌরভের মা সৈয়দা ইয়াসমিন আরজুমান ও বাবা মো. ইদ্রিস আলী।
তার প্রশ্নের জবাবে সৌরভের বাবা-মা বলেন, রাত ২ টা ২০ মিনিটে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে সৌরভের মা ইয়াসমিনের নম্বরে ফোন আসে। কিন্তু অন্য প্রান্ত থেকে কেউ কথা বলেনি। ছিল সুনসান নীরবতা। নম্বরটি খোলা আছে এবং অনবরত তারা সৌরভের নম্বরে ফোন করলেও কেউ ধরছেন না। তারা খুদে বার্তাও পাঠান। 
 সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়