Wednesday, May 22

রোজায় ইতিকাফের অফুরন্ত সওয়াব

মাওলানা ওমর ফারুক::

আরবি ‘ইতিকাফ’ শব্দের অর্থ অবস্থান করা, বসা, বিশ্রাম করা, সাধনা করা, ধ্যান করা ইত্যাদি। 

রমজানের ২১তম রাত হতে ২৯তম রাত পর্যন্ত সাংসারিক যাবতীয় ঝামেলা হতে মুক্ত হয়ে মসজিদে ইবাদতের উদ্দেশ্যে অবস্থান করাকে ইতিকাফ বলে।
রমজানের শেষ ১০ দিন মসজিদে ইতিকাফ করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা-ই-কিফায়া। মহল্লার কোনো একজন ব্যক্তি ইতিকাফ পালন করলে সবার পক্ষ হতে আদায় হয়ে যায়। কেউ যদি ইতিকাফ না করেন তবে সবাই সুন্নাত ত্যাগের জন্য দায়ী থাকবে।
ইতিকাফের ফজিলত সম্পর্কে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ইতিকাফকারী সব ধরনের গোনাহর কাজ থেকে বিরত থাকে এবং তার নামে লেখা হয় সব নেক কাজ সম্পাদনকারীর মতো সওয়াব। অর্থাৎ ইতিকাফ না করলে তার পক্ষে যেসব নেক কাজের সুযোগ ছিল, এখন সেগুলো করতে না পারলেও তাকে সওয়াব দেয়া হবে।
ইতিকাফ তিন ধরনের, ওয়াজিব, সুন্নাত ও নফল। মান্নতের কারণে ইতিকাফ ওয়াজিব হয়। সেটার পরিমাণ কমপে ২৪ ঘণ্টা হতে হয় এবং ইতিকাফের মান্নতের সঙ্গে রোজা রাখাও ওয়াজিব হয়ে যায়। তাই যে কয় দিন ইতিকাফের মান্নত করবে, সে কয় দিন রোজার সঙ্গেই ইতিকাফ করতে হবে।
সুন্নাত ইতিকাফ হয় রমজানের শেষ দশকে। রমজানের ২০ তারিখের সূর্যাস্তের আগ থেকে তা শুরু করতে হয়। আর তা শেষ হয় রমজান শেষ হলে। অর্থাৎ ২৯ তারিখে চাঁদ দেখা গেলে বা ৩০ তারিখ পূর্ণ হলে।
মহানবী হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম যেহেতু প্রতি বছর রমজানের শেষ দশক অবশ্যই ইতিকাফে অতিবাহিত করতেন এবং এক বছর তা ভঙ্গ করার কারণে পরের বছর ২০ দিন ইতেকাফ করেছিলেন, এ জন্য প্রতিটি মসজিদে ইতিকাফ করা সন্নাতে মুয়াক্কাদা ‘আলাল কিফায়াহ’। অর্থাৎ কমপক্ষে একজন মুসল্লির ইতিকাফ দ্বারাই মহল্লার সবাই দায়মুক্ত হবে। পক্ষান্তরে কেউ ইতিকাফ না করলে ওই মসজিদের আওতাধীন সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে। 
নফল ইতিকাফের সময়সীমা নির্ধারিত নেই। আধা দিন এমনকি কয়েক ঘণ্টার জন্যও নফল ইতিকাফ হতে পারে। সে কারণে ওয়াজিব ও সুন্নাত ইতিকাফের ব্যাপারে রোজা শর্ত হলেও নফল ইতিকাফের ব্যাপারে রোজা শর্ত নয়। 
প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) পবিত্র মাহে রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতেন। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করবে, সে ব্যক্তি দুটি হজ ও দুটি ওমরাহর সমান সওয়াব হাসিল করবে।’ (বায়হাকি) 
মহানবী (সা.) আরো বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইবাদতের নিয়তে সওয়াবের আশায় ইতিকাফ করবেন তার যাবতীয় গুনাহ মাফ হয়ে যায়।’ (দায়লামী) রাসূল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সারাজীবনে একদিন হলেও ইতিকাফ করবেন, কিয়ামতের দিন দোজখ তার কাছ থেকে ১৫শ’ বছর পথ দূরে থাকবে।’

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়