Tuesday, April 2

কানাইঘাটে পানির জন্য কাঁদছে সুরমা

মাহবুবুর রশিদ ::

“নদীর সঙ্গে দেশের মানুষের গভীর মিতালী” কিন্তু কথাটির সাথে আজ আর পুরোপুরি মিল খোঁজে পাওয়া যায়না। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে প্রিয় নদ-নদীগুলো। তেমনি এক খরস্রোতা নদীর নাম হচ্ছে সুরমা নদী। বাংলাদেশের প্রধান নদীগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং দীর্ঘতম । এক সময়ের খরস্রোতা নদী নাব্যতা হারিয়ে ভরাট হয়ে এটি মরা খালে পরিণত হয়েছে। মরূভূমির মতো চারদিকে ধু ধু বালুচর জেগে উঠেছে।


কানাইঘাট উপজেলায় প্রবাহিত সুরমা নদী তার পুরোনো যৌবন হারিয়ে মরা খালে পরিণত হওয়ায় সে নদী পার হতে এখন আর নৌকার প্রয়োজন হয়না, অনেকটা হেঁটেই পার হওয়া যায়। নদীর কোন কোন অংশে হাঁটু পানি বা তার চেয়ে ও কম। বর্ষা মৌসুমে যে নদী দিয়ে চলে বড় বড় লঞ্চ, পাথরবাহী নৌকা, পালতোলা নৌকা। সে নদী দিয়ে এখন ডিঙ্গি নৌকা ও চলে খুব সীমিত। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম শেষ হয়ে শুষ্ক মৌসুম শুরু হলেই কমে যায় সুরমার পানি, ভরাট হয়ে যায় নদীর তলদেশ আটকা পড়ে শত শত নৌকা। বেকার হয়ে পড়ে এসব নৌকার শ্রমিকরা। উপজেলা সদরের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গার নৌপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন হাটবাজারের মালপত্র সরবরাহ করতে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। ফলে ব্যবসায়ীরা অসুবিধার সম্মুখিন হন।


সুরমা নদীর বিভিন্ন অংশে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে নদীর দুপাশে জেগে উঠেছে বিশাল বিশাল চর। এসব চরে কেউ শাক-সবজি চাষ করছে আবার কেউ খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করছে । সুরমা তীরবর্তী উপজেলার গোসাইনপুর গ্রামের বিলাল উদ্দিন জানান,নদীর নিচের অংশ (তলদেশ) ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে পানির ধারণ ক্ষমতা কমে যায় । যার কারণে বর্ষা মৌসুমে পানি সামান্য বাড়লেই আমাদের ঘর বাড়ি ডুবে যায় এবং পাশ্ববর্তী এলাকায় বন্যা দেখা দেয় । 

নদী তীরবর্তী এলাকার আরেক বাসিন্দা জানান,শুষ্ক মৌসুমে,সুরমা নদীর গভীরতা  খালের চেয়েও আরো কমে যায়,যেন মরা খালে পরিণত হয়ে যায় সুরমা । মরুভূমি হয়ে যাওয়া সুরমাকে পরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং করে খনন করলে পুরনো নাব্যতায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে অনেকের ধারণা।

কানাইঘাট নিউজ ডটকম/২ এপ্রিল ২০১৯/এমআর

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়