কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:
খেয়াল করেছেন কি যে আপনার সন্তান অতি আধুনিক হয়ে বেড়ে উঠছে? তার অবসর মানেই হাতে স্মার্টফোন বা ট্যাব। কখনোবা সারাদিন টিভি নিয়ে বসে থাকে। এতে তার বাইরের জগত নিয়ে আগ্রহ কম। জানার পরিধিও কমে যাচ্ছে। পড়তে বসারও মন নেই। প্রযুক্তিপ্রেম তাদের একেবারে গিলে ফেলছে। এটা তো পুরোটাই তাদের দোষ না। এই অভ্যাসগুলো গড়ে তোলার পিছনে অভিভাবকরাও অনেকটা দায়ী। তাদেরকে সময় না দেওয়া, ছোট থাকতেই নানা বাহানায় তার হাতে ফোন তুলে দিলে সে তো এভাবেই অভ্যস্ত হবে। এ থেকে বাঁচতে তাকে আমরা তার কিছু সুঅভ্যাস গড়ে তুলে দিতে পারি। শিশুদের কল্পনাশক্তি আর মনের বিকাশ ঘটাতে গেলে মনে রাখবেন বইয়ের বিকল্প নেই। অবসরযাপন আর জানার স্পৃহা বাড়ানোর জন্য বইকে বেছে নিন। তাই বিভিন্নভাবে আপনার সন্তানের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন আজ থেকেই। সেটা নিয়েই থাকছে আজকের আলোচনা।
১. আপনার ছোট সন্তানকে ছোট থেকেই আপনি কতো উপহারই না কিনে দেন। সেই উপহারের মধ্যে রাখুন বই। ছোট থাকতেই তাকে বিভিন্ন বইয়ের সঙ্গে পরিচিত করুন। এখন তো ছোটদের বিভিন্ন রঙিন বই পাওয়া যায়। আপনার সন্তানটি যখন একটু করে কথা বলা শিখবে, নতুন কিছু চিনবে তখন ফুল, ফল বা জীবজন্তুর ছবির বই এনে দিন তার হাতে। এতে করে শিশু বইয়ের ছবির সঙ্গে বাস্তবের মিল খুঁজতে শিখবে।
২. এই বইগুলোর মধ্যে সে যখন কোনো ছবি দেখবে তখন তাকে সেই জিনিসটি বাস্তবে দেখান। হতে পারে সেটি কোনো খেলনা পুতুল। আবার শিশুকে যখন কোথাও বেড়াতে নিয়ে যাবেন তখন পাখি, ফুল, প্রাণী চেনাতে চেষ্টা করুন। এতে তারা তাড়াতাড়ি শিখবে।
৩. ছোটবেলা থেকেই শিশুর মধ্যে ঠিক আর ভুল বিচার করার ক্ষমতা, দায়িত্ববোধের ভিত্তি তুলে দিন। এর জন্য তাকে ছোটদের গল্পের বই পড়তে দিন। যেকোনো গল্পের উদাহরণ দিয়ে বোঝান। সন্তানকে নীতিগল্পগুলো বেশি করে শোনান। এতে করে দেখবেন সে বেশ সুঅভ্যাস শিখতে শুরু করবে। অন্যকেও উদ্ভুদ্ধ করবে।
৪. আপনার শিশু অবশ্যই কার্টুন পছন্দ করে। যে কার্টুন তার বেশি পছন্দ তার বইগুলো বাজারে খুঁজে দেখুন। কার্টুন চরিত্রের বইগুলো তাকে উপহার দিন। এতে বইয়ের প্রতি উৎসাহ বাড়বে। আবার বিভিন্ন যে রং করার ড্রইং বই পাওয়া যায়, সেগুলোও কিনে দিতে পারবেন। সে দেখবেন আঁকতে শিখবে।
৫. ছোট থেকেই মানুষ কৌতুহলী হয়। বড় হতে থাকলে সে নানা রকম প্রশ্ন শুরু করে। এই প্রশ্ন আর জানার আগ্রহ থেকেই বুঝবেন ওর আগ্রহ কিসে বেশি হচ্ছে। সেই মতো তাকে বই কিনে দিতে পারেন। হতে পারে সেটি বিজ্ঞান, গল্প বা ছবির বই। তবে জোর করে কিছু চাপিয়ে দেবেন না।
৬. তাকে পড়ার জন্য একটু আলাদা সময় নিন। এই ধরুন প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে গল্পের বই বা ছড়ার কোনো বই তাকে পড়ান। আর সে পড়তে না শিখলে আপনি পড়ে শোনান। এমন করতে পারেন যে প্রায়ই একই গল্প শুনিয়ে তার কাছ থেকেই মাঝেমাঝে গল্পটি শুনতে চান। এতে করে দেখবেন তার স্মরণশক্তি কতোটা তীক্ষ্ণ। কল্পনাশক্তি কতোটা সেটাও বুঝতে পারবেন।
৭. সন্তানকে আপনি মাঝে মাঝে বিভিন্ন বইয়ের দোকানে নিয়ে যান। সেখানে ও ইচ্ছেমতো বই দেখে বেছে কিনতে পারবে। তাকে কোনো লাইব্রেরির সদস্যও করে দিতে পারেন। সেখানে নিয়মিত পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠবে।
খবর বিভাগঃ
ফিচার
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়