নিজস্ব প্রতিবেদক:
কানাইঘাট দিঘীরপার ইউনিয়নের মাটিজুরা গ্রামে অবস্থিত সরকারি পুকুর পাড়ে অবস্থিত অনুমান ৭ লক্ষ টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রজাতির বড় ও মাঝারী প্রায় ২৫ টি গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে এলাকায় জনমনে ও স্থানীয় প্রশাসনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি গাছ লুটপাটের ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানা জানিয়েছেন।
সরেজমিনে রবিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, গত ২৯ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত একটানা সরকারি খাস খতিয়ানের উপর অবস্থিত একটি সরকারি পুকুরপাড় থেকে
স্থানীয় লন্তিরমাটি গ্রামের আবুল ফয়েজ চৌধুরীর পুত্র শাকিব চৌধুরীর নির্দেশে মাটিজুরা গ্রামের চিত্তন সুদ্র, নগেন্দ্র নম সুদ্র সহ গ্রামের কয়েকটি হিন্দু পরিবারের লোকজন এবং মাঝর গ্রামের মৃত নজুব আলীর পুত্র জইন আলী, জলিল আহমদ, জমির উদ্দিন গংদের নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জনের একটি চক্র গাছগুলো কেটে নিয়ে যায়। সরকারি গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার পর ঘটনাটি ধামা চাপা দেওয়ার জন্য একজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সহ কয়েকজন তৎপর রয়েছে বলে বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে এই চক্রটি হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকের কাছ থেকে প্রশাসনকে ম্যানেজ করার জন্য মোটা অংকের টাকা ভয়ভীতি দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে। সরকারি পুকুর পাড় থেকে ৩০ বছরের পুরুনো ১০টি বড় রেন্টি গাছ সহ বিভিন্ন প্রজাতীর প্রায় ৭লক্ষ টাকা মূলের গাছ কেটে নেওয়ার পর অনেক গাছের গুড়ি পর্যন্ত উপড়ে ফেলা হয়েছে গাছ কাটা ধামা চাপা দেওয়ার জন্য। সরকারি গাছ কেটে নেওয়ার সাথে জড়িতদের বাড়ীতে গিয়ে পাওয়া যায়নি। বাড়ীর মহিলারা জানিয়েছেন, গাছ তাদের পরিবারের লোকজন কেটেছেন না বুঝে তাই সবাই উপজেলা প্রশাসনে বিষয়টি সমাধান করার জন্য চলে গেছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছেন, মাটিজুরা গ্রামের হাওর এলাকায় অবস্থিত সরকারি পুকুরটি দীর্ঘদিন ধরে জেলা পরিষদ লীজ দিয়ে আসছে। সেই পুকুরের চারিদিকে অনেক মূল্যবান রেন্টি ও বেলজিয়াম সহ বিভিন্ন প্রজাতির কয়েক লক্ষ টাকা মূল্যের গাছ যারা ৪ দিন ধরে কেটে নিয়ে অন্যত্র বিক্রি সহ মূল্যবান গাছ আত্মসাৎ করেছে তারা সবাই চিহ্নিত। প্রশাসনের লোকজন তাদের নাম জানেন। এ ব্যাপারে দায়িদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন তারা। গাছ কাটার সাথে জড়িতদের বাড়ীর আঙ্গীনায়, পুুকুর ও জলাশয়ে অনেক গাছের টুকরা ফেলে রাখা হয়েছে। দামী গাছের টুকরাগুলো এসব জলাশয় পুকুরে ডুবিয়ে লুকিয়ে রাখা হয়েছে বলে অনেকে জানিয়েছে। গাছ কাটার সাথে জড়িত চিত্ত নমসুদ্র, নগেন্দ্র নমসুদ্র, ললিত নমসুদ্র, পুতুল নমসুদ্র জানিয়েছেন তারা না জেনে লন্তীরমাটি গ্রামের শাকিব চৌধুরী সহ কয়েকজনের নির্দেশে সরকারী পুকুরপাড়ে অবস্থিত ১৫/১৬ টি গাছ কেটেছেন। তাদের ভুল হয়ে গেছে বলে এ প্রতিবেদক কে জানিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানা ও সহকারী কমিশনার ভূমি লুসিকান্ত হাজং জানিয়েছেন, মাটিজুরা গ্রামের সরকারি খাস খতিয়ানের পুকুর পাড় থেকে কয়েক লক্ষ টাকার গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে জেনে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য স্থানীয় তহশীলদার কে সেখানে পাঠানো হয়েছে। গাছ কেটে নেওয়ার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে এব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তারা জানিয়েছেন।
কানাইঘাট নিউজ ডটকম/০৪ নভেম্বর ২০১৮
খবর বিভাগঃ
প্রতিদিনের কানাইঘাট
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়