Thursday, October 26

কানাইঘাটে লাঠি মিছিলের প্রতিবাদে তিন পরগনাবাসীর বিশাল সমাবেশ


নিজস্ব প্রতিবেদক: দলীয় কিছু নেতাকর্মীদের হাতে গত ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যার দিকে কানাইঘাট উত্তর বাজারস্থ আ’লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে বড়চতুল ইউপি আ’লীগের সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুবশ্বির আলী চাচাই আক্রান্তের ঘটনার প্রতিবাদে চতুল পরগনাবাসীর উদ্যোগে গত শুক্রবার ৯ পরগনার কানাইঘাট বাজারে স্বশস্ত্র লাঠি মিছিলের ঘটনার প্রতিবাদে কানাইঘাট বাজেরাজ, চাউরা ও সাতবাঁক পরগনাবাসীর ব্যানারে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় কানাইঘাট পূর্ব বাজারে বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করলে বিষয়টি শান্তিপূর্ণ ভাবে স্থানীয় প্রশাসন সহ বৃহত্তর জৈন্তিয়া ১৭ পরগনা ও কানাইঘাট ফালজুর সহ অন্যান্য স্বতন্ত্র পরগনার মুরব্বি ও জনপ্রতিনিধিরা বৃহস্পতিবার রাতে বাজেরাজ, চাউরা, সাতবাঁক ও চতুল পরগনার মুরব্বিয়ানদের সাথে পৃথক বৈঠকে বসলে উভয় পক্ষ সমূহ ঘটনা নিরপেক্ষ ভাবে শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির জন্য তাদের মতামত দিয়েছেন। সচেতন মহল মনে করেন, উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা নিরসন হবে। বৃহস্পতিবার তিন পরগনার উদ্যোগে আয়োজিত প্রতিবাদে সভাপতিত্ব করেন বাজেরাজ পরগনার বিশিষ্ট মুরব্বী শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম। ছাত্রনেতা নাজমুল ইসলাম হারুন ও শাহাব উদ্দিনের যৌথ পরিচালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বাজেরাজ, চাউরা ও সাতবাঁক পরগনাবাসীর বিশিষ্ট মুরব্বী সহ সর্বস্তরের জনসাধারণের উপস্থিতিতে বক্তব্য রাখেন, সাতবাঁক ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ইফজালুর রহমান, মাওঃ ইসমাইল আলী, মাও: সামছুল হুদা, সিলেট বানীর নির্বাহী সম্পাদক সাংবাদিক এম.এ হান্নান, সদর ইউপি চেয়ারম্যান মামুন রশিদ, জালাল আহমদ, আলা উদ্দিন মামুন, সিরাজুল ইসলাম খোকন, রফিক আহমদ, হাজী আব্দুল মালিক মহাজন, সাবেক কাউন্সিলার ফখর উদ্দিন শামীম, তোতা মিয়া, সাবেক ছাত্রনেতা জামাল উদ্দিন, কাউন্সিলার শরিফুল হক, বদরে আলম চৌধুরী বাবু, নিজাম উদ্দিন, মাসুক আহমদ, ইউপি সদস্য আব্দুন নুর, আলহাজ্ব শাব্বির আহমদ, কাউন্সিলর ইসলাম উদ্দিন, যুবনেতা ইসলাম উদ্দিন, ছাত্রনেতা আজমল হোসেন, রুহুল আমিন সহ অর্ধ শতাধিক নেতৃবৃন্দ। প্রতিবাদ সমাবেশে তিন পরগনার মুরব্বী ও যুব সমাজ তাদের বক্তব্যে বলেন, গত ১৯ অক্টোবর কানাইঘাট উপজেলা আ’লীগের একটি সভা শেষে বড়চতুল ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা মুবশ্বির আলী চাচাই কিছু দলীয় নেতাকর্মীদের হাতে অনাকাংখিত ভাবে আক্রান্ত হন। বিষয়টি তাৎক্ষণিক ভাবে দলীয় ভাবে নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হলেও মুবশ্বির আলী চাচাই ও তার সহযোগীরা কোন সাড়া না দিয়ে পরদিন শুক্রবার মুবশ্বির আলীর নেতৃত্বে চতুল পরগনার উশৃঙ্খল লোকজন সশস্ত্র লাঠি সোটা নিয়ে মিছিল সহকারে ৯ পরগনা কানাইঘাট বাজারে যে ত্রাস সৃষ্টি করে তা কোন অবস্থাতে অন্যান্য
পরগনার মানুষ মেনে নিতে পারেন না। বার বার মুবশ্বির আলী গংরা তুচ্ছা ঘটনা নিয়ে অন্যান্য পরগনার মানুষের উপর হামলা করে থাকে। উপজেলার শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট করার জন্য মুবশ্বির আলী চাচাইর নেতৃত্বে পরগনার ডাক দিয়ে বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সংঘঠিত হয় এতে করে শান্তি প্রিয় কানাইঘাট উপজেলা বাসী হেয়প্রতিপন্নের স্বীকার হন। শুক্রবারের স্বশস্ত্র লাঠি মিছিল এবং এ ঘটনার মদদ দাতা চাচাই সহ তাদের সহযোগীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি ও অন্যান্য পরগনাবাসীর কাছে এ ধরনের ন্যাক্কার জনক ঘটনার নিঃস্বার্থ ক্ষমা প্রার্থনা মুবশ্বির আলী চাচাই গংরা না করলে অন্যান্য পরগনা সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে শান্তিপূর্ণ উপায়ে যে কোন ধরনের কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে বলে সমাবেশ থেকে হুশিয়ারি দেওয়া হয়। চতুল পরগনার অনেক বড় বড় মুরব্বী রয়েছেন। গত শুক্রবারের লাঠি মিছিলের মত ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাথে চতুলের বিবেকবান মানুষ জড়িত নয় বলে সমাবেশে অনেক বক্তা তাদের বক্তব্যে বলেন। অপরদিকে চতুল পরগনা বাসীর উদ্যোগে বৃহস্পতিবার বিকেল ২টায় স্থানীয় চতুল ঈদগাহ বাজারে পৃথক গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়। জমায়েতে বাউরভাগ পরগনার মুরব্বী সহ বড়চতুল ইউপির চেয়ারম্যান মাওঃ আবুল হোসেন, সাবেক চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা মুবশ্বির আলী চাচাই, হাজী আব্দুল হেকিম, শামীম উদ্দিন, সালমান রশিদ, এবাদুর রহমান, শাহাব উদ্দিন, মুহিবুর রহমান, ফারুক আহমদ পাখি, মীর মোঃ আব্দুল্লাহ, ইউপি সদস্য আব্দুল মুতলিব সহ অনেকে বক্তব্য রাখেন। জমায়েতে চতুল পরগনার লোকজনদের উপর বিভিন্ন সময় হামলা, মিথ্যা অপবাদ, আ’লীগ নেতা মুবশ্বির আলী চাচাইর উপর পরিকল্পিত হামলার কথা তুলে ধরে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও হামলাকারীদের শাস্তির দাবী জানানো হয়। এদিকে গত কয়েকদিন থেকে এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করলে  বৃহস্পতিবারের পাল্টাপাল্টি সভাকে কেন্দ্র করে কানাইঘাট বাজার, চতুল ঈদগাহ বাজার সহ উপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আহাদের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ১৯ অক্টোবরের ঘটনা নিয়ে একদিকে চতুল পরগনাবাসী অপরদিকে বাজেরাজ, চাউরা, সাতবাঁক পরগনার লোকজনদের মধ্যে উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি শান্তিপূর্ণ ভাবে নিষ্পত্তির জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কানাইঘাট ডাক বাংলোয় বাজেরাজ, চাউরা ও সাতবাঁক পরগনার মুরব্বী ও রাত ৯টায় চতুল পরগনার মুরব্বীয়ানদের সাথে চতুল ঈদগাহ বাজারে বৈঠকে মধ্যস্থতা করেন, সাতবাঁক ইউপির চেয়ারম্যান জেলা আ’লীগ নেতা মস্তাক আহমদ পলাশ, ফালজুর পরগনার বিশিষ্ট মুরব্বী কানাইঘাট লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির চেয়ারম্যান জেমস্ লিও ফারগুসন নানকা, সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ চৌধুরী, আ’লীগ নেতা আব্দুল লতিফ, বড়দেশ পরগনাবাসীর পক্ষে ৭নং দক্ষিণ বানীগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ আহমদ, কানাইঘাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। উভয় পক্ষের সাথে বৈঠক কালে চেয়ারম্যান মস্তাক আহমদ পলাশ ও চেয়ারম্যান জেমস্ লিও ফারগুসন নানকা সহ ঘটনার মধ্যস্থতাকারী নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বলেন, গত ১৯ অক্টোবর ও ২০ অক্টোবরের সমূহ ঘটে যাওয়া ঘটনাটি পর্যালোচনা করে এলাকায় শান্তি, সম্প্রীতি বজায় রাখতে সিলেটের উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা কানাইঘাট উপজেলা প্রশাসন, থানা প্রশাসন ও অন্যান্য পরগনার মুরব্বীয়ানদের নিয়ে ঘটনাটি নিষ্পত্তির আহ্বান জানালে উভয় পক্ষ এতে তাদের সম্মতি জানান।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়