Saturday, August 12

বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে চার জেলা

বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে চার জেলা

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমারসহ প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। ইতিমধ্যে চর, দ্বীপচর ও নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষ।

বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। জেলার সাতটি উপজেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। এ ছাড়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় এক হাজার ঘরবাড়িসহ অনেক ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

কুড়িগ্রামের বন্যার পরিস্থিতি সর্ম্পকে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা নদীতে ব্রিজ পয়েন্টে ৭২ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদে চিলমারী পয়েন্টে ৬০ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬৬ সেন্টিমিটার ও তিস্তায় পানি ২৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।

সুনামগঞ্জে বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার কারণে শিশুদের নিরাপত্তা বিবেচনা করে জেলার সাতটি উপজেলার ৮৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষা দুই দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বায়েজিদ খান জানান, জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা চলছে। কিন্তু উজান থেকে নেমে আস ঢল ও প্রবল বর্ষণের কারণে অনেক বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে। আবার কোনো বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পানি উঠে গেছে। এ ছাড়া হাওর এলাকার শিশুদের জন্য বিদ্যালয়ে আসা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, ধরমপাশা, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ এবং দিরাই উপজেলার ৮৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আজ ও কাল রোববারের পরীক্ষা স্থগিত থাকবে। তবে স্কুল খোলা থাকবে। শিক্ষকেরা স্কুলে যাবেন। এসব স্কুলের পরীক্ষা পরবর্তী সময়ে নেওয়া হবে।

পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয় থেকে জানা গেছে, আজ সকাল নয়টায় সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি আরও বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ২০৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বর্ষণ অব্যাহত আছে।

এদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, তিন দিন ধরে প্রবল বর্ষণের পাশাপাশি উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল নেমে আসছে। গতকাল বিকেলে উপজেলা সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গের হাওরা নদীর বাঁধ ভেঙে যায়। এতে আখাউড়া ইউনিয়নের মনিয়ন্দ, মোগড়া ও আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের কমপক্ষে ৩০ গ্রামের প্রায় এক হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি তলিয়ে যায়। আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নে দুটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পানি ঢুকে পড়ায় কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসিনা ইসলাম বলেন, গোপীনাথপুর ও বায়েক ইউনিয়নের রাস্তা ভেঙে ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।

এছাড়াও লালমনিরহাটে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জেলার পাঁচটি উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তিস্তা, ধরলা, রতনাই, শনিয়াজানসহ প্রায় সব নদ-নদীর পানি বেড়ে বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ইটাপোতা গ্রামের বুমকা এলাকায় আজ দুপুর ১২টার দিকে ধরলা নদীর ওয়াপদা প্রতিরক্ষা বাঁধের ২০ ফুট এলাকা ভেঙে গেছে। জেলার পাঁচটি উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। 
সূত্র: বিডি লাইভ।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়