Thursday, February 23

পরিপাটি ও সুন্দর রাখুন খাবার ঘর

পরিপাটি ও সুন্দর রাখুন খাবার ঘর

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: সকাল ঘুম থেকে উঠেই শুরু হয় ব্যস্ততা। রাত পর্যন্ত পরিবারের সদস্যদের একে অপরের সঙ্গে হয়তো দেখাই হয় না। রাতে খাবার টেবিলে বসেই সারা দিনের তথ্য আদান-প্রদান করা হয়। খাবারের ঘরটা বড়-ছোট যেমনই হোক না কেন, পরিবারের সবার আরাম ও সুবিধার দিকটি চিন্তা করেই তা সাজাতে হবে। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম রাখার পাশাপাশি এর সাজসজ্জায় শখের খানিকটা ছোঁয়াও রাখতে পারেন। মাঝারি বা ছোট আকারের বাড়িতে খাবার ঘরটাও তেমন জায়গা থাকে না। তবে ঘরের প্রতিটি জায়গা কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করে ঘর সাজালে মাঝারি আকারের ঘরটিও হয়ে উঠবে মনের মতো।

এ যুগের বাড়িগুলো কলাম ও বিমের কাঠামোর ওপর তৈরি হয়ে থাকে। ফলে প্রায় প্রতিটি ঘরেই চার থেকে ছয় ইঞ্চির মতো অংশ বেরিয়ে থাকে। এই বেরিয়ে থাকা অংশটুকু কাজে লাগিয়ে একটা দেয়ালে ছোট তাক বানানো যেতে পারে। আট ফুট চওড়া ও আট ফুট উচ্চতার একটি র‌্যাক তৈরি করা হলে অনেক কিছুই রাখা যাবে। তাকের মাঝে নানান আকার-আকৃতির ছোট ছোট খোপের মতো অংশ তৈরি করলে দারুণ দেখাবে। একই আকৃতি বা আকারের খোপ তৈরি না করে কোনোটা হয়তো বর্গাকার, কোনোটা আবার আয়তাকার করতে পারেন। এই তাকে শো-পিস, ফটোফ্রেম, ফুলদানিসহ নানা কিছুই রাখতে পারেন।

দেয়ালে একটা কাঠ বা বোর্ডের তাক তৈরি করে সেখানেই ক্রোকারিজ গুছিয়ে রাখতে পারেন। এর মাঝের অংশে মাইক্রোওয়েভ ওভেন, টোস্টার, কফি মেকার, জুসার প্রভৃতি রাখার ব্যবস্থা করতে পারেন। তাহলে বাইরে যাওয়ার সময় টুকটাক নাশতা বানিয়ে খেয়ে নিতে পারবেন চটজলদি। এই তাকের ওপরের অংশটা মার্বেল পাথরের তৈরি হতে পারে। এই তাকের ওপরের আড়াই ফুট অংশে কেবিনেট তৈরি করতে পারেন। কেবিনেটের সামনের দিকটা কাচের বা স্লাইডিং কাচও লাগানো যেতে পারে।

অন্য একটা দেয়ালের কাছে ফ্রিজ থাকতে পারে। রাখতে পারেন ছোট ট্রলিও। এতে করে অতিথি আপ্যায়নের সময় খাবার সাজিয়ে নিয়ে ড্রয়িং রুমে নিতে পারবেন সহজেই। ফ্রিজ একটু সাজিয়ে নিতে পারেন। এই ডেকোরেশন পিস হতে পারে সবজি বা ফলের আকৃতির, কিংবা তা হতে পারে প্রজাপতি-ফড়িংয়ের আকৃতির। ফ্রিজের বাইরের অংশে চাইলে লাগিয়ে নিলেন।

টেবিলের মাঝখানে শতরঞ্জির মতো লম্বা কোনো মোটা কাপড় বিছিয়ে দিতে পারেন। পর্দা আর এই কাপড় একই রঙের হলে সুন্দর দেখাবে। চেয়ারে যদি কাভার লাগানো হয়, তাহলে এর সঙ্গেও পর্দা এবং টেবিলক্লথের রঙের মিল রাখা প্রয়োজন।

খাবার ঘরের কোনো একটি দেয়াল একটু ভিন্ন রঙের করতে চাইলে এই দেয়ালের রঙের সঙ্গে পর্দার রঙের মিল রাখলে ভালো দেখাবে। সমুদ্রের গভীরতার রং ও এর সঙ্গে কিছুটা সবুজ আভা বা কমলা রঙের হতে পারে দেয়ালটি। চাইলে দেয়ালে রাস্টিক টাইলসও লাগাতে পারেন। তবে কিছুটা অমসৃণ এই দেয়াল টেরাকোটার মতো দেখতে লাগে।

তৈজসপত্রের উপকরণের সঙ্গেও পর্দার মিল রাখা জরুরি। উৎসবের সময় মাটির তৈজসপত্রে খাবার পরিবেশন করা হলে গ্রামীণ চেক বা দেশজ উপকরণে তৈরি পর্দা ব্যবহার করুন। বিশেষ কোনো ধরনের তৈজসপত্র ব্যবহার করা হলে পর্দায় রাখতে পারেন নেটের ব্যবহার। চাইলে শুধু পেলমেটের নিচের অংশটুকুতে নেট লাগিয়ে নিতে পারেন।

খাবার ঘরের দেয়ালে পারিবারিক ছবি বা প্রাকৃতিক দৃশ্য না রেখে হাতে আঁকা ছবি রাখতে পারেন। কিছুটা জায়গা পেলে আলাদা ছোট শেলফ রাখতে পারেন। ফুলদানিতে রাখতে পারেন প্রাকৃতিক ফুল। সুঘ্রাণ আছে, এমন ফুলই খাবার ঘরের জন্য ভালো। দোলনচাঁপা, রজনীগন্ধা বা সুন্দর ঘ্রাণের কোনো গোলাপ রাখতে পারেন। এর ফলে ঘরটিতে খাবারের বাড়তি কোনো গন্ধ থাকবে না। তবে তা বাসি ফুল বেশিদিন ন্ রেখে তা দ্রুত পরিবর্তন করে ফেলুন।

মোমবাতি জ্বালালে বাজে গন্ধ দূর হয়। খাবার ঘরের আলোর বিষয়টিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ঝোলানো ল্যাম্পশেডও রাখতে পারেন, যেটির আলো নিয়ন্ত্রণ করা যায় সহজেই। প্রয়োজন হলে শুধু খাবার ঘরেই আলো থাকবে, অর্থাৎ অন্য ঘরগুলোতে আলো যাবে না, এমন ল্যাম্পশেডও রাখা যায়।

অনেক বাসায় খাবার ঘর এবং রান্নাঘরের মাঝে জানালাও রাখা হচ্ছে। এটি রাখার কারণ ওই জানালা দিয়ে সহজেই খাবার পৌঁছে দেয়া যায় খাবার ঘরে। আড়াই ইঞ্চি বাই আড়াই ইঞ্চি চওড়া কাঠের ফ্রেমের জানালা রাখতে পারেন। আবার খাবার ঘরের একেবারে কাছেই খোলামেলা রান্নাঘরের ধারণাটাও বর্তমানে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়