Friday, December 23

কিস্তি দিতে না পারায় গরু নিল এনজিও: গ্রাহকের মৃত্যু

কিস্তি দিতে না পারায় গরু নিল এনজিও: গ্রাহকের মৃত্যু
কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: ঋণের কিস্তি দিতে না পারায় 'নীড় সেতু' নামে একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাড়ি থেকে দুটি গরু ধরে নিয়ে যায়। এ খবরে নওগাঁ জেলার বদলগাছীর অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক সন্তোষ কুমার বসাক অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। এমন অভিযোগ করেছেন তার পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় মারা যাওয়া শিক্ষকের ছেলে শতদল কুমার বসাক বাদী হয়ে সোমবার বদলগাছী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গয়েশপুর হাটশাপিলা গ্রামের সন্তোষ কুমার বসাক প্রতিদিন ২৭০ টাকা কিস্তি দেয়ার শর্তে প্রায় চার মাস আগে এনজিও নীড় সেতু মিঠাপুর শাখা থেকে ৪০ হাজার টাকা ঋণ নেন। কিছুদিন কিস্তি দেয়ার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে রংপুর মেডিকেল হাসপাতাল ও পরে ঢাকায় নেয়া হয়। অসুস্থ থাকায় পরিবারের লোকজন কিস্তি দিতে পারেনি। এনজিও কর্মীরা কিস্তির টাকা নিতে গিয়ে ফিরে আসছিল। ৭ ডিসেম্বর এনজিও কর্মকর্তারা কিস্তির টাকা আনতে ওই শিক্ষকের বাড়িতে যান। শিক্ষকের ছেলে শতদল বসাক তার বাবার দেনা পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দিলে তিনশ’ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ফাঁকা স্বাক্ষরও নেয় এনজিও কর্মকর্তা-কর্মচারীর। এনজিওর লোকজন ওই দিনই বাড়ি থেকে দুটি গরু নিয়ে যায়। এ সংবাদে দুশ্চিন্তায় সন্তোষ বসাক মারা যান।

শতদল বসাক বলেন, বাবা অসুস্থ হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন থাকায় চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ হয়। অল্পদিনের মধ্যে বাবার ঋণের টাকা পরিশোধ করে দেব। কিন্তু এনজিও কর্মকর্তারা আমার কোনো কথা না শুনে জোর করে ৭০ হাজার টাকা দামের দুটি গরু নিয়ে যায়। ১২ ডিসেম্বর অসুস্থ বাবাকে ঘটনাটি জানানো হলে বাবা দুশ্চিন্তা করছিলেন। এতে অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় ওইদিনই ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাবা মারা যান। এনজিওর লোকজন এখনও আমাদের গরু দুটি ফেরত দেয়নি। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েছি। পুলিশ কোনো পদক্ষেপও নিচ্ছে না।

এনজিও নীড় সেতু'র মিঠাপুর শাখার ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা বলেন, আমার এনজিও থেকে সন্তোষ কুমার বসাক ৭৭ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। প্রতিদিন কিস্তির মাধ্যমে ঋণ ও সুদের টাকা পরিশোধের শর্ত ছিল। কিন্তু তিনি শর্ত মোতাবেক কাজ করেননি। আমরা ঋণের টাকা আদায় করতে সন্তোষ কুমারের বাড়িতে গেলে তার ছেলে গরু বিক্রি করে টাকা দেয়ার কথা বলেন। আমরা দাম ধরে বাড়ি থেকে গরু নিয়ে এসেছি।

এনজিওটির নির্বাহী পরিচালক আবু রায়হান বলেন, সন্তোষ কুমার সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। তার ছেলে আমাদের গরু দিয়েছে।

বদলগাছী উপজেলা সমবায় অফিসার ছামছুল আলম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বদলগাছী থানার ওসি জালাল উদ্দীন বলেন, ঋণের কিস্তি না দেয়ায় এনজিওর লোকজন গ্রাহকের দুটি গরু নিয়ে গেছে। দুশ্চিন্তায় গ্রাহক মারা গেছেন এ রকম একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

সূত্র: যুগান্তর

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়