Wednesday, November 30

কোনো কাজেই আসেনি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক!

কোনো কাজেই আসেনি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক!

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পরিকর অক্টোবরে বলেছিলেন, নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আন্তঃসীমান্ত এলাকায় ভারতের আরও সার্জিক্যাল স্ট্রাইক পরিচালনা করতে হবে। নিরাপত্তা সংকট দেখা দিলে প্রয়োজনে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের মতো আরও সন্ত্রাসবিরোধী হামলা চালানো হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আদতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক কোনো কাজে আসেনি। বরং দ্বন্দ্বের মাত্রা বেড়েছে উভয় দেশের মধ্যে। পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বিমান উড়িয়ে সেখানের জঙ্গি ক্যাম্পগুলোতে অভিযান পরিচালনার পরামর্শ দিয়েছেন অধিকাংশ বিশ্লেষক।

এদিকে আবারও সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে ভারতের সেনাঘাঁটি। জম্মু-কাশ্মীরের কাছে নাগরোটায় সেনাবাহিনীর ১৬ ব্যাটালিয়নের সদর দফতরে হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীদের একটি দল। এতে একজন সেনাবাহিনীর মেজরসহ ৩ ভারতীয় জওয়ান নিহত ও ৩ জন সেনাসদস্য আহত হয়েছেন। এছাড়া একজন সন্ত্রাসী এ হামলায় নিহত হয়েছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়, মঙ্গলবার সাড়ে ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে আত্মঘাতী হামলার ধাঁচে সন্ত্রাসীরা গ্রেনেড ছুড়তে থাকে। এক্ষেত্রে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে পাল্টা হামলা চালানোর কোনো সুযোগ দেয়নি তারা। জম্মু থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে নাগরোটার কাছে শ্রীনগর-জম্মু হাইওয়েতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

নাগরোটা শহরের সেনাক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলার পর এটাই ধারণা করা হচ্ছে, সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে জঙ্গি দমনে পাকিস্তানে চালানো সার্জিক্যাল স্ট্রাইক আদতে কোনো কাজে আসেনি। মঙ্গলবার এ নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ফার্স্টপোস্ট।

জম্মুর ডেপুটি কমিশনার শিমরানদ্বীপ সিং বলেন, রাজ্য সরকার সেখানের সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে। নাগরোটায় সেনাবাহিনীর ১৬ ব্যাটালিয়নের সদর কার্যালয় থেকেই সেনা জওয়ানরা ভারত-পাক সীমান্তের ওপর নজরদারি চালায়। মূলত গোটা জম্মু এলাকায় জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াই চালানো হয় এখান থেকে। জঙ্গি হামলার পর সম্পূর্ণ এলাকা ঘিরে ফেলে ভারতীয় জওয়ানরা। জাতীয় সড়কে যান চলাচলের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। নাগরোটা হামলার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, হামলার পর পরই সেনা পোশাক, ছদ্মবেশী জ্যাকেট পরে ও হাতে ভারি অস্ত্র নিয়ে অভিযানে বের হয় ভারতীয় সেনাবাহিনী। কাশ্মীরে উরি হামলার পর লাইন অব কন্ট্রোল অতিক্রম করে পাকিস্তানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক পরিচালনা করে ভারত। এ হামলার পর থেকে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে খারাপ সম্পর্ক আরও অধঃপতনের দিকে যেতে থাকে। পাকিস্তান অভিযোগ করে, ২০০৩ সালের অস্ত্র বিরতি চুক্তির লংঘন করেছে ভারত। উরি হামলা এবং ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পাল্টাপাল্টি হামলার শিকার হচ্ছে উভয় শিবির। প্রথম দিকে তারা ছোট পরিসরে গুলি চালনা ও স্নাইপার হামলায় সীমাবদ্ধ ছিল। পরে প্রথমবারের মতো চলতি বছরেই কামানের গোলা ব্যবহার শুরু করে উভয় দেশ। এ গোলাগুলির শিকার হচ্ছেন বেসামরিক নাগরিকরা।

উভয় দেশ একে-অপরের টার্গেটে পরিণত হয়েছে। সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৪০ জন বেসামরিক নাগরিক ও উভয় দেশের বহু সেনা নিহত হয়েছেন। নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সদস্যদের অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে হরহামেশাই। এর সুযোগ নিয়ে জঙ্গিরাও ঢুকে পড়ার চেষ্টা করছে। ভারতীয় এক সেনাসদস্য বলেন, নাগরোটা সীমান্তের কাছ দিয়ে ঢোকার সময় তারা এ হামলা চালিয়েছে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়