Thursday, August 4

নীরবে হারিয়ে যাচ্ছে বাসক


মুক্তাগাছা (ময়মনসিংহ): ময়মনসিংহের সর্বত্র এক সময় গ্রাম-বাংলার নবজাত শিশুর অসুখ-বিসুখে প্রথম ডাক্তার ছিলেন তার মা। রান্না ঘরে ব্যবহৃত রসুন, সর্ষের তেল ইত্যাদির মত আঙ্গিনায় প্রাপ্ত বাসক পাতাও ওষুধের উপকরণ। বাড়িতে কারো কফ-কাশি হলে আঙ্গিনার ঝোপ-ঝাড় থেকে বাসক পাতা তুলে তা পিষে এক চামচ রস হালকা গরম করে খেলে কাশি সেরে যায়- একথা গ্রামাঞ্চলের প্রায় সব মায়েদেরই জানা। কাশির ওষুধ হিসেবে বাসকের কথা আয়ুর্বেদ এবং চরক সংহিতায় উল্লেখ রয়েছে। বৈদিক যুগে এর ব্যবহারের নির্দেশ রয়েছে শরীরের ঊর্ধ্বভাগের রোগে। বিশেষ করে ফুসফুসসংক্রান্ত বিভিন্ন রোগে এর ব্যবহার সার্বজনীন। ক্ষোপ জাতীয় গাছ বাসক প্রায় ৫/৬ ফুট উঁচু হয়। আষাঢ় শ্রাবণে সাদা ফুল হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘আদাটুডা বেসিকা নিছ’। ময়মনসিংহের সর্বত্র গ্রামাঞ্চলে লোকালয়ের আশেপাশে ঝোপ-জঙ্গলে এ গাছ পাওয়া যায়। অনেক গৃহস্থ বাড়ির আঙ্গিনার চারপাশে বাসক গাছ লাগিয়ে বেড়া দেন। দেশজ চিকিৎসায় কাশি ছাড়াও বিভিন্ন রোগে এর ব্যবহার রয়েছে। অম্লপিত্ত, কৃমি, রক্তশ্রুতি, শ্বাসকষ্ট, গাত্র দুর্গন্ধ, খোস-পাঁচড়া, অর্শ, বসন্ত, টিউমার এবং জীবাণুনাশে এমনকি গায়ের রং ফর্সাকরণেও বাসক পাতার ব্যবহারের উল্লেখ রয়েছে। মুক্তাগাছার খোকশিয়া গ্রামের জনৈক শিক্ষক জানান, তিনি সব রোগেই বাসক পাতার চিকিৎসা দেন। তার বিশ্বাস, বাসক পাতা সর্ব রোগের মহৌষধ। আধুনিক চিকিৎসার দোর্দণ্ড প্রতাপে বিনষ্ট হচ্ছে গ্রাম বাংলার আবহমান চিকিৎসা পরম্পরা। সে পথেই বিস্তৃতির অতলে বাসক পাতা হারিয়ে যাচ্ছে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়