Tuesday, June 7

জঙ্গি নিয়ে আরেক পুলিশ অফিসারের আবেগঘন স্ট্যাটাস


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: গত কয়েক দিনের টার্গেট কিলিংয়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। বিশেষ করে করে চট্টগ্রামে চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুর খুনের পর প্রতিদিনই কোথাও কোথাও খুনের ঘটনা ঘটছে। সেই একই কায়দার- হেলমেট পরিহিত তিন জন লোক মোটরসাইকেলে এসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়।টার্গেট কিলিং ঠেকাতে বিশেষজ্ঞরাও নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।বলাবলি হচ্ছে- এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঠেকাতে পুলিশকে তাদের কৌশল বদলাতে হবে।দ্রুত আইনে বিচার করতে হবে অপরাধীদের।আরো কত কী! কিন্তু কোনো কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না হত্যাকাণ্ড। এ অবস্থায় পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) বোম্ব ডিস্পোজাল টিমের প্রধান ও অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. ছানোয়ার হোসেনের স্ট্যাটাসে নতুন অঙ্গিকারের কথা শোনা গেল।জঙ্গি দমনে তিনি ‘নুতন যুদ্ধ’-এর ঘোষণা দিলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দীর্ঘ স্টাটাস দিয়ে যুদ্ধের এই ঘোষণা দেন। চট্টগ্রামে পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তরের স্ত্রী হত্যার দুই দিনের মাথা তিনি এই স্টাটাস দিলেন। পুলিশ কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেনের স্টাটাসটি পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো- জঙ্গি নিয়ে আমি আর কাজ করবো না হ্যাঁ, আমি আর জঙ্গি-ফঙ্গিতে নাই। অনেকেই তো পুলিশের চাকরি করে, কিন্তু সবাই কি জঙ্গি নিয়ে কাজ করে? করে না। তাহলে এত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ আমি কেন করবো? আমিও অন্য কোনও বিভাগে চলে যাচ্ছি। কে চায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের দায়ে পরিবারের সদস্যদের হারাতে? কেউ না, তাই আমিও না। ঠিক এই রকম একটি সিদ্ধান্তই দেখতে চেয়েছিল জঙ্গিরা। তাই শুনিয়ে দিলাম। তবে শুধু শোনানোর জন্য নয়, আমি আসলেই জঙ্গি নিয়ে আর কাজ করবো না। যেটা করবো সেটা হচ্ছে যুদ্ধ, যুদ্ধ করবো। আগে করতাম কাজ, এখন করবো যুদ্ধ।... কাজের পরিবেশ তো আর নেই, যুদ্ধের পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে গেছে। পরিবারের নিষ্পাপ সদস্যের ওপর আঘাত, যুদ্ধ না তো কি? তাই এখন জঙ্গি নিয়ে কাজ মানেই যুদ্ধ। একটু বিশ্লেষণে যাচ্ছি পুলিশ আর অপরাধীর মধ্যে সাপে-নেউলে সম্পর্ক সব দেশেই আছে। দেশে দেশে কুখ্যাত মাফিয়াচক্রের সাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বৈরিতা সবচেয়ে চরম। এই মাফিয়ারাও একে অপরকে বলে থাকে: ‪#‎Never_Ever_Touch_A_Cop (কখনও পুলিশের গায়ে হাত দিও না) পুলিশের গায়ে হাত দিলে কী বিপর্যয় হয়, আর পুলিশের আইনগত দায়িত্ব মেনে নিলে কী ক্ষতি হয়, তার তুলনামূলক হিসাব তাদের আছে। তাই সচরাচর কোনও দেশেই পুলিশের সাথে ব্যক্তিগতভাবে কেউ জড়ায় না। তারপরও কখনও কখনও তারা পুলিশের ওপর হামালা চালায়। কিন্তু পরিবারের কোনও ক্ষতি করে না। এটা তাদের ‪#‎থাম্ভ রোল। এদেশের জঙ্গিরা এখন সেই 'থাম্ভ রোল'- এর অনেক নিচে নেমে গেছে। পুলিশসহ অন্যান্য সশস্ত্র বাহিনীর ওপর হামলা তো করছেই, বরং তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপরও হামলা শুরু করে দিয়েছে। তা না হলে আর জঙ্গি/জংলি বলা হয় কেন। অথচ, বিভিন্ন সময় জঙ্গি পরিবারের অন্যান্য নিষ্ক্রিয় সদস্যরা শনাক্ত হলেও তাদের ইজ্জত করা হয়। তাদের পরিবারের পর্দানশীল নারী, ছোট ছোট বাচ্চা এবং বয়োবৃদ্ধদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হয়।.... তাহলে ওরা কেন এমন করছে? তাহলে ওরাই বা কারা? প্রশ্নের জবাব খুব তাড়াতাড়ি আসছে.... ইনশাল্লাহ। দাত ভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে সে যে-ই হোক। শুধু সময়ের অপেক্ষা। সেই ‘৭১ থেকে আজ পর্যন্ত মানুষের নিরাপত্তা দিতে গিয়ে পুলিশের যতটুকু গেছে তা আর অন্য কোনও পেশায় যায়নি। এই ত্যাগটুকুই পুলিশের অনেক সীমাবদ্ধতা আর ভুল-ত্রুটিগুলোকে লেভেল করে দিচ্ছে। সামনে উদ্বৃত্ত কিছু রাখার জন্য কাজ হচ্ছে। আশা করি জঙ্গিবাদ (আমি বলি উগ্রবাদ) সমূলে উৎপাটনে আমাদের নিষ্পাপ 'ভাবী'র এই মূল্যবান রক্ত আমাদের কাজের গতি, ক্ষিপ্রতা এবং অনুপ্রেরণা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। দেশের নিরাপত্তামূলক কাজের জন্য ভাবীকে হারালাম, ভাবী ‪#‎শহিদের_মর্যাদা পাবেন। তাই প্রতিশোধ নয়, উৎপাটন হোক আমাদের অঙ্গীকার। ঠাণ্ডা মাথায় কিভাবে যুদ্ধ করতে হয় তা শুধু পুলিশই জানে, তাই এখনই শুরু করার পালা।’ স্টাটাসের বিষয়ে ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা চাই জনগণের সঙ্গে মিলে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে। দেশের মানুষ সবসময় সচেতন, তারা নিশ্চয় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ঘোষিত এই যুদ্ধে পুলিশের সঙ্গে থাকবে।’ (ঢাকাটাইমস/

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়