ঢাকা: টানা তিন মাসের আন্দোলনে কোথাও কাউকে দেখা যায়নি। অথচ বনানী কবরস্থানে দেখা মিললো বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে অসংখ্য কর্মীর। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার ছোট ছেলের কবর জিয়ারত করবেন সেজন্যই নেতাকর্মীদের এই উপস্থিতি।
খালেদা জিয়া তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করতে বনানী কবরস্থানে যাওয়ার নির্ধারিত সময় ছিল সোমবার বিকাল পাঁচটা। কিন্তু নেতাকর্মীরা বেলা চারটার দিকে কবরস্থানে এসে পৌঁছান। ধীরে ধীরে উপস্থিতি বাড়তে থাকে। আসেন বিএনপির শীর্ষ নেতারাও।
প্রথমে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.)মাহবুবুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মীর মো. নাসির উদ্দিন, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা মহিলা দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে কোকোর কবরের পাশে অবস্থান নেন।
ততক্ষণে ছাত্রদলের নেতারা নিজ নিজ কর্মীদের নিয়ে বনানী কবরস্থানের মূল ফটকের ভেতরে অবস্থান নেন। কেউ আবার বিভিন্ন কবরের দেয়ালের ওপর অবস্থান নেন।
বিকাল পাঁচটা ৪০ মিনিটে খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়িটি কবরস্থানে প্রবেশ করে। বি ব্লকের ১৮ নং সারিতে কোকোর কবরের পাশে এসে পৌঁছায় পৌনে ছয়টায়। কিন্তু নেতাকর্মীদের ভিড়ের কারণে তাকে প্রায় দশ মিনিট গাড়িতে বসে থাকতে হয়।কবরস্থানেও বিএনপিকর্মীদের ছবি দেখানোর প্রতিযোগিতা!
এসময় সিএসএফের সদস্য ও কেন্দ্রীয় নেতারা কর্মীদের চেয়ারপারসনকে জায়গা করে দেয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও কেউ তাতে কান দেয়নি। এক পর্যায়ে সিএসএফের সদস্যরা নেতাকর্মীদের সরিয়ে খালেদা জিয়াকে নেমে আসার ব্যবস্থা করে দেন।
পাঁচটা ৫৫ মিনিটে গাড়ি থেকে নেমে কোকোর কবরের পাশে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন খালেদা জিয়া। তার ভাইয়ের স্ত্রী কানিজ ফাতিমাও কান্নায় ভেঙে পড়েন।
পরে খালেদা জিয়া কোকোর রুহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাতে অংশ নেন। এসময় সেখানে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
কিন্তু তখনও নেতাকর্মীদের অনেককে টেলিভিশনে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিতে এবং জায়গা দখল করতে ব্যস্ত দেখা যায়। কারণ ওই সময় বেশ কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচারে ছিল। বিএনপি কর্মীদের এই প্রতিযোগিতায় গণমাধ্যম কর্মীদের কাজে ব্যাঘাত ঘটে।
এক পর্যায়ে লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মীর মো. নাসির উদ্দিনসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা কোকোর কবরের উপর পড়ে যান।
এছাড়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. আবদুল মঈন খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মহিলা দলের সভানেত্রী নূরে আরা সাফা, ওলামা দলের সভাপতি এম এ মালেক, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শ্যামা ওবায়েদ, সাবেক এমপি নিলোফার চৌধুরী মনি, শাম্মী আখতার প্রমুখ।
মোনাজাত শেষে কবরের পাশে একটি চেয়ারে বসে কোরআন তেলাওয়াত করেন খালেদা জিয়া। কিছু সময় পরে তিনি বনানী কবরস্থান থেকে বের হয়ে আসেন।
প্রসঙ্গত, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো গত ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় হৃদরোগে মারা যান।
এরপর ২৭ জানুয়ারি কোকোর মরদেহ দেশে আনা হয়। পরে ওইদিন বিকালে বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
খবর বিভাগঃ
রাজনীতি
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়