Friday, April 24

রাসুল (সা.) এর নৈকট্য অর্জন


মুফতি আহমদ মফিজ: হাশরের মাঠে মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ তায়ালা বিচারাসনে সমাসীন হবেন। তখন তাঁর একচ্ছত্র, নিরঙ্কুশ ক্ষমতার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ ঘটবে। প্রত্যেক ব্যক্তি থেকে তিনি তার বিগত জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের হিসাব গ্রহণ করবেন। সেদিন সব প্রতাপশালী বাদশাহ আল্লাহ তায়ালার ক্রোধ ও গজবের ভয়ে কাঁপতে থাকবে। সবাই নিজের বিগত জীবনের হিসাব-কিতাবের ভয়ে এত বেশি ভীতসন্ত্রস্ত থাকবে যে, নারী-পুরুষ সবাই বিবস্ত্র থাকা সত্ত্বেও এ ব্যাপারে কারও কোনো খবর থাকবে না। কেউ বলতেও পারবে না, কার গায়ে বস্ত্র আছে, আর কার গায়ে বস্ত্র নেই। নবী-রাসুলরা পর্যন্ত সেদিন নিজেদের হিসাব-কিতাবের ভয়ে পেরেশান থাকবেন। তাই তারা শুধু হায়! আমার কী দশা হবে, আমার কী পরিণতি হবে বলে চিৎকার করতে থাকবেন। সেদিন মানুষ আফসোস করতে থাকবে, হায়! আজ যদি কেউ আমার জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে সুপারিশ করত! কিন্তু একমাত্র নবী মুহাম্মদ (সা.) ব্যতীত আর কেউ আল্লাহ তায়ালার সামনে সুপারিশ করার সাহস পাবে না। তবে সেদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের পক্ষেই সুপারিশ করবেন, যারা রাসুল (সা.) এর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ হবে। আর রাসুল (সা.) এর ঘনিষ্ঠতা অর্জন করার সবচেয়ে উত্তম মাধ্যম হচ্ছে নিজের আখলাক বা চরিত্র সুন্দর করা। এ সম্পর্কে হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, 'তোমাদের মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় এবং কেয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ হবে ওইসব ব্যক্তি যাদের চরিত্র তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর হবে।' হজরত আবু দারদা (রা.) বর্ণনা করেন, সর্বপ্রথম যা মিজানের পাল্লায় মাপা হবে, তা হচ্ছে সচ্চরিত্র ও দানশীলতা। আল্লাহ তায়ালা যখন ঈমান সৃষ্টি করলেন তখন ঈমান বলল, ইলাহি, আমাকে শক্তি দান করুন! অতঃপর আল্লাহ তায়ালা তাকে সচ্চরিত্র ও দানশীলতা দ্বারা শক্তি দান করলেন। অনুরূপভাবে আল্লাহ তায়ালা যখন কুফর সৃষ্টি করলেন তখন কুফর বলল, ইলাহি, আমাকে শক্তি দান করুন, তখন আল্লাহ তায়ালা তাকে কৃপণতা ও অসচ্চরিত্র দ্বারা শক্তি দান করলেন। এর দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয়, সচ্চরিত্র ও দানশীলতা ঈমানের পক্ষের শক্তি, আর কৃপণতা ও অসচ্চরিত্র হচ্ছে কুফরের পক্ষের শক্তি। হজরত জুনায়েদ বাগদাদী (রহ.) বলেন, মানুষের এমন চারটি গুণ রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে সে ইলম ও আমল কম হওয়া সত্ত্বেও উচ্চমর্যাদা লাভ করতে পারে। ১. সহনশীলতা, ২. বিনয়-নম্রতা, ৩. দানশীলতা ৪. সচ্চরিত্র। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, 'যার চরিত্র যত ভালো হবে, বংশ মর্যাদায় সে তত সম্ভ্রান্ত বলে বিবেচিত হবে। আর যার চরিত্র যত খারাপ হবে সে বংশ মর্যাদায় তত নিচু বলে বিবেচিত হবে।' (এহইয়াউ উলুমিদ্দীন)।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়