দেলোয়ার হোসেন:
ক্রিকেট যেন জীবেনের সঙ্গে মিশে গেছে। ২৪ মার্চ প্রোটিয়াদের চোখের জলে ভিজেছিল অকল্যান্ডের ইডেন পার্ক এবং পুরো দক্ষিণ অফ্রিকা । কাল মেলবোর্নের সুবজ ঘাসও একদলের চোখের জল দেখবে। সেই দলটা কী প্রথমবার বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখা নিউজিল্যান্ড, নাকি চারবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া? টানটান উত্তেজনা নিয়ে অপেক্ষা করছে ক্রিকেট বিশ্ব।
পরিসংখ্যান কিংবা ক্রিকেট পন্ডিতরা যাই বলুন, ইতিহাস গড়ার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত নিউজিল্যান্ড। স্যার রিচার্ড হ্যাডলি এবং মার্টিন ক্রোর মতো কিংবদন্তিরা যেটা পারেননি, সেটা করার জন্য হিমালয় সমান দৃঢ় ব্রেন্ডন ম্যাককালামরা। যেই দৃঢ়তা প্রথম থেকেই দেখিয়ে আসছে তারা।
সবাই মেলবোর্নের বড় মাঠ নিয়ে ভয় দেখাচ্ছে নিউজিল্যান্ডকে। কিন্তু এ নিয়ে খুব একটা নিশ্চিত নয় কিউইরা। শিরোপা যুদ্ধের আগে তারা পুরোপুরি নির্ভার। মেলবোর্নে এসে রিলাক্সড মুডে ঘোড়ার দৌড় দেখলেন অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। ফাইনালে তিনি মাথাটা ঠান্ডা রেখেই ব্যাট চালাবেন বলে মনে হচ্ছে। মেলবোর্নে এলোপাথাড়ি ছক্কা হাঁকানো যে বিপদ ডেকে আনতে পারে।
অধিনায়ক ম্যাককালামের উপর অনেকটাই নির্ভর করছে নিউজিল্যান্ডের নতুন ইতিহাসের ভাগ। এই বিশ্বকাপে তার চেয়ে প্রথম পাওয়ার প্লের সুযোগ আর কে নিতে পেরেছে? প্রথম রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার তাইফুন ইনিংসটাই তো জিতিয়েছিল দলকে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেমিফাইনালে তার ব্যাটিংয়ের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই।
লড়াইয়ের মধ্যে আরেক লড়াই। মেলবোর্নে আজ গতির লড়াই বেশ জমে উঠবে পারে ট্রেন্ট বোল্ট এবং মিচেল স্টার্কের মধ্যে। ১৫.৭৬ গড়ে ২১ উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপে সবার উপরে নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট। ২০ উইকেট নিয়ে বোল্টের ঠিক পরেই আছেন মিচেল স্টার্ক। যার গড় মাত্র ১০.২৬। মেলবোর্নের উইকেট সাধারণত বাউন্সি, সঙ্গে থাকে সুয়িং এবং সিম। তবে এখানে রানও পড়ে আছে অনেক। কিছু করার আছে ড্যানিয়েল ভেট্টরির মতো টপ ক্লস স্পিনারদেরও। ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি মনে করেন, এ ম্যাচে ভেট্টরি হতে পারেন নিউজিল্যান্ডের সাফল্যের রূপকার। ক্যারিয়ারের শেষ ওয়ানডে ম্যাচে কি জ্বলে উঠবেন তিনি?
ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ অজি অধনায়ক মাইকেল ক্লার্কেরও। বয়স মাত্র ৩৩। একটু আগেভাগেই ওয়ানডে ক্রিকেটকে না বলে দিচ্ছেন ক্লার্ক। ওয়ানডে ক্রিকেটে অসাধারণ রেকর্ড তার। ব্যাটিং গড় প্রায় ৪৫। কিন্তু এই বিশ্বকাপটা তার মোটেও ভালো যাচ্ছে না। শেষ ম্যাচে নিশ্চয়ই কারিশমা দেখাবেন ক্লার্ক।
ওয়ার্নার, ওয়াটসনরা না পারলেও প্রতি ম্যাচেই কারিশমা দেখিয়ে যাচ্ছেন স্টিভেন স্মিথ। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার ভাবি এ অধিনায়কের দিকে তাকিয়ে আছে অজিরা। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এবং শেষ দিকে জ্বলে ওঠতে পছন্দ করেন ফকনার। অস্ট্রেলিয়া তাকিয়ে আছে তাদের দিকেও।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রেকর্ড যতোই বাজে হোক, দারুণ একটা সুখস্মৃতি নিয়ে মাঠে নামছে নিউজিল্যান্ড। ২০০৯ সালে এই মেলবোর্নেই অস্ট্রেলিয়াকে ৬ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছিল তারা। তখনকার ৮ জনই আছেন বর্তমান দলে। তবে এই হারের পর মেলবোর্ন একের পর এক জয় উপহার দিয়ে গেছে স্বাগতিকদের। সর্বশেষ এখানে ছয় ম্যাচেই জয় পেয়েছে অজিরা।
পরিসখ্যান নিয়ে কোনো দলই নিশ্চয়ই মাথা ঘামাচ্ছেন না। সেটা বুদ্ধিমানের কাজও নয়। ফাইনালে যারা চাপ ছুড়ে ফেলে সেরা খেলাটা খেলবে বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে উঠবে তাদেরই। কে সেই ভাগ্যবান অধিনায়ক, মাইকেল ক্লার্ক নাকি ব্রেন্ডন ম্যাককালাাম?
----ঢাকাটাইমস
খবর বিভাগঃ
খেলাধুলা
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়