ইসলাম ডেস্ক,কানাইঘাট নিউজ:
চুরি একটি মারাত্মক অপরাধ। সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে নবজাতক চুরির ঘটনা ঘটছে। ইসলামে চুরি গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। হোক নবজাতক চুরি হোক কিংবা অন্য মালামাল হোক। সব ধরণের চুরিকে ইসলাম বড় অপরাধ হিসাবে উল্লেখ করেছে।
ইসলামে চুরির শাস্তি ভয়াবহ। মানব রচিত দণ্ডবিধির মতো কোরআনের আইন শুধু অপরাধ ও শাস্তি বর্ণনা করেই ক্ষান্ত হয় না, বরং প্রত্যেক অপরাধ ও শাস্তির সঙ্গে খোদাভীতি ও পরকালের চেতনা উপস্থাপন করে মানুষের ধ্যান-ধারণাকে এমন এক জগতের দিকে ঘুরিয়ে দেয়, যার চেতনা মানুষকে যাবতীয় অপরাধ ও গোনাহ থেকে পবিত্র করে দেয়। অন্যের মাল হেফাজতের জায়গা থেকে বিনা অনুমতিতে গোপনে নিয়ে যাওয়াকেই সংজ্ঞাগত দিক থেকে ও সাধারণ পরিভাষায় চুরি বলা হয়।
কোরআন চারটি অপরাধের শাস্তি স্বয়ং নির্দিষ্ট ও নির্ধারিত করেছে। শরিয়তের পরিভাষায় এগুলোকে হদ বলা হয়। যেসব অপরাধের শাস্তিকে আল্লাহর হক হিসাবে নির্ধারণ করেছে, সেসব শাস্তিকে হুদুদ বলা হয়।
ইসলামী শরিয়তে হুদুদ মাত্র পাঁচটি- ডাকাতি, চুরি, ব্যভিচার ও ব্যভিচারের অপবাদ- এ চারটির শাস্তি কোরআনে বর্ণিত হয়েছে।
মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, যে সব পুরুষ ও নারী চুরি করে তাদের হাত কেটে দাও তাদের কৃতকর্মের সাজা হিসাবে। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি। আল্লাহ পরাক্রান্ত, জ্ঞানময়। (সূরা মায়েদা-৩৮)।
দণ্ডগত শাস্তিকে অবস্থানুযায়ী লঘু থেকে লঘুতর, কঠোর থেকে কঠোরতর এবং ক্ষমাও করা যায়। এ ব্যাপারে বিচারকদের ক্ষমতা অত্যন্ত ব্যাপক; কিন্তু হুদুদের বেলায় কোনো সরকার, শাসনকর্তা অথবা বিচারকও সামান্যতম পরিবর্তন, লঘু অথবা কঠোর করার অধিকার রাখে না। স্থান বা কালক্রমে এর কোনো পার্থক্য হয় না এবং কোনো শাসক বা বিচারক তা ক্ষমাও করতে পারে না। হুদুদের বেলায় সুপারিশ করা এবং তা শ্রবণ করা দুই-ই নাজায়েজ। রসুল (সা.) এ ব্যাপারে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। হুদুদের শাস্তি পরিবর্তন ও লঘু করা যায় না এবং কেউ ক্ষমাও করার অধিকারী নয়। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে সামগ্রিক ব্যাপারে সমতা বিধানের উদ্দেশ্যে অপরাধ এবং অপরাধ প্রমাণের শর্তাবলীও অত্যন্ত কঠোর করা হয়েছে। তাই চুরি প্রমাণের ক্ষেত্রে নির্ধারিত শর্তগুলোর কোনো ত্রুটি অথবা সন্দেহ দেখা দেওয়ার কারণে চোরের হাত কাটা যাবে না বটে; কিন্তু এ অবস্থায় সে সম্পূর্ণ মুক্তও হয়ে যাবে না; বরং তাকে অবস্থা অনুযায়ী অন্য দণ্ড দেওয়া হবে।
যদিও সব চুরির ক্ষেত্রে একটা বিধান থাকলেও নবজাতক চুরি একটা নতুন ভার্সন। যা সামাজিক ও মানবিক দিক থেকেও একটা বড় ধরনের অবক্ষয়ের শামিল। কেননা একজনের নবজাতক অন্যজনের কাছে বেড়ে উঠবে ভিন্ন নামে, ভিন্ন পরিচয়ে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয় এবং যার নবজাতক চুরি হয়ে যায় তার মনের দীর্ঘস্থায়ী জ্বালা চোরের জন্য অভিশাপের নজরানা হয়ে থাকবে চিরকাল; যা তার জন্য কোনোভাবেই সুখকর নয়। অতএব সবার উচিত এ ধরনের গর্হিত কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা, সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধের অনুসারী হয়ে বিকশিত মানুষে রূপান্তরিত হওয়া।তাই ইসলাম চুরির ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
Wednesday, October 22
এ সম্পর্কিত আরও খবর
ইতিহাসের প্রথম জুমা যেমন ছিল‘জুমা’ শব্দের অর্থ এক জায়গায় জড়ো হওয়া বা কাতারবদ্ধ হওয়া। শুক্রবার মসজিদে জোহরের চার রাকাতের পরিবর্ত
বিড়াল পোষা সুন্নত কী? বিড়াল গৃহপালিত অতি আদুরে ছোট একটি প্রাণী। ইসলামে বিড়াল পোষা জায়েজ। অনেক সাহাবি বিড়াল পাল
যে ৩ শ্রেণির মানুষকে আল্লাহ অবশ্যই সাহায্য করেন ফাইল ফটোবিপদ-আপদ কিংবা কল্যাণ কামনা- সব ক্ষেত্রেই মুমিনের একমাত্র ভরসা মহান রাব্বুল আলামিন। প
রমজান উপলক্ষে 'প্রজন্ম প্রজেক্ট ফাউন্ডেশন'র খাদ্য সহায়তা পেল ৫৫০ পরিবারনিজস্ব প্রতিবেদক ::পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে এবারও দরিদ্র পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে অর
আল্লাহর পরিচয় লাভের উপায়ই ইহকাল ও পরকালে সাফল্য!হাফিজ মাছুম আহমদ, দুধরচকী :পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা নিজের পরিচয় দিয়েছেন এভাবে, আল্লাহ ছাড়া অন্য ক
জমাদিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকীআরবের শীতকাল জমাদিউল আউয়াল। আরবি বর্ষপঞ্জি বা হিজরি সনের পঞ্চম মাস হল
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়