কানিউজ ডেস্ক : দেশের প্রথম পাঁচ কোটি গ্রাহকের মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে ‘ফ্রি ফেসবুক’ সেবা চালু করলেও অনেকটা নীরবে এ সেবা বন্ধ করে দিয়েছে। বন্ধ হওয়ার পর দু’ একটি জাতীয় পত্রিকার ভেতরের সাদাকালো বিজ্ঞাপন পেজে এ সংক্রান্ত ছোট করে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। যা অনেকেরই চোখ এড়িয়ে গেছে।
‘সবার জন্য ইন্টারনেট’ প্রদানের লক্ষ্য অর্জনের অংশ হিসেবে গ্রাহকদের জন্য গ্রামীণফোন এই অফার ঘোষণা করেছিল গত মাসের ১৪ তারিখে। সেবাটি চালু হয় ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে। গ্রামীণফোনের যেকোনো ইন্টারনেট প্যাকেজ গ্রাহক প্রতিদিন রাত ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কোনো ডাটা চার্জ ছাড়াই ফেসবুক ব্যবহার করতে পারতেন।
১৪ সেপ্টেম্বর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘ফ্রি ফেসবুক’ ঘোষণা দেন গ্রামীণফোনের চিফ মার্কেটিং অফিসার অ্যালান বঙ্কে। এ সময় তিনি বলেন, গ্রামীণফোন বাংলাদেশে প্রথম অপারেটর হিসেবে ৫ কোটি গ্রাহকের মাইলফলকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে আমরা গ্রাহকদের পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক কোনো ডাটা চার্জ ছাড়াই ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছি। সামাজিক যোগাযোগ বজায় রাখার জন্য ফেসবুক সেরা মাধ্যম এবং সবার জন্য ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য অর্জনে একটি সহায়ক শক্তি।
বাংলাদেশে ১১ কোটির বেশি মানুষের মোবাইল সংযোগ আছে এবং অনেকেই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। তবে ইন্টারনেট ব্যবহার ক্রমাগত বাড়লেও এখনো জনসংখ্যার একটি বিরাট অংশ ইন্টারনেট সুবিধা সম্পর্কে জানেন না। অনুষ্ঠানে অ্যালান বঙ্কে বলেন, আমরা মনে করি যার মোবাইল সংযোগ আছে তার ইন্টারনেট সংযোগ না থাকার কোনো কারণ নেই। এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা সবার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার অর্থপূর্ণ এবং সহজ করার লক্ষ্যে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলাম।
গ্রামীণফোনের গ্রাহকরা এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রামীনফোনের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অনেকেই এটাকে গ্রামীনফোনের নীরব প্রতারণা বলে আখ্যায়িত করেছেন।সঙ্গত কারণে এই রকম প্রতিক্রিয়া অনেক গ্রাহক দেওয়ায় কোন গ্রাহকে নাম দেওয়া হয়নি। তবে বিভিন্ন ফ্যানপেইজও এরকম দেখা গেছে।
হয়রানির শিকার একটি গ্রাহকের ফেইসবুকে দেয়া স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরা হল-
গ্রামীণফোন বিরাট ঘোষণা দিয়ে ফেসবুক ফ্রি করে দিছে। কোন ডাটা বা টাকা পয়সা কাটা হবেনা। তারপর প্রায় সব পত্রিকায় রিপোর্ট অনলাইন পোর্টালে রিপোর্ট লাখ লাখ স্ট্যাটাস দেওয়া হইছে এই বিষয়ে। বিনা পয়সায় বিশাল বিজ্ঞাপন। তারপর হাজার হাজার গ্রামীণফোন সিম বিক্রি হইলো, লাখ লাখ বন্ধ সিম রিএক্টিভ হইলো। তারা নিশ্চয়ই সমাজসেবা করতে আসে নাই, এটা তাদের একটা কর্পোরেট স্ট্র্যাটেজি, এতে কোন সমস্যা নাই। কিন্তু মুশকিল হইলো তারা কোন রকমের ঘোষণা ছাড়াই ফ্রি ফেসবুক বন্ধ করে দিছে। এইটা ক্রাইম!
কোন মানুষ যখন দেখবে তার ফোনে ১৫/২০ মেগাবাইট ডাটা আছে, রাতে ফেসবুক গুতানো ছাড়া অনলাইনে তেমন একটা কাজ নাই, ফেসবুক ফ্রি, সুতরাং হয়ে যাবে। সারারাত ফেসবুক গুতানোর পর সকালে সে দেখলো ফোনে এক দেড়শ টাকা ছিল, এখন এক টাকাও নাই! মেগাবাইট শেষ হওয়ার পর তার মূল একাউন্টের টাকা থেকে কাটতে কাটতে ব্যালেন্স শূণ্য! কারণ গ্রামীণফোন কোন ঘোষণা ছাড়াই ফ্রি ফেসবুক বন্ধ করছে!
মানুষ বিষয়টা টের পেতে ২৪ থেকে ৩৬ ঘন্টা লাগছে, ততক্ষনে হাজার কোটি টাকা ধান্ধা। তাদেরকে বিশাল অঙ্কের জরিমানা সহ পুরা টাকাটা প্রত্যেক গ্রাহকের একাউন্টে রিফান্ড করার নির্দেশ দেয়া উচিত। দুনিয়ার মগা বিষয়ে উচ্চ আদালতে রিট হয়। গ্রামীণফোনকে হাইকোর্ট দেখানোর কেউ নাই? সিরিয়াসলি, ফোনকোম্পানিগুলোর এই সব ডাকাতি দেখার জন্য কেউ কি আছে? ব্যাপারটা ডাক ও টেলিযোগাযোগ, আইসিটি মন্ত্রীও দেখতে পারে, আবার প্রতিমন্ত্রীও দেখতে পারেন, যদি সময় হয় আর কি !!
আইএস
খবর বিভাগঃ
সারাদেশ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়