কানিউজ ডেস্ক : প্রাণঘাতী ইবোলা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বড়সড় সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়েছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। এরই অংশ হিসেবে আবিষ্কৃত হল এই ভাইরাসের প্রতিষেধক।
ইবোলার ভ্যাকসিন তৈরি করে গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলেন কানাডার গবেষকরা। কয়েক বছরের গবেষণায় এই অসাধ্য সাধন করেছেন কানাডার বিজ্ঞানীরা।
শনিবার কানাডার রাজধানী অটোয়ায় বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ঘোষণা দেয়। সোমবার থেকেই কানাডায় ক্লিনিক ও হাসপাতালে পরীক্ষামূলক এ ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়েছে। এর আগে অন্য প্রাণীর ওপর ওই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে কার্যকর ফল পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভ্যাকসিন আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে গত কয়েকমাসে ইবোলা ভাইরাস নিয়ে বিশ্বব্যাপী যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছিল, তার অবসান ঘটবে। তবে খুঁটিনাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরেই এটি বাজারে ছাড়া হবে।
কানাডার প্রধান জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা গ্রেগরি টেইলর এক বিবৃতিতে জানান, দীর্ঘ গবেষণার পরে ইবোলার ভ্যাকসিন (ভিএসভি-ইবিওভি) তৈরি করেছেন কানাডার ন্যাশনাল মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবরেটরির গবেষকরা। পশুদেহে পরীক্ষা করা হয়েছে, যা চূড়ান্তভাবে সফল। তবুও চূড়ান্ত পর্যায়ে পরীক্ষার জন্য ভ্যাকসিনটি সুইজারল্যান্ড পাঠাচ্ছে সরকার। আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে পরীক্ষামূলক এই ভ্যাকসিনের এক হাজারের বেশি ডোজ জেনেভা পৌঁছচ্ছে। এগুলো জেনেভা ইউনিভার্সিটি হসপিটাল (এইচইউজি)-এ স্টোর করে রাখা হবে।
জানা গেছে, শুষ্ক বরফের সঙ্গে একটি বিশেষ বোতলে (কন্টেইনার) ভিএসভি-ইবো ভ্যিাকসিন প্যাকেট করে বাজারজাত করা হচ্ছে। মাইনাস ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অথবা মাইনাস ১১২ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় এটি সংরক্ষণ করতে হবে।
কানাডার ন্যাশনাল মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবরেটরি এটি আবিষ্কার করেছে। কানাডীয় সরকার নিউলিংক জেনেটিকস করপোরেশনকে এটি বাজারজাতের অনুমতি দিয়েছে।
এইচইউজি সূত্রে খবর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুসারে এই পর্যায়ে ভিএসভি-ইবিওভি ভ্যাকসিনগুলিকে মানবদেহে পরীক্ষার পালা। চলতি মাসের শেষ নাগাদ অথবা আগামী মাসে প্রথম থেকে শুরু হবে এই প্রক্রিয়া। আর পরীক্ষা সফল হলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের জগতে নতুন দিগন্ত খুলে যাবে।
ভাইরাস ইবোলা নিয়ে চিন্তিত বিশ্ববাসী, উদ্বিগ্ন বিশ্ব নেতারাও। ভাইরাসকে প্রতিরোধে বিশ্বের প্রতিটি দেশেই জারি করা হয়েছে সতর্কতা। জাতিসংঘের ইবোলা মিশনের প্রধান অ্যান্থনি ব্যানবারি বলেছেন, প্রাণঘাতী ইবোলা ভাইরাসকে থামানো না গেলে ‘নজিরবিহীন পরিণতি’ ভোগ করতে হবে। তখন যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে তা মোকাবিলার ক্ষমতা থাকবে না বিশ্বসম্প্রদায়ের।
২০১৩ সালের শুরুতে এই ভাইরাস দেখা দেয়। মার্চে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়। গত সেপ্টেম্বর থেকে এটি আফ্রিকার কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সিয়েরালিওন, লাইবেরিয়া, গায়নায় ইবোলা আঘাত হেনেছে বেশি করে।
ডব্লিউএইচও মতে, প্রাদুর্ভাবের পর থেকে এখন পর্যন্ত ইবোলায় চার হাজার ৪৪৭-এর বেশি লোকের মারা গেছেন।
তথ্যসূত্র : ফ্রান্স২৪.কম।
খবর বিভাগঃ
দেশের বাইরে
বিশেষ খবর
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়