Friday, October 31

মহররম আমলের মাস


প্রফেসর মাওলানা মোঃ সালাহউদ্দিন মহররম মাসের পবিত্রতা এবং আশুরার বিশেষত্ব সম্পর্কে আল কোরআন ও হাদিসের বিভিন্ন স্থানে গুরুত্ব-তাৎপর্য তুলে ধরা হয়েছে। ইসলামের অতি সম্মানিত হারাম চারটি মাসের একটি হলো মহররম। বর্ষ গণনার রীতি ও মাস সম্পর্কে মহান আল্লাহ এরশাদ করেছেন, 'নিশ্চয়ই আসমান ও জমিন সৃষ্টি করার দিনে মাসগুলোর সংখ্যা আল্লাহর কাছে ১২ মাস, এর মধ্যে চারটি হারাম মাস। তোমরা নিজেদের পক্ষ থেকে এসবের মধ্যে কিছু যোগ করো না। আর তোমরা মোশরেকদের সঙ্গে সমবেতভাবে যুদ্ধ করো, যেমনিভাবে তারা তোমাদের সঙ্গে সমবেতভাবে যুদ্ধ করে, আর জেনে রাখো আল্লাহ মুত্তাকিদের সঙ্গেই রয়েছেন।' (সূরা তওবা : ৩৬)। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদিনা শরিফে তাশরিফ আনেন তখন সেখানের ইহুদিদের আশুরার দিনে রোজা রাখা অবস্থায় পেলেন। তাদেরকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তারা বলল, এ দিন আল্লাহ তায়ালা হজরত মুসা (আ.) কে ফেরাউনের ওপর বিজয়ী করেন। তাই সেদিনের সম্মানার্থে আমরা রোজা পালন করি। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বললেন, মুসা (আ.) এর ব্যাপারে এ দিনে রোজা রাখার ক্ষেত্রে আমরা তোমাদের চেয়ে অধিক হকদার। (সুনানে আবু দাউদ : ২০৮৮)। হজরত আবু কাতাদাহ (রা.) সূত্রে একটি দীর্ঘ হাদিসের শেষাংশে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, আশুরার দিনের রোজার সওয়াবের ক্ষেত্রে আমি আশা করি পূর্ববর্তী এক বছরের পাপ আল্লাহ মোচন করে দেবেন। (সহিহ মুসলিম : ১৯৭৬)। পৃথিবীতে যতগুলো মর্মান্তিক ঘটনা তার মধ্যে শাহাদাতে কারবালা সর্বাধিক দুঃখ ও বেদনায় সিক্ত। কোনো উম্মত তাদের নবী বংশের ওপর এমন অত্যাচার চালায়নি_ যা চালিয়েছিল পাষ- ইয়াজিদ বাহিনী। হোসাইন (রা.) এর শাহাদাতের পর মুসলিম জাহানের শাসন ক্ষমতা স্বৈরাচারী ইয়াজিদের হাতে চলে যায়। ইমাম হোসাইন (রা.) ছিলেন দ্বীনের প্রকৃত শাহানশাহ ও বাদশাহ। সুলতানুল হিন্দ খাজা গরিবে নওয়াজ (রা.) বলেছেন, মূলত ইমাম হোসাইন (রা.) শহীদ হওয়ার মধ্য দিয়ে সত্যের বিজয় নিশান উড্ডীন হয়েছে। আত্মত্যাগের মহিমায় ভাস্বর আশুরার আত্মত্যাগের প্রেরণা ও উপলব্ধি সমগ্র মুসলিম বিশ্বকে অনুপ্রাণিত করে। আমাদের করণীয়-এ মাসে বিশেষত ইসলামের কল্যাণে নিবেদিত হওয়া উচিত। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এর প্রতি অধিক সংখ্যক দরুদ ও সালাম পেশ, নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, আশুরা এবং পরের দিনেও রোজা পালন, হাদিস শরিফ অধ্যয়ন, দান-সদকা, কালেমা শাহাদাত পাঠ ইত্যাদি কাজের মাধ্যমে এ মাসে আল্লাহর বিশেষ নৈকট্য লাভ করা যায়। কারবালার নির্মম ঘটনা ইসলামের জন্য আত্মত্যাগের দীক্ষা দেয়। শুধু শোক নয়, আমলের মধ্য দিয়ে যেন আমরা আশুরা উদ্যাপন করি। লেখক : খতিব, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়