Friday, October 24

কানাইঘাটের মাইক্রোবাস চালকের কবজি কেটে গাড়ী ছিনতাইয়ের চেষ্টা


নিজস্ব প্রতিবেদক: গত বৃহস্পতিবার রাতে সিলেটের তামাবিল সড়কের দিঘীরপাড় দামড়ির ব্রীজ এলাকা থেকে কানাইঘাট উপজেলার সদর ইউপির নিজ চাউরা উত্তর গ্রামের প্রবাসী নুর উদ্দিনের পুত্র মাইক্রোবাস চালক ইমরান আহমদ (১৮) কে গুরুতর আহত করে তার ঢাকা মেট্রো-ছ-১১-১১৬৪ মাইক্রোবাসটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় কানাইঘাট থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৭ জনকে আসামী করে আজ শুক্রবার আহত নোহা চালকের মামা নাজমুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। থানার মামলা নং- ২৫, তারিখ- ২৪/১০/২০১৪ইং। এদিকে ঘটনার পর নোহা চালক ইমরান আহমদকে মুহুর্ষ অবস্থায় স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে উসমানী মেডিকেল কলেজ হাতপাতালে নিয়ে যাবার পর তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতেই ডাক্তাররা ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখান থেকে পরবর্তীতে তাকে ঢাকা বব্যাধী হাসপাতালে এ নোহা চালককে স্থানান্তরিত করা হয়। জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে কানাইঘাট মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড থেকে ইমরান আহমদের গাড়ীটি রিজার্ভ করে কানাইঘাট উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের মোরাকিব আলীর পুত্র আব্দুল লতিফ (৩৮) ও তার সহযোগী ব্রাহ্মণগ্রামের মৃত কুটি মিয়ার পুত্র হেলাল আহমদ (৪৫)সহ কয়েকজন। সারাদিন ইমরানকে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরিয়ে পরবর্তীতে ছিনতাইকারীরা সিলেট শহরে নিয়ে যাবার কথা বলে গাড়ীটি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা আটে। একপর্যায়ে রাত অনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে চলন্ত অবস্থায় যাত্রীবেশী ছিনতাইকারীরা চালক ইমরানকে গাড়ীর ভিতরে হাত-পা বেধে মুখে পাথর ঢুকিয়ে দু’হাতের কবজি সহ শরীরের একাধিক জায়গায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে বস্তায় ঢুকিয়ে গাড়ীটি থামিয়ে তামাবিল সড়কের দামড়ির ব্রীজ এলাকা সংলগ্ন একটি ধান ক্ষেতে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাণে হত্যার চেষ্টার সময় প্রত্যদর্শী দুইজন পাখি শিকারী ঘটনাটি দেখতে পেয়ে সুরচিৎকার দেন। একপর্যায়ে ছিনতাইকারীরা ইমরানকে ধান ক্ষেতে ফেলে রেখে নোহা মাইক্রোবাসটি নিয়ে হরিপুর-বিমানবন্দর সড়কের দিকে পালিয়ে যাবার সময় ফতেহপুর বাজার এলাকায় পৌঁছা মাত্র স্থানীয় লোকজন গাড়ীসহ বিষ্ণুপুর গ্রামের আব্দুল লতিফ ও ব্রাহ্মণগ্রামের হেলাল উদ্দিনকে আটক করলেও তাদের কয়েকজন সহযোগী পালিয়ে যায়। পরে আটককৃতদের ফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল হোসেনের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। উত্তেজিত জনতা এ সময় আটক অবস্থায় দুই ছিনতাইকারীকে বেদড়ক মারপিট করে হাত-পা ভেঙে দেয়। খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আটক দুই ছিনতাইকারীর জবানবন্ধি রেকর্ড করে। এ ঘটনার সাথে জড়িত কয়েকজনের নাম বলে তারা। পরবর্তীতে কানাইঘাট থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হলে রাতেই থানার এস.আই সুজন কুমার আশ্চার্য একদল পুলিশ নিয়ে জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের কাছ থেকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গাড়ী উদ্ধার করে দুই ছিনতাইকারীকে গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ হেফাজতে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গাড়ী ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত হেলাল আহমদ একসময় কুখ্যাত ডাকাত ছিল। তার বিরুদ্ধে একাধিক ডাকাতি মামলাও ছিল আগে। তার পিতা কুটি মিয়াও ডাকাত ছিল। এছাড়া গ্রেফতারকৃত আব্দুল মুতলিব বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। নোহা চালকের মামা নাজমুল ইসলাম জানিয়েছেন পূর্ব বিরোধের জের ধরে নিজ চাউরা উত্তর গ্রামের মামুন রশিদ গংরা তার ভাগ্নাকে হত্যা করার জন্য এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ব্যাপারে কানাইঘাট থানায় ওসি (তদন্ত) শফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কানাইঘাট নিউজকে বলেন, নোহা চালক ইমরান আহমদকে আহত করে তার গাড়ী ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আব্দুল মুতলিব ও হেলালসহ ৭জনের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়