আমানুল্লাহ নোমান
পবিত্রতা অর্জনের উপায় অজু। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজসহ বিভিন্ন ইবাদতে অজুর প্রয়োজন হয়। অজু পবিত্রতা অর্জনের পাশাপাশি দেহকে সজীব করে মনে প্রশান্তি ও প্রফুল্লতা দান করে। আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সঠিক পন্থায় অজু করা হলে তা একটি নেক আমলে পরিণত হয়। হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে যে কোনো ব্যক্তি পূর্ণাঙ্গভাবে অজু করে অতঃপর অজু শেষে দোয়া পড়ে, তবে তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে। যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা সে প্রবেশ করতে পারবে। (মুসলিম শরিফ : ২৩৪; জামে তিরমিজি : ৫৫)।
হাদিসে এসেছে, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবায়ে কেরামের সামনে হাউসে কাউসারের বর্ণনা দিচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেন, মানুষ যেমন তার হাউস থেকে অন্য মানুষকে সরিয়ে দেয়, তেমনি আমিও সেদিন কিছু মানুষকে সরিয়ে দেব। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, সেদিন কি আপনি আমাদের চিনতে পারবেন? নবীজি এরশাদ করলেন, 'বল তো, কারও যদি হাতে ও পায়ে সফেদ চিহ্নবিশিষ্ট কিছু ঘোড়া থাকে এবং সেগুলোকে অসংখ্য কালো রঙের ঘোড়ার মাঝে ছেড়ে দেয়া হয় তবে সেই ব্যক্তি কি তার ঘোড়াগুলো চিনতে পারবে না? সাহাবারা বললেন, হ্যাঁ, ইয়া রাসূলুল্লাহ। তখন নবী করিম (সা.) বললেন, তেমনি তোমাদেরও এমন কিছু চিহ্ন হবে, যা অন্য কোনো উম্মতের হবে না। কেয়ামতের দিন তোমাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোও অজুর কারণে ঝলমল করতে থাকবে।' (মুসলিম শরিফ : ২৪৬-২৪৯)।
হজরত ওসমান ইবনে আফফান (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি অজু করে এবং উত্তমরূপে অজু করে, তার শরীর থেকে এমনকি নখের নিচ থেকেও গোনাহগুলো বের হয়ে যায়। (মুসলিম শরিফ : ২৪৫)।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত অপর একটি হাদিসে আছে, নবীজি (সা.) বলেছেন, মুসলিম বা মোমিন বান্দা যখন অজু করে, যখন সে মুখম-ল ধৌত করে তখন পানির সঙ্গে বা পানির শেষ কাতরার সঙ্গে সেসব গোনাহ বের হয়ে যায়, যা সে দু'চোখ দ্বারা করেছিল। যখন সে দুই হাত ধৌত করে তখন পানির সঙ্গে সেসব গোনাহ বের হয়ে যায়, যা সে হাত দ্বারা করেছিল। যখন সে দুই পা ধৌত করে তখন পানির সঙ্গে সেসব গোনাহ বের হয়ে যায়, যার দিকে সে চলেছিল। এভাবে সে গোনাহ থেকে পাকসাফ হয়ে যায়। (মুসলিম শরিফ : ২৪৪)।
একটি সহিহ হাদিসে আরও একটি সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। হজরত উকবা ইবনে আমের (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি শুনতে পেয়েছি, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, কোনো মুসলিম যখন সুন্দরভাবে অজু করে অতঃপর চেহারা-মন উভয়কে আল্লাহ অভিমুখী করে দন্ডায়মান হয় এবং দুই রাকাত নামাজ আদায় করে, তখন তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। ( মুসলিম শরিফ : ২৩৪)।
অজু অতি সহজ আমল, যা আমরা প্রতিদিন একাধিকবার করি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজসহ অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগির সময় আমরা যদি একটু খেয়াল করে সঠিক পন্থায় এ সহজ প্রয়োজনীয় আমলটি সম্পাদন করি তাহলে অতি সহজে আমরা পেতে পারি অনেক বড় বড় পুরস্কার।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়