Thursday, September 25

পোশাকে ঈদের ছোঁয়া


আশরাফুল ইসলাম রানা ঈদের আসল বর্ণিলতা তারুণ্য ঘিরেই। সহজ ভাষায় বললে, প্রচলিত ব্যাকরণের বাইরে নিজের ভাষায় কথা বলা, অদ্ভুত সব রঙের মিশেলে নতুন রঙের ট্রেন্ড তৈরি করাই তারুণ্য। যে কোনো উৎসবেই গৎবাঁধা ফ্যাশনের বাইরে থাকে তারুণ্য। ফ্যাশন নিয়ে এঙ্পেরিমেন্ট সেটা তো সারা বছরই! তবে ঈদে সবার চোখে নিজেকে একটু ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে হলে এ এঙ্পেরিমেন্টই আছে তারুণ্যের পছন্দের একদম শীর্ষে। ক'দিন বাদেই শারদীয় পূজা আর ঈদ যুগপৎ আনন্দ বয়ে আনবে বর্ণিল উৎসবের আমেজ। উৎসব রাঙাতে ব্যস্ত সুচিশিল্পীরা। নকশাকারদের সুনিপুণ দক্ষতায় এরই মধ্যে নতুন পোশাক উঠেছে প্রতিটি ব্র্যান্ডশপ বা মার্কেটগুলোতে। এদিকে ঈদ পোশাকে দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির নানা উপাদান ব্যবহার করে পোশাকে শতভাগ বাঙালিয়ানা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা সব ফ্যাশন হাউসে। তবে রঙের ক্ষেত্রে লক্ষ করা যাচ্ছে দারুণ বৈচিত্র্য। সব সময় শরতে হালকা রঙ ও নীল-সবুজের শেডগুলো প্রাধান্য পেলেও এবার লক্ষ্য করা যাচ্ছে, গাঢ় রঙের বাহার। এখনও বেশ গরম থাকায় ফেব্রিক ও রঙের ক্ষেত্রে বেশ যত্নশীল ফ্যাশন হান্টাররা। ঈদ ফ্যাশন ট্রেন্ডে বৃত্তাকার ধারাই অনুসরণীয় হয়ে আসছে। তবে ফ্যাশন ট্রেন্ডের ধারাবাহিকতায় যোগ হচ্ছে ভিন্নতা এবং ফিউশন। গর্জাস লুকে উপস্থাপনের জন্য সবাই খুঁজে ফিরছে কিঞ্চিৎ হলেও স্বাতন্ত্র্য। সুতির পাশাপাশি ঐতিহ্যগতভাবে প্রশংসিত সিল্ক, মসলিন, এন্ডি সিল্ক, জয়শ্রী, এন্ডি কটন, জর্জেট, শিপন ব্যবহার হচ্ছে ঈদ পোশাক তৈরিতে। পোশাকে ভ্যালু এডিশন করতে কারচুপি, এমব্রয়ডারি, স্ক্রিন প্রিন্ট, বস্নক, স্টিচিং ইত্যাদি কারুকাজের মাধ্যমে সমৃদ্ধ করা হয়েছে পোশাকের জমিন। প্যাটার্ন বৈচিত্র্য এসেছে পাশ্চাত্য এবং দেশীয় ট্রেন্ডের আদলে। জেন্টল পার্ক ওমেনের ডিজাইনার শাহাদৎ বাবু জানান, রোজার ঈদের মতো এবারও ঈদে পালাজ্জো বা ডিভাইডারের সঙ্গে লম্বা কামিজ পরবে তরুণীরা। আর ঘাড় থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত লম্বা কামিজ বা 'ফ্লোর টাচ' এবারের ঈদে তরুণীদের চাহিদায় থাকবে এগিয়ে। তবে সেমিলং ও ফ্রক আকৃতির কামিজের ট্রেন্ডও জনপ্রিয়তা পাবে। মূলত এ কলিদার কামিজগুলো তৈরি করা হয়েছে ছয় ছাঁটে। পাশাপাশি যারা লং কুর্তা পরতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন তাদের জন্য অ্যাজটেক অথবা অ্যানিমেল প্রিন্ট থেকে ফ্লোরাল প্রিন্টের কাপড়ও থাকবে পছন্দের তালিকায়। প্লিটেড, ড্রেপিং, অসম কাট, বিভিন্ন ধরনের ফ্লেয়ার ও লেয়ার কাটের মাধ্যমে ফতুয়া বা কুর্তা, পনচো, টিউনিক ও ড্রেস এবারও ঈদ ফ্যাশনে পরবেন কেউ কেউ। এখনকার তরুণরা ঈদের দিনের বেশিরভাগ সময় পাঞ্জাবি পরে কাটান। তাই তারা পাঞ্জাবি কেনার সময় আরামকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন। অঞ্জন'স এর শীর্ষ নির্বাহী শাহীন আহম্মেদ জানান, এখন আর ছেলেমেয়ে ভেদে কোনো রঙ নেই। নীল, ম্যাজেন্ডা, গাঢ় বেগুনি এমনকি গোলাপি রঙের পাঞ্জাবিও কিনছেন অনেকে। ভিসকোস ও সুতির পাশাপাশি কাতানের পাঞ্জাবির চল রয়েছে। এক রঙের পাঞ্জাবি যেমন চলছে, আবার অনেকে চেকের পাঞ্জাবিও কিনছেন। পাঞ্জাবির ঝুল হাঁটু পর্যন্ত দেখা যাবে এবারও। তরুণীদের ক্ষেত্রে শাড়ি পরার প্রবণতা যাদের বেশি তারা সাধারণ শাড়িতেও গর্জাস বস্নাউজ ব্যবহার করতে পারেন। একটু সাইনি এবং কারুকাজ করা ডিপ নেকের বস্নাউজ আপনাকে দেবে বাড়তি এলিগ্যান্ট লুক। এছাড়া ভারি কাজের অাঁচল আর পাড়সমৃদ্ধ শাড়ি ঈদে আপনাকে করে তুলতে পারে অনন্যা! পরিবেশ, পার্টির ধরন, আপনার ব্যক্তিত্ব এবং রুচির ওপর নির্ভর করেই তাই কিনে বা বানিয়ে ফেলতে পারেন আপনার ঈদ পোশাক। কেননা, সমকালীন ফ্যাশন ভাবনায় নিজের অভিব্যক্তি ফুটে উঠবে নিজস্ব স্টাইল স্টেটমেন্টের মাধ্যমে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়